Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

রাজ্যের সব বুথকে ‘সুপার সেনসিটিভ’ ঘোষণার দাবি বিজেপির, মমতা বললেন— ‘বাংলার অপমান’

রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা এমন কিছু অফিসারের তালিকা কমিশনকে দিয়েছি, যাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেই রকম একটি তালিকা আমরা কমিশনে জমা দিয়েছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি আমরা। কারণ পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ তৃণমূল কর্মীদের মতো আচরণ করে।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৬:০২
Share: Save:

রাজ্যের সব বুথ অতি স্পর্শকাতর করার দাবি করে বাংলাকে অপমান করেছে বিজেপি। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এভাবেই তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের সব বুথকে ‘সুপার সেনসিটিভ’ বা ‘অতি স্পর্শকাতর’ হিসেবে ঘোষণার দাবি তুলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দিল্লিতে তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নালিশ জানান। এ দিন লোকসভার প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে এর বিরুদ্ধেই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার বিজেপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। সঙ্গে ছিলেন আরও দুই মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং জেপি নাড্ডা। রাজ্যের তরফে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়। কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে কমিশনকে আমরা বলেছি, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে সংঘর্ষ এবং হিংসায় ১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গই সেই রাজ্য, যেখানে জয়ী প্রার্থীরা নিজের রাজ্যে ঢুকতে পারেন না, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ অফিসাররাও ধর্নায় বসেন, বিজেপি সভাপতির হেলিকপ্টার নামতে দেওয়া হয় না, অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার নামার অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই আমরা দাবি জানিয়েছি, পশ্চিমবঙ্গকে সুপার সেনসিটিভ রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হোক।’’

এই সব অভিযোগ করে আসলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিই কমিশনের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। অন্য দিকে মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর বুধবারই প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে ‘অতি স্পর্শকাতর’ প্রসঙ্গ উঠতেই মমতার বক্তব্য, ‘‘এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এটা বাংলার মানুষকে অপমান করা। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করি।’’ বাংলার এই অপমানের প্রতিবাদ করা হবে। পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘এটা সর্বৈব মিথ্যা। রাজ্য সরকারের যে রিপোর্ট, তাতে বেশিরভাগই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে ভোটে। এই রিপোর্ট আদালতেও দাখিল করা হয়েছে। তার পরও ওরা এসব করছে।’’ মমতার দাবি, বাংলা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ রাজ্য। ওরা ভয় পাচ্ছে বলেই এই সব কথা বলছে।

এর সঙ্গে বিজেপির আতসকাচের নীচে রয়েছেন বেশ কিছু আমলা, পুলিশ অফিসার। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিয়োগ পক্ষপাতিত্বের। এই ধরনের অফিসারদের একটি তালিকাও এ দিন কমিশনকে তুলে দিয়ে তাঁদের ভোটের দায়িত্ব থেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা এমন কিছু অফিসারের তালিকা কমিশনকে দিয়েছি, যাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি আমরা। কারণ পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ তৃণমূল কর্মীদের মতো আচরণ করে।’’

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালের নির্বাচন সম্পর্কে কতটা জানেন?

লোকসভা ভোটের সব খবর জানতে ক্লিক করুন

কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও তাদের কোথায়, কী ভাবে মোতায়েন করা হবে— এ সব বিষয় ঠিক করার দায়িত্বভার সাধারণত থাকে রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের উপর। ফলে অনেক সময়ই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখার অভিযোগও ওঠে। তাই বিজেপির দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সম্পূর্ণ দায়িত্বভার দিতে হবে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের উপর। রবিশঙ্করের অভিযোগ, ‘‘এমনকি, সংবাদ মাধ্যমও স্বাধীন নয় পশ্চিমবঙ্গে। তাই রাজ্যে আলাদা মিডিয়া অবজার্ভার নিয়োগের দাবি জানিয়েছি আমরা।’’ জবাবে মমতার বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে সংবাদ মাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন। বরং বিজেপিই সংবাদ মাধ্যমকে কুক্ষিগত করে রেখেছে।

আরও পড়ুন: রাহুল-মমতা-মায়াবতী-অখিলেশকে টুইট করলেন মোদী, কী বললেন জানেন?

আরও পড়ুন: বাদ ৮ সাংসদ, প্রার্থী তালিকায় রুপোলি ছটা, মিমি-নুসরতকে এনে চমক দিলেন মমতা

কমিশনে এদিন রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। রবিশঙ্করের বক্তব্য, ‘‘আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে, তা নিয়ে কেউ প্রচার করতে পারবে না। অথচ রাহুল গাঁধী মঙ্গলবারও একটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষের টাকায় কার পকেট ভরেছে’। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। কমিশনকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE