লাদাখের উদ্দেশে রওনা বাহিনীর। ছবি: পিটিআই।
গালওয়ান উপত্যকা লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে চিনের হাতে থাকা এলাকারই অন্তর্ভুক্ত বলে গত কাল দাবি করেছিল বেজিং। ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ করাতেই সংঘর্ষ হয়েছে বলেও দাবি করে তারা। আজ জবাবে দিল্লি জানাল, গালওয়ান ও ভারতীয় সেনার আচরণ সম্পর্কে চিনা দাবি ভিত্তিহীন।
আজ এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘গালওয়ান উপত্যকা সম্পর্কে ভারতের দাবি ঐতিহাসিক ভাবেই স্পষ্ট। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সম্পর্কে চিনের নয়া দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। এই দাবি তাদেরই আগের অবস্থানের সঙ্গে মিলছে না।’’
বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ভারতীয় বাহিনী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান সম্পর্কে সচেতন। গালওয়ান-সহ ভারত-চিন সীমান্তের সব এলাকায় তারা সচেতন ভাবেই টহল দেয়। ভারত কখনও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোয়নি। বস্তুত অনেক দিন ধরেই তারা গালওয়ান উপত্যকায় টহল দিচ্ছে। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। ভারত নিজেদের হাতে থাকা এলাকাতেই পরিকাঠামো তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: লাদাখ হামলা নিয়ে প্রশ্ন রাহুলের, পাল্টা আক্রমণে অমিত
শ্রীবাস্তবের দাবি, মে মাসের গোড়া থেকে চিনা বাহিনী ভারতের চিরাচরিত টহলদারির পথে বাধা দিতে শুরু করে। তার ফলে দু’দেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়ায়। স্থানীয় কমান্ডারেরা দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ও বিধি মেনে আলোচনা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থা বদলানোর কোনও চেষ্টা করছি না। উল্টে আমরাই স্থিতাবস্থা বজায় রেখেছিলাম।’’
বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম অংশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা শুরু করে চিন। ফলে বাধ্য হয়ে পাল্টা পদক্ষেপ করে ভারত। তার পরে ফের সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়। ৬ জুন দু’দেশের সেনার মধ্যে কোর কমান্ডার স্তরে বৈঠক হয়। তাতে স্থির হয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা বদলাতে পারে এমন কোনও কাজ কোনও পক্ষই করবে না। কিন্তু চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ঘাঁটি গাড়ার কাজ শুরু করে। ভারতীয় সেনা সেই কাজ ব্যর্থ করে দেওয়ার পরেই চিনা বাহিনী হামলা চালায়। তাতেই অনেকে হতাহত হন।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে আলোচনায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিনা আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। চিনের ভিত্তিহীন অভিযোগ খারিজ করে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, দু’দেশের সেনা কমান্ডারদের বৈঠকে হওয়া সিদ্ধান্তের অপব্যাখ্যা করছে বেজিং। চিনেরই উচিত নিজেদের আচরণ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।
শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বিদেশমন্ত্রীদের আলোচনায় উত্তেজনা কমাতে ৬ জুনের সমঝোতা মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’পক্ষই। ভারতের আশা, সীমান্তে শান্তি রাখতে চিন সেই সমঝোতা মেনে চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy