Advertisement
E-Paper

বিভাজনের রাজনীতি করছেন মোদী, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বার্তা কংগ্রেসের

পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ২১:৪০
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।

ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।

একসপ্তাহে তিনবিধায়কের ইস্তফা। তার জেরে চাপা অস্বস্তি দলের অন্দরে। সেই পরিস্থিতিতেই গুজরাত থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে লোকসভা নির্বাচনের যাত্রা শুরু করল কংগ্রেস। আসন্ন নির্বাচনের রণকৌশল তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাতকেই বেছে নিয়েছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই মতো মঙ্গলবার আমদাবাদে সর্দার পটেল ন্যাশনাল মেমোরিয়ালে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে। সেখানেও বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ ওঠে। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে মোদী সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করছেন বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে উদ্ধৃত করে দলের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। দেশে বিভাজন ঘটানোর চেষ্টা করছেন উনি। নিজের রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সামনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু ওঁকে সফল হতে দেব না আমরা।’’

দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের মহিলা, পড়ুয়া, শিক্ষাবিদ এবং ব্যবসায়ী মহল। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তফসিলি জাতি, উপজাতি,অনগ্রসর শ্রেণী এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংবিধানে যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে, একে একে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রয়াস চলছে।’’

আরও পড়ুন: এ বারের লড়াই স্বাধীনতা সংগ্রামের চেয়ে কম নয়, বললেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী​

পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীও। তিনি বলেন, ‘‘পুলওয়ামা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু মোদী এমন ভাব দেখাচ্ছেন, যেন তাঁর একার ক্ষতি হয়েছে।’’ ইউপিএ জমানার বিভিন্ন প্রকল্পকে মোদী সরকার নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও।

আমদাবাদে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ, একে অ্যান্টনি, গোলাম নবি আজাদ, আহমেদ পটেল,রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী-সহ সিদ্দারামাইয়া, তরুণ গগৈ, হরিশ রওয়াত এবং উম্মেন চান্ডির মতো বিভিন্ন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরা। তাঁদের উপস্থিতিতেএ দিন গাঁধীনগরের আদলজ গ্রামের জনসভায় দলের সদস্যপদ গ্রহণ করেন পতিদার আনামত আন্দোলনের নেতা হার্দিক পটেল। গত সপ্তাহে জামনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে আসন্ন নির্বাচনে লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন হার্দিক। এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর পুলওয়ামা প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। হার্দিক বলেন, ‘‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গুজরাতে জনসভা করার কথা ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর তা বাতিল করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার প্রয়োজন বোধ করেননি। গোটা দেশ যখন শোকে কাতর, তখনও রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।’’

সংরক্ষণের দাবিতে সরব হওয়ার সময় থেকেই হার্দিকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাহুল গাঁধীর। রাহুলের অনুরোধে ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছিল পতিদার আনামত আন্দোলনের এই নেতাকে। কংগ্রেসের সদস্যপদ গ্রহমের পর রাহুলকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন হার্দিক। তাঁর কথায়, ‘‘শেষমেশ কংগ্রেস এবং রাহুল গাঁধীকে কেন বাছলাম, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন। তাঁদের বলি, রাহুল অত্যন্ত সৎ মানুষ। একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী নন উনি। তাই ওঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’এতদিন পটেলদের জন্য সংগ্রাম করে এসেছেন, তবে কংগ্রেস সদস্য হিসাবে এ বার ৬ কোটি গুজরাতবাসীর কল্যাণে কাজ করতে তিনি উত্সুক বলেও জানান হার্দিক। সুযোগ পেলেই পরিবারতন্ত্র নিয়ে গাঁধী পরিবার ও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও। কিন্তু হার্দিকের প্রশ্ন, ‘‘নেতার ছেলে রাজনীতিতে যোগ দিতে চাইলে দোষের কী?’’

আরও পড়ুন: মিমি-নুসরতকে মাঠে নামিয়ে বড় চমক মমতার, বাদ সন্ধ্যা-তাপস, কমল তারকার সংখ্যাও

দীর্ঘ ৫৮ বছর পর এই প্রথম গুজরাতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। যদিও ফেব্রুয়ারি মাসেই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জেরে তা স্থগিত হয়ে যায়। তার পর এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়। কারণ ১৯৩০ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন ১২ মার্চ-দিনটিকেই লবণ সত্যাগ্রহের জন্য বেছে নেন মহাত্মা গাঁধী।

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Lok Sabha Election 2019 Congress CWC Meeting Gujarat Sonia Gandhi Rahul Gandhi Hardik Patel BJP Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy