Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গুজরাতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অতীত, মোদীর দাবি ঘিরে বিতর্ক

লোকসভা ভোটের মুখে গুজরাতে উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করতে গিয়ে মোদী এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের গুজরাতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নিয়মিত ভাবেই ঘটত।’’

অনেকের মতে, ভোটের আগে নিজের রাজ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভাঙন ঠেকাতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: রয়টার্স।

অনেকের মতে, ভোটের আগে নিজের রাজ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভাঙন ঠেকাতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

গুজরাতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের দিন শেষ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তাঁর এই দাবি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা।

লোকসভা ভোটের মুখে গুজরাতে উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করতে গিয়ে মোদী এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের গুজরাতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নিয়মিত ভাবেই ঘটত।’’ শ্রোতাদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জামনগরে কি এমন ঘটনা ঘটত না? তবে সে সব এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ মোদীর এই দাবির পরেই বিরোধী দলের নেতাদের প্রশ্ন, গুজরাতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে যাঁর নাম জড়িয়ে, তিনিই এখন এ সব কথা বলছেন। অথচ বহু বছর তিনিই গুজরাতের প্রশাসনের দায়িত্বে ছিলেন। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ আটকাতে কত টুকু পদক্ষেপ করেছেন, তা গোটা দুনিয়া জানে। এখন লোকসভা ভোটের আগে এমন সব দাবি করে সংঘর্ষের দায় কার উপর চাপাতে চাইছেন?

লোকসভা ভোটের মুখে আজ থেকে শুরু হয়েছে মোদীর দু’দিনের গুজরাত সফর। অনেকেই মনে করছেন, ভোটের আগে নিজের রাজ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভাঙন ঠেকাতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। সফরের শুরুতেই আজ উদ্বোধন করেছেন একের পর এক প্রকল্পের। আর তা করতে গিয়ে আক্রমণ করেছেন প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেসকে।

আরও পড়ুন: কোচিকে করাচি, মুখ ফস্কে বলেও সামলে নিলেন মোদী

২০১৪-র লোকসভা ভোটে গুজরাত বিজেপিকে জিতিয়ে এনেছিল বিরাট ভাবে। মোদী হাওয়ায় রাজ্যের ২৬টি লোকসভা আসনের সব ক’টিতেই জিতেছিল গেরুয়া। কিন্তু এর তিন বছর পরেই বিধানসভা ভোটের ফল মোদী-অমিত শাহদের বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। রাজ্যের মোট ১৮২টি আসনের মধ্যে ৯৯টি পায় বিজেপি। কংগ্রেস ৭৭। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যে ১০০টি আসন না পেলেও সরকার গড়ে বিজেপি। সে বার কোনও ক্রমে মুখরক্ষা হলেও পরে আহমেদ পটেলকে রাজ্যসভায় পাঠানো আটকাতে মোদী-শাহের সব চেষ্টাই মুখ থুবড়ে পড়ে। এই চাপের মধ্যেই গুজরাতে এ বার ভোটে যেতে হচ্ছে বিজেপিকে। বিরোধীরা বলছেন, এ জন্যই প্রকল্প উদ্বোধনের ধুম।

আরও পড়ুন: সুখোইয়ের ক্ষেপণাস্ত্রে ধ্বংস পাক ড্রোন, অভিযান চলবে বলে জানালেন বায়ুসেনা-প্রধান

সোমবার আমদাবাদ মেট্রো রেলের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। শিলান্যাস করেন দ্বিতীয় পর্বের। জসপুরে একটি মন্দিরের উদ্বোধন করেন মোদী। এর পরেই জামনগরে ৭৫০ আসন বিশিষ্ট গুরু গোবিন্দ সিংহ হাসপাতালের ভবনের উদ্বোধন। এ ছাড়া, সৌরাষ্ট্র নর্মদা সেচ প্রকল্প, আজি থেকে খিজাদিয়া পর্যন্ত ৫১ কিলেমিটার পাইপলাইন, বান্দ্রা-জামনগর হামসফর এক্সপ্রেসের সূচনা— এমনই বেশ কিছু প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর নাম।

নির্বাচন কমিশন ভোট ঘোষণা করতে পারে এ মাসের ১০-১১ তারিখে। বিরোধীরা বলছেন, তার আগেই প্রকল্প উদ্বোধনে নেমে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ক‌ংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলের মন্তব্য, ‘‘ভোট ঘোষণা করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন কি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফরের সব কর্মসূচি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছে?’’ কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ, সরকারি অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক জনসভা করছেন মোদী। সরকারি টাকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে, কমিশনও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সরকারকে প্রচারের সুযোগ করে দিচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE