Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মামলায় জিতে মেরিনায় করুণা, জয়ললিতাও রইলেন পাশে!

মেরিনা সৈকতেই সমাহিত হলেন দ্রাবিড় রাজনীতির দীর্ঘপুরুষ মুথুভেল করুণানিধি। যাঁর হাত ধরে রাজনীতিতে আসা, সেই সি এন আন্নাদুরাইয়ের সমাধির পাশেই। ছ’দশক ধরে যাঁদের সঙ্গে চলেছে রাজনীতির লড়াই— সেই একদা বন্ধু এমজি রামচন্দ্রন আর কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী জয়ললিতাও রইলেন পাশে।

শ্রদ্ধা: এম করুণানিধির শেষকৃত্যে মেরিনা সৈকতে জনসমুদ্র। বুধবার চেন্নাইয়ে। ছবি: এপি।

শ্রদ্ধা: এম করুণানিধির শেষকৃত্যে মেরিনা সৈকতে জনসমুদ্র। বুধবার চেন্নাইয়ে। ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩১
Share: Save:

মেরিনা সৈকতেই সমাহিত হলেন দ্রাবিড় রাজনীতির দীর্ঘপুরুষ মুথুভেল করুণানিধি। যাঁর হাত ধরে রাজনীতিতে আসা, সেই সি এন আন্নাদুরাইয়ের সমাধির পাশেই। ছ’দশক ধরে যাঁদের সঙ্গে চলেছে রাজনীতির লড়াই— সেই একদা বন্ধু এমজি রামচন্দ্রন আর কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী জয়ললিতাও রইলেন পাশে।

নিজেই লিখে রেখেছিলেন শেষশয্যার বার্তাটি। ধীরে ধীরে যখন নেমে গেল শবাধার, জ্বলজ্বল করছিল ক’টি শব্দ, ‘‘কোনও দিন যিনি বিশ্রাম নেননি, তিনি এখানে বিশ্রামে।’’ ‘আপ্পা’ চোখের আড়াল হতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন এম কে স্ট্যালিন।

তার আগে? বিস্তর নাটক ও রাজনীতির ঘোলা জল। তামিল রাজনীতিতে বড় কেউ মারা গেলে যেমনটি হয়, বাঁধা গতে চলে না কিছুই। উত্তরাধিকারের প্রশ্নই হোক বা অন্ত্যেষ্টির স্থল। গত কাল সন্ধ্যা ৬টা ১০-এ কাবেরী হাসপাতালে মৃত্যু হয় করুণানিধির। কিন্তু শোক বার্তার ঢলের মধ্যে কাটে ছন্দ। পরিবারের অনুরোধ ছিল, অন্ত্যেষ্টির জমি দেওয়া হোক মেরিনা বিচে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আন্নাদুরাইয়ের সমাধির পাশে। কিন্তু এডিএমকের পলানীস্বামী সরকার জানায়, সেটা সম্ভব নয়। আইনের বাধা আছে। জল গড়ায় মাদ্রাজ হাইকোর্টে। রাতেই চলে শুনানি। সৈকতে অন্ত্যেষ্টির বিরোধিতা করে যে জনস্বার্থ আর্জিগুলি জমা ছিল, তার সবই প্রত্যাহার করে নেন আবেদনকারীরা। এর পরেও বক্তব্য পেশের জন্য সময় চায় রাজ্য সরকার। আজ সকাল আটটা থেকে ফের হয় শুনানি। শেষে জমি-রাজনীতিতে জল ঢেলে কোর্ট জানায়, বাধা নেই মেরিনায় অন্ত্যেষ্টিতে।

হাসপাতাল থেকে করুণার দেহ কাল রাতে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর গোপালপুরমের বাড়িতে। রাতেই মেয়ে কানিমোঝির বাসভবন হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজাজি হলে। আগে থেকেই সেখানে ভিআইপি, কালো-লাল দলীয় পতাকা হাতে ডিএমকে ক্যাডারের ভিড়। দেওয়াল বেয়ে উঠে পড়ছেন ভক্তরা। হিমশিম পুলিশ। বেলা স‌ওয়া এগারোটা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন জনা ৩৭। মূলত ভিড়ের চাপ ও শরীরে জলের অভাবে। হাসপাতালে নেওয়া হলে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের এক জন বছর ষাটের মহিলা।

আরও পড়ুন: কলাইনারের হাতে গড়া স্ট্যালিনের হাতে ব্যাটন

এল হাইকোর্টের রায়। হঠাৎ যেন বিষাদে হরিষ। ফের ধ্বনি ওঠে মেরিনা, মেরিনা। এত ক্ষণ ছিল দাবির সুর। এ বার হর্ষধ্বনি। এক লহমার জন্য এক চিলতে হাসি যেন কানিমোঝির মুখে। রায় জেনে এই প্রথম বার প্রকাশ্যে কান্নার বাঁধ ভাঙল স্ট্যালিনের।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এলেন হাইকোর্টের রায়ে ডিএমকে শিবিরে স্বস্তি ফেরার কিছু পরে। সঙ্গী নির্মলা সীতারামন ও বিজেপির অন্য নেতারা। সকালের আলো ফুটতে সপরিবার এসেছিলেন রজনীকান্ত। কমল হাসনও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে গিয়েছিলেন কাল রাতেই। আজ হাইকোর্টের মেরিনা-রায়কে স্বাগত জানান তিনি। সৈকতে করুণানিধির অন্ত্যেষ্টিতে উপস্থিত রইলেন তৃণমূলের এক নেতা। ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ও গুলাম নবি আজাদ-সহ দলের অন্য নেতারা।

দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE