প্রতীকী ছবি।
শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়াই এখন মুখ বাঁচানোর কৌশল তাদের। পুলওয়ামা হামলার পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বিশ্বকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। আজ তাঁর বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিও বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘‘পাকিস্তান চায় উত্তেজনা কমাতে। গোটা অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে। আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলতেও ইচ্ছুক। এখন ভারতই ঠিক করবে তারা কী করতে চায়।’’ এরই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা ভারতের ডসিয়ে খতিয়ে দেখছি। এর উপর ভিত্তি করে ভারত-পাক আলোচনা শুরু হতে পারে।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের পাল্টা প্রস্তাব, ‘‘পাকিস্তান যদি সত্যিই তাদের দেশে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে চায়, তবে ভারত তাদের সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’
উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান যখন পাকিস্তানের কব্জায়, তারই মধ্যে নয়াদিল্লিতে পাক দূতাবাসের কর্তাকে ডেকে ওই ডসিয়ে তথা নথি তুলে দিয়েছিল ভারত। পাকিস্তানে জইশ-ই-মহম্মদের পরিকাঠামো, তাদের ভারত-বিরোধী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অনেক তথ্য রয়েছে তাতে।’’ কিন্তু তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার বদলে কুরেশি কার্যত আলোচনাকে ঢাল করে বল ঠেললেন ভারতের কোর্টে। গত কাল তিনিই ওআইসি সম্মেলন বয়কট করেছেন ইসলামিক রাষ্ট্রগুলির ওই সমাবেশে ভারত অংশ নেওয়ায়।
বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য সরকারি ভাবে কোনও জবাব দিচ্ছে না এর। ঘরোয়া ভাবে বলা হচ্ছে, সন্ত্রাস এবং সংলাপ একসঙ্গে চলতে পারে না। এ বারেও যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। কিন্তু তার ভিত্তিতে জঙ্গিদের শাস্তি দেওয়া তো দূর, এখনও তাদের আড়াল করছে তারা। বিশ্ব যখন জইশের দিকে আঙুল তুলছে, তখনও কুরেশি জানাচ্ছেন, মাসুদ আজহার পাকিস্তানেই আছেন। তবে অসুস্থ। ঘর থেকে বেরোতেই পারেন না। যা নিয়ে বিজেপির সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী কটাক্ষ ছুড়েছেন, ‘‘ভারতে পাঠিয়ে দিক ওকে। আমরাই ওর চিকিৎসা করাব।’’ পঠানকোট হামলার পরে গ্রেফতারের নামে আজহারকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে দিয়েছিল আইএসআই।
আরও পড়ুন: অভিনন্দন! বিজেপির লোকসভা নির্বাচনী অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ হল নতুন শব্দ
রাজনৈতিক কারণেও ভারত-পাক শান্তি আলোচনা সম্ভব নয় এখন। পাকিস্তান-বিরোধিতা ও জাতীয়তাবাদ বিজেপির ভোটের তাস। পুলওয়ামা-বালাকোট-অভিনন্দনের ত্রিভুজে রক্ত গরম করা বক্তৃতা দিয়ে দেশ তাতাচ্ছে তারা। এখন কথা বলার অর্থ, প্রচারের মুখটিই ভোঁতা করে দেওয়া। শাসক শিবিরের পক্ষে এটা তাই শান্তির পায়রা ওড়ানোর আদর্শ সময় নয়। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘যখন সময় ছিল, নরেন্দ্র মোদী সাধ্যের বাইরে করেছেন। লাহৌরে গিয়েছেন বিনা আমন্ত্রণে। কিন্তু পাকিস্তান তার দাম দেয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy