Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
India-China

লাদাখে চিনা সেনা কি পিছিয়েছে? রইল ধোঁয়াশা

ভারতীয় সেনার নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, বাস্তবে চিনা সেনার পুরনো অবস্থানের প্রায় কোনও পরিবর্তনই হয়নি।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০৪:১২
Share: Save:

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ‘প্রকৃত’ পরিস্থিতি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে।

আগে শোনা গিয়েছিল, লাদাখে সংঘাতের এলাকা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে চিনা সেনা। এই বিষয়টি নিয়ে ভারত-চিন ঐকমত্য হয়েছে বলেও গত কাল দাবি করেছিল মোদী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু ভারতীয় সেনার নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, বাস্তবে চিনা সেনার পুরনো অবস্থানের প্রায় কোনও পরিবর্তনই হয়নি। তাই বাড়তি হিসেবে গোড়ায় মোতায়েন করা দুই ডিভিশন জওয়ান-অফিসারকে শীতকালে লাদাখেই রাখতে হবে বলে ধরে নিচ্ছে ভারত। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

সেনার সূত্রটির বক্তব্য, ‘‘যে সমস্ত এলাকা থেকে চিনা সেনা পিছিয়ে গিয়েছিল, আবার সেই ‘পয়েন্টগুলিতে’ ফিরে আসছে তারা। বস্তুত, সেই সব দিকেই তাদের নজর রয়েছে আগাগোড়া।’’ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এক সময়ে চোখে চোখ রেখে দু’দেশের সেনা দাঁড়িয়ে ছিল। যদি সেই মনোভাব বজায় রেখেও তারা কিছুটা পিছিয়ে যায়, সেটিও যথেষ্ট জটিল প্রক্রিয়া। সূত্রটি জানাচ্ছে, হরেদরে চিনের নজর কিন্তু পড়ে রয়েছে সাব সেক্টর নর্থ তথা দৌলত বেগ ওল্ডিতে। এখানেই রয়েছে ভারতের বিমানঘাঁটি। আর সেই কারণেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দৌলত বেগ ওল্ডি পর্যন্ত সড়ক (ডিবিও রোড) নির্মাণে তাদের আপত্তি রয়েছে।

আরও পড়ুন: মেধাবীদের ধারালো জবাব মোদীর সওয়ালে

দৌলত বেগ ওল্ডির কাছে নিয়মিত চক্কর কাটছে চিনা হেলিকপ্টার। এ দিকে, প্যাংগং হ্রদের মধ্যে ঢুকে আসা পাহাড়ের ‘ফিঙ্গার’ এলাকায় এখনও অবাধ টহল দিতে পারছে না ভারতীয় সেনা। ভারতের অবস্থান হল, ফিঙ্গার ১ থেকে ৮ পর্যন্ত এলাকা এ দেশেরই নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত টহল দিত ভারতীয় সেনা। কিন্তু চিনের দখলদারি শুরুর পর থেকে ভারতীয় সেনাকে ফিঙ্গার ৪-এর বেশি যেতেই দেওয়া হচ্ছে না। সূত্রটির বক্তব্য, চিনা সেনা এখন ফিঙ্গার ৩-এর কাছাকাছিও চলে আসছে। তাদের লক্ষ্য— ডিবিও রোডের খুব কাছে থাকা ডেপসাং উপত্যকা। ডিবিও রোডের মতো সংবেদনশীল কারাকোরাম পাসও ভারতকে ভাবাচ্ছে, কারণ সেটির উপরে কর্তৃত্ব থাকলে গালওয়ান উপত্যকায় জাঁকিয়ে বসাটা কোনও ব্যাপার নয়।

আরও পড়ুন: ফের অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব গহলৌতের

সূত্রের বক্তব্য, এই কারণেই ভারত মনে করছে, আসন্ন শীতকালে লাদাখ থেকে অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে আনা অসম্ভব। পাহাড়ি মরু অঞ্চল পূর্ব লাদাখে প্রায় অগস্টের শেষ থেকেই শীত শুরু হয়ে য়ায়। তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে আসে। শ্রীনগর থেকে সেনার জন্য ১০ টন রসদ নিয়ে একটি ট্রাককে রোটাং পাস বা জোজি লা হয়ে লে-তে পাঠাতে এবং ফিরিয়ে আনতে ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি খরচ হয়। কিন্তু তুষারপাতে সেই রাস্তাও তো বন্ধ থাকে দীর্ঘ সময়। হয়তো রোটাং টানেল খুললে কিছুটা সুরাহা হবে।

শীত পড়ার আগেই তাই সেরে রাখতে হচ্ছে সমস্ত বন্দোবস্ত। দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে সেনার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো লাদাখে আনা হচ্ছে। অতিরিক্ত ডিভিশনের সেনারাও জেনে গিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে ফুরোচ্ছে না তাঁদের লাদাখবাসের মেয়াদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE