Advertisement
E-Paper

বালিকাকে খাটানো হচ্ছিল লঙ্কাখেতে

বিজাপুর পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ওই কিশোরীকে তেলঙ্গানার কান্নাইগুড়ায় লঙ্কা তোলার কাজে লাগিয়ে দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন গ্রামেরই এক মহিলা।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৯
পরিযায়ী শ্রমিকদের দল, ইনসেটে মৃত বালিকা। ছবি: পিটিআই

পরিযায়ী শ্রমিকদের দল, ইনসেটে মৃত বালিকা। ছবি: পিটিআই

বছর বারোর মেয়েটি লকডাউনের মধ্যে তেলঙ্গানা থেকে হেঁটে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুর সংলগ্ন গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিল। কিন্তু গ্রাম থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার আগেই সে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কবলে।

ওই কিশোরীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে করোনা-আবহে পরিযায়ী শ্রমিকদের এ ভাবে নিজের রাজ্যে ফেরা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। তড়িঘড়ি তদন্তে নামে বিজাপুর পুলিশ। তদন্তে নেমে তারা জানতে পারে, ওই কিশোরীকে তেলঙ্গানার কান্নাইগুড়ায় লঙ্কা তোলার কাজে লাগিয়ে দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন গ্রামেরই এক মহিলা। বুধবার পুলিশ কোতোয়ালি থানায় কিশোরীর গ্রামের দু’জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭০ নম্বর ধারায় মেয়েটিকে পাচারের অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিজাপুরের কালেক্টর কেডি কুঞ্জম শুক্রবার এফআইআরের কথা স্বীকার করে জানান, ফেব্রুয়ারিতে আডেড গ্রামের সুনীতা মারকামি এবং তেলঙ্গানার ঠিকাদার সন্তোষ মাঞ্চল ওই কিশোরীর সঙ্গে আরও কয়েক জনকে তেলঙ্গানার পেরুরুতে নিয়ে যান শ্রমিক হিসেবে কাজ করানোর জন্য। সেখানে শিশু শ্রমিক হিসেবে লঙ্কা তুলতে হত ওই কিশোরীকে। পুলিশ তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, না-জানিয়েই মেয়েটিকে নিয়ে গিয়েছিল সুনীতা।

কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পরে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই শ্রমিকদের কোনও দায়িত্বই নিতে চায়নি ঠিকাদার বা কারখানার মালিক। ফলে খাবার না-পেয়ে অন্য কয়েক জনের সঙ্গে ১৫ এপ্রিল পেরুরু থেকে হাঁটতে শুরু করে ওই কিশোরী। তিন দিন হাঁটার পরে বাড়িতে পৌঁছনোর আগেই অভুক্ত, ক্লান্ত মেয়েটি ১৮ তারিখে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শরীরে জলের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়াতেই মৃত্যু হয় মেয়েটির। বিজাপুরের কালেক্টর অবশ্য এ দিন তা অস্বীকার করে জানান, পড়ে গিয়ে চোট লাগাতেই ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।

তেলঙ্গানার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই শিশু শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি জানার পরেই ২০ এপ্রিল তেলঙ্গানা মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছে জানতে চাওয়া হোক, লকডাউনের মধ্যে ওই কিশোরী এবং তার সঙ্গীদের রাজ্যের সীমানা পেরোতে দেওয়া হল কী ভাবে? ১২ বছরের একটি মেয়েকে দিয়ে লঙ্কা তোলার কাজ করানোই বা হচ্ছিল কেন? পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে যথাযথ তদন্তের আবেদন জানান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি অচ্যুত রাও। তাঁদের দাবি, মৃত কিশোরীর পরিবার যাতে অবিলম্বে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান, প্রশাসনকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

India Lockdown Chhattisgarh Telengana
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy