Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
India-China

সীমান্তে ভারত-চিন ১১ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক, সেনা সরানো নিয়ে আলোচনা

গালওয়ান উপত্যকার দিকে মুখ করে যে সমস্ত নির্মাণকাজ চালাচ্ছে চিন, ভারত তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বলেও সূত্রের খবর।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ১১:৫৮
Share: Save:

পরিকল্পিত ভাবেই লাদাখে ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালিয়েছে চিনা বাহিনী। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য প্যাংগং সংলগ্ন এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে চিনকে। গালওয়ান উপত্যকার দিকে মুখ করে যে সমস্ত নির্মাণকাজ চালাচ্ছে তারা, তা-ও অবিলম্বে বন্ধ করে দিতে হবে। চিনা বাহিনীর কম্যান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে ভারত এমনই দাবি জানিয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও সরকারি ভাবে কোনও পক্ষই ওই বৈঠক নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ নিয়ে গত ১৫ জুন চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ভারতীয় সেনার। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান। প্রাণহানি ঘটে চিনের তরফেও। সেই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বৈঠকে বসেন দু’দেশের কম্যান্ডাররা।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কী ভাবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায় এবং নতুন করে হিংসার ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য কী করা যায়, তা নিয়ে টানা ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক হয় দু’পক্ষের মধ্যে। সেখানেই দক্ষিণ শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের মেজর জেনারেল তিন লিউয়ের কাছে ১৫ জুনের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন ১৪ নং কোরের লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক রিপোর্ট: নিয়ন্ত্রণরেখায় শক্তিতে ভারত-চিন কে কোথায় এগিয়ে

চিনের তরফে দিকে থাকা চুসুল-মোল্ডো পয়েন্টে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে সীমান্ত চুক্তি মেনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করে ভারত। প্যাংগং লেকের উত্তর তটে আঙুলের মতো ঢুকে থাকা পাহাড়ের কিছু অংশকে ‘ফিঙ্গার’ বলা হয়। প্যাংগং লেকের এই চার থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে বলে চিনের সামনে দাবি রাখে ভারত।

শুধু তাই নয়, গালওয়ান উপত্যকার দিকে মুখ করে সমস্ত সামরিক নির্মাণকাজও অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে বলে চিনকে সাফ জানিয়ে দেয় ভারত। সেই সঙ্গে গোগরা। দেপসাং এবং পূর্ব লাদাখের চুশুলেও সমস্ত সামরিক নির্মাণ বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয় বলেও সেনাসূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে যে ভাবে কাঁটা লাগানো রড দিয়ে আঘাত করে এবং পাথর ছুড়ে ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালিয়েছে চিনা বাহিনী, তারও তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।

দু’পক্ষের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে এত সহজে পূর্ব লাদাখে শান্তি ফেরানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁদের মতে, সব কিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। সব কিছু ঠিক হয়ে যেতে পারে, এমন আশা করাই যায়। তবে যে কোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে, তার জন্যও তৈরি থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: মৃত্যু ছাড়াল ১৪ হাজার, দেশে মোট আক্রান্ত ৪.৪০ লাখ​

এই পরিস্থিতিতেই দু’দিনের সফরে মঙ্গলবার লাদাখ পৌঁছনোর কথা সেনাপ্রধান এমএম নরবণের। লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ১৪ নং কোরের কম্যান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত জওয়ানদের সঙ্গেও দেখা করার কথা তাঁর। সেখান থেকে ফেরার পথে শ্রীনগরে ১৫ নং কোরের সঙ্গেও সন্ত্রাস দমন অভিযান নিয়ে একদফা কথা বলবেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE