Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

‘বার্লিন পাঁচিল ভাঙবে, কেউ ভেবেছিলেন? কর্তারপুর করিডরও হবে ভারত-পাক সম্পর্কের সেতু’

যা দিয়ে জার্মানিকে দু’টুকরো করা হয়েছিল, সেই বার্লিন পাঁচিলের আয়ু ছিল ২৮ বছর। আর দেশভাগের পর থেকে টানা ৭১ বছর পঞ্জাবের শিখদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে গুরু নানকের পছন্দের কর্তারপুর সাহিব।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে, শনিবার। ছবি- পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে, শনিবার। ছবি- পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:৫৫
Share: Save:

পঞ্জাবে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে কর্তারপুর সাহিব করিডরকে বার্লিন পাঁচিলের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, বার্লিন পাঁচিল ভেঙে যাওয়ার পর যেমন পূর্ব ও পশ্চিম, দুই জার্মানির মানুষ এক হয়ে যেতে পেরেছিলেন, তেমনই কর্তারপুর করিডর প্রতিবেশী দু’টি দেশের মানুষের সম্পর্কে একটি সেতু হয়ে উঠবে।

যা দিয়ে জার্মানিকে দু’টুকরো করা হয়েছিল, সেই বার্লিন পাঁচিলের আয়ু ছিল ২৮ বছর। আর দেশভাগের পর থেকে টানা ৭১ বছর পঞ্জাবের শিখদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে গুরু নানকের পছন্দের কর্তারপুর সাহিব।

কেন্দ্রে এনডিএ-র অন্যতম শরিক শিরোমণি অকালি দলের সভাপতি সুখবীর সিংহ বাদলের দিল্লির বাড়িতে শনিবার গুরুপরব অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘কেউ কি কোনও দিন ভাবতে পেরেছিলেন, বার্লিনের পাঁচিল ভেঙে যাবে? মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে পূর্ব ও পশ্চিম, দুই জার্মানি? তেমনই কর্তারপুর সাহিব করিডরও দু’দেশের মধ্যে নিছক একটি করিডর হয়ে থাকবে না। তা দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সেতু হয়ে উঠবে।’’

ও দিকে, পাক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরিকে উদ্ধৃত করে ইসলামাবাদের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কর্তারপুর সাহিবে যাওয়ার জন্য পাক সীমান্তে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হবে ২৮ নভেম্বরই। যার পৌরহিত্য করবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে হাজির থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার কংগ্রেস নেতা নভজ্যোত সিংহ সিধুকে। আগামী ২৮ নভেম্বর ওইঅনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সুষমা। সিধুও জানিয়েছেন, ‘‘এই আমন্ত্রণ পেয়ে আমি খুশি।’’

আরও পড়ুন- রাম-চাপে মোদী-যোগী! অযোধ্যা কাঁপাচ্ছে শিবসেনা-ভিএইচপি, উত্তেজনা চরমে​

আরও পড়ুন- ‘মন কি বাত’-এ মোদীর মুখোমুখি হচ্ছেন এ রাজ্যের সেই ট্যাক্সিচালক​

কর্তারপুর সাহিব একটি ঐতিহাসিক স্থান। শিখদের উপাসনার জায়গা। জনশ্রুতি, জীবনের শেষ ১৮টি বছর গুরু নানক কাটিয়েছিলেন এই কর্তারপুরেই। দেশভাগের পর যা এখন পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের নারওয়াল জেলায়। উপাসনার জন্য ফিবছর প্রচুর শিখ সীমান্ত পেরিয়ে যান পাক-পঞ্জাবের কর্তারপুরে। তাই ভারত-পাক সীমান্তের ওই এলাকায়, পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার দেরা বাবা নানক থেকে পাক-পঞ্জাবের কর্তারপুর পর্যন্ত একটি করিডর বানানোর দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের।

এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘আমি যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন গুরু নানকের ‘পাদুকা’ যেখানে রাখা রয়েছে, আমি সেই পবিত্র স্থানটির সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিলাম। ভূকম্পের পর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওই এলাকার। আজ সেই জায়গাটাই হয়ে উঠেছে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’। গুরু নানক দেবজীর আর্শীর্বাদে কর্তারপুর করিডরও তেমনই হয়ে উঠবে ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের মানুষের সম্পর্কের সেতু।’’

দেরা বাবা নানক থেকে ভারত-পাক সীমান্ত পর্যন্ত ওই করিডর বানানোর প্রস্তাবটি গত বৃহস্পতিবার অনুমোদিত হয় কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে। একই ভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে গুরুদ্বার কর্তারপুর সাহিব পর্যন্ত একটি করিডর দ্রুত বানানোর জন্য ওই দিনই বিদেশ মন্ত্রক আনুষ্ঠানিক ভাবে আর্জি জানায় পাক সরকারকে।

ইসলামাবাদও জানিয়ে দিয়েছে, আগামী বছর, গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মবর্ষে, আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই করিডর চালু হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE