Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
National news

শবরীমালায় ঢুকে ইতিহাস গড়া কনক দুর্গা শাশুড়ির মারে হাসপাতালে

কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির রোষানলে পড়েছেন কনকরা। মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেননি কনক।

নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত কনক দুর্গা। ছবি: রয়টার্স।

নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত কনক দুর্গা। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:১৮
Share: Save:

প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা ছিলই।ঘরে-বাইরে বিরোধের মুখেও পড়েছিলেন। তা সত্ত্বেও কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের রক্তচক্ষু এড়িয়ে প্রথম ঋতুমতী মহিলা হিসাবে শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছিলেন। প্রাণে বাঁচতে লুকিয়েও ছিলেন গোপন আস্তানায়। কিন্তু, বিপর্যয় এড়াতে পারলেন না কনক দুর্গা। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত হলেন।

অভিযোগ, শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশের ১৩ দিন পর বাড়ি ফিরতেই কনক দুর্গার উপর হামলা করেন তাঁর শাশুড়ি। তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। বাড়ির বাইরে পুলিশ প্রহরা থাকা সত্ত্বেও বিপত্তি এড়াতে পারেননি কনক। আপাতত গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে পেরিনথলমন্নায় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর একটি ঐতিহাসিক রায়ে সমস্ত মহিলাদের জন্য শবরীমালা মন্দিরের দরজা খুলে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শতাব্দী প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী তাতে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন ১০-৫০ বছরের ঋতুমতী মহিলারাও। এই রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয় কেরলের বিভিন্ন প্রান্ত। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন থেকে শুরু করে রাজ্য বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা শবরীমালা মন্দির যাওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে। হিংসা ছড়ায় গোটা রাজ্যেই। বিক্ষোভ দেখানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও।

আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের মন পেতে কি এ বার আয়করে ছাড়? জোর জল্পনা অন্তর্বর্তী বাজেটে

শবরীমালায় ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশের বিরোধিতায় কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভ নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)

এই আবহে গত ২ জানুয়ারি শবরীমালার আায়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন ৩৯ বছরের কনক। সঙ্গে ছিলেন ৪০ বছরের বিন্দু আম্মিনিও। মন্দির থেকে বেরিয়ে কনক দুর্গা বলেছিলেন, “আমার বিপদ হতে পারে জানি। তা সত্ত্বেও মন্দিরের ভিতর ঢুকতে চেয়েছিলাম। আমাদের এটা ভেবেই গর্ববোধ হচ্ছে যে অন্য মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের পথটা আমরা সহজ করে দিলাম। এটা শুধুমাত্র ভক্তির বিষয় নয়, সমস্ত লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকারেরও বিষয়।”

আরও পড়ুন: ইতিহাসের হাতছানি! সেনা দিবসের প্যারেডে প্রথম বার নেতৃত্বে এই মহিলা অফিসার

শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছেন কনক দুর্গা (বাঁ-দিকে) এবং বিন্দু আম্মিনি। ছবি: রয়টার্স।

এর পর থেকেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির রোষানলে পড়েছেন কনকরা। মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেননি কনক। প্রাণসংশয়ের হতে পারে, এই আশঙ্কায় লুকিয়ে ছিলেন কোচির অদূরে একটি গোপন আস্তানায়। প্রায় দু’সপ্তাহ পর পুলিশি প্রহরায় নিজের বাড়িতে পা রেখেছিলেন তিনি। বাড়ির বাইরে আট জন পুলিশকর্মীর প্রহরাও ছিল তাঁর সুরক্ষায়।তবে লিঙ্গসাম্যের দাবিতে ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানবপ্রাচীরের প্রতিবাদ সত্ত্বেও কেরলের অন্দরের ছবিটা যে এতটুকুও বদলায়নি তা কনকের উপরে হামলার ঘটনাতেই স্পষ্ট, এমনটাই মত অনেকের।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE