Advertisement
E-Paper

নৌবাহিনীর জাহাজে সপরিবার প্রমোদ ভ্রমণ, রাজীব গাঁধীকে ফের আক্রমণ মোদীর

দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাজীবকে নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধতে বিঁধতে মোদী তুলে আনেন রাহুল গাঁধীর অভিযোগের কথা। বললেন, ‘‘নামদার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সেনাকে আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি করে ফেলেছি। কিন্তু আমি আজ জানাচ্ছি, আসলে কে সেনাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেছেন?’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০৩:০৮
রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

বফর্স, শিখ দাঙ্গা, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা। ভোটে আচমকাই রাজীব গাঁধীর প্রসঙ্গ তুলে এই তিন তির নিক্ষেপ করতে চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে আজ তাঁর প্রথম সভাতেও তার অন্যথা হল না। তবে সেই রাজীব-অস্ত্রেই আজ তিনি সুকৌশলে মিশিয়ে দিলেন চতুর্থ হাতিয়ার— সেনা ও দেশভক্তি। আর সেটা করতে শুধু রাজীব নয়, ইন্দিরা-জওহরলাল নেহরুকেও ভোটের ময়দানে নামালেন মোদী। যা দেখে কংগ্রেস বলছে, ‘‘নেহরু-ইন্দিরা-রাজীবরা কি ভোটে লড়ছেন! হার নিশ্চিত বুঝে মোদী তাঁদের এত আক্রমণ করছেন কেন? করছেন নোটবন্দি, জিএসটি নিয়ে অপদার্থতা ঢাকতে আর বেকারত্বের মতো সমস্যা মোকাবিলায় নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে।’’

দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাজীবকে নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধতে বিঁধতে মোদী তুলে আনেন রাহুল গাঁধীর অভিযোগের কথা। বললেন, ‘‘নামদার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সেনাকে আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি করে ফেলেছি। কিন্তু আমি আজ জানাচ্ছি, আসলে কে সেনাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেছেন?’’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী শোনালেন, ‘‘রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সমুদ্র নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইএনএস-বিরাট যুদ্ধজাহাজে গোটা পরিবার নিয়ে একটি নির্জন দ্বীপে দশ দিনের ছুটি কাটাতে যান। নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকেদেরও। যুদ্ধজাহাজকে ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা!’’ মোদী বলেন, ভারতীয় সেনার বিমানেও ইটালি থেকে আসা বিদেশিদের ছুটিতে নিয়ে যান। তাঁদের দেখভালের জন্য সেনার বিশেষ হেলিকপ্টারও মোতায়েন ছিল। আর শুধু রাজীব নন, নেহরু-ইন্দিরার আমল থেকেই এই পারিবারিক ছুটি কাটানোর চল রয়েছে।

রামলীলায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা তখনও শেষ হয়নি, রাজীবের সপরিবার ছুটি কাটানো নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ছাপা খবরও জানাতে শুরু করল বিজেপি। বিজেপি জানাল, ১৯৮৭ সালে লক্ষদ্বীপের বাঙ্গারাম দ্বীপে দশ দিনের ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন রাজীব। সনিয়া, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা-সহ ছিলেন সনিয়া মা, বোন, জামাইবাবুও। ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন ও তাঁদের ছেলে-মেয়েরাও। আর ছিলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংহের ভাই ও তাঁর স্ত্রী। যে অর্জুনের আমলে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৫০ সালে জওহরলাল নেহরুও ‘আইএনএস দিল্লি’-তে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার সময়ে পরিবারকে নিয়ে যান। সেই জাহাজের ডেকে ছোট্ট রাজীব ও সঞ্জয়ের ছবিও পোস্ট করে বিজেপি।

মোদী ও বিজেপির এই আচমকা নতুন আক্রমণের জবাবে কংগ্রেস বলছে, আসলে পাঁচ বছরে নিজের যাবতীয় ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই আবোল-তাবোল বকছেন প্রধানমন্ত্রী। দলের নেতা পবন খেরা বলেন, ‘‘ভোট হচ্ছে ২০১৯ সালে। কেন প্রধানমন্ত্রী বার বার প্রয়াত রাজীব গাঁধীর কথা তুলছেন? কেন নেহরু-ইন্দিরাকে টেনে আনছেন? কোন আসনে ভোটে লড়ছেন তাঁরা? দরকার হলে নিজের গুরু নাথুরাম গডসের নামে ভোট লড়ুন না মোদী! দলের ইস্তাহার আর সরকারের কাজ নিয়ে ভোটে লড়ুন। হার নিশ্চিত বুঝে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা।’’ প্রিয়ঙ্কাও বলেন, ‘‘নোটবন্দি, জিএসটি, মেয়েদের নিরাপত্তা ও অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি নিয়ে দিল্লির মেয়ে হিসেবে আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি। অপ্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে নজর ঘোরাবেন না।’’

আজ সকালে হরিয়ানার সভা থেকেই মোদী রাজীবের প্রসঙ্গ তুলে আসছেন। দিল্লিতেও বললেন, ‘‘কংগ্রেস এখন ন্যায়ের কথা বলছে। শিখ দাঙ্গার অন্যায়ের হিসেব কে দেবে? শিখ দাঙ্গার সঙ্গে জড়িতকে মুখ্যমন্ত্রী (কমল নাথ) করা কীসের ন্যায়? আমার আমলে শিখ দাঙ্গার দোষীরা জেল ও ফাঁসিকাঠে পৌঁছেছে।’’ এর পরেই বফর্সের সঙ্গে অগুস্তা আর ভোপালকে জড়িয়ে রাহুলকে আক্রমণ করলেন কুত্রোচ্চি মামা, মিশেল মামা, অ্যান্ডারসন মামা বলে।

রাজধানীতে প্রথম সভা। প্রচারের আলোও বেশি। শেষ দু-দফার আগে তাই গোটা দেশেই বার্তা দিলেন। কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধী শিবিরে বেছে বেছে শরদ পওয়ার, লালু, মুলায়ম, চন্দ্রবাবু, দেবগৌড়া, করুণানিধি— সকলের বিরুদ্ধেই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ আনলেন। বললেন, এই ‘ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষবাদী’রা দুর্নীতিতে লিপ্ত। একই সঙ্গে নাম না করে অরবিন্দ কেজরীবালকেও দিল্লিতে নিশানা করলেন ‘নাকামপন্থী’ বলে। খলিস্তান ও দেশ-বিরোধী শক্তির সঙ্গে যোগসাজশেরও অভিযোগ আনলেন কেজরীর বিরুদ্ধে।

INS Virat Rajiv Gandhi Narendra Modi Lok Sabha Election 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy