Advertisement
E-Paper

দেশের ৫ কোটি পরিবারকে মাসে ৬ হাজার টাকা, প্রতিশ্রুতি রাহুলের

কংগ্রেস বলছে, ভোটের লড়াই এখন রাহুলের ‘ন্যায়’ বনাম নরেন্দ্র মোদীর ‘অন্যায়’। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫০
দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

চৌকিদারের দেশভক্তি নিয়ে প্রচারের মোড় ঘোরাতে ‘গরিবি হটাও’ অভিযানে নামলেন রাহুল গাঁধী। ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গাঁধী যে স্লোগান নিয়ে জিতেছিলেন, রাহুলও আজ সেই মন্ত্র সঙ্গী করলেন। প্রতিশ্রুতি দিলেন দেশের ৫ কোটি পরিবারকে মাসে ৬ হাজার টাকা দেওয়ার। যার আওতায় আসবেন প্রায় ২৫ কোটি গরিব মানুষ।

ন্যূনতম আয়ের ঘোষণা আগেই করেছিলেন রাহুল। আজ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর জানালেন টাকার অঙ্কটি। এই প্রকল্পের নাম প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা দিয়েছেন ‘ন্যায়’, ‘ন্যূনতম আয় যোজনা’। কংগ্রেস বলছে, ভোটের লড়াই এখন রাহুলের ‘ন্যায়’ বনাম নরেন্দ্র মোদীর ‘অন্যায়’।

সম্প্রতি মোদী সরকার কৃষকদের বছরে ৬ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। রাহুল সব গরিব পরিবারকে মাসে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানালেন, প্রতি পরিবারের ন্যূনতম মাসিক রোজগার ১২ হাজার টাকা করাই তাঁর লক্ষ্য।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রাহুল বললেন, ‘‘আজ ঐতিহাসিক দিন। ৫ কোটি পরিবারকে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়া হবে। জাত-পাত-ধর্ম, শহর-গ্রাম নির্বিশেষে। টাকা যাবে সোজা ব্যাঙ্কে। এক দিকে অনিল অম্বানীর ভারত, অন্য দিকে গরিবের ভারত থাকবে না। নরেন্দ্র মোদী ধনীদের টাকা দিতে পারলে আমরা গরিবদের দেবো। দুনিয়ার সব থেকে বড় প্রকল্প হবে এটি।’’ আর তার পরেই প্রিয়ঙ্কার টুইট: ‘সবকি ন্যায়, সবকি সম্মান’।

রাহুলের এই আচমকা ঘোষণায় যে বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে, তা স্পষ্ট। বিকাল গড়াতেই আসরে নেমে পড়লেন কেন্দ্রের এক ঝাঁক মন্ত্রী। খোদ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও সাংবাদিক সম্মেলন করতে এলেন রাতে।

প্রশ্ন হল, ৫ কোটি পরিবারকে বছরে ৭২ হাজার টাকা করে দিলে প্রয়োজন ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা আসবে কোথা থেকে?

কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, মনমোহন সিংহ, পি চিদম্বরমেরা দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে গত ৪-৫ মাস ধরে বিস্তর আলোচনা করেছেন। সরকার যে হিসেবে আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্প রূপায়ণ করে, সেই তালিকা ধরেই গরিব পরিবার বাছাই হবে। দেখা গিয়েছে, গরিব পরিবারের আয় গড়ে মাসে ৫-৬ হাজার টাকা। ২ কোটি পরিবার ৬ হাজার টাকার নিচে আয় করেন। ফলে আরও ৬ হাজার টাকা দিয়ে আপাতত ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা হবে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রথমে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি বসবে। তার পর পাইলট প্রকল্প শুরু করে ধাপে ধাপে এগোনো হবে।

দলের নেতাদের মতে, প্রথম দিকে কোনও পরিবার মাসে ১১ হাজার টাকা আয় করলেও তাদের ৬ হাজার টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু পরে মূল্যায়ন করে যদি দেখা যায়, সেই পরিবার ১২ হাজার টাকার বেশি আয় করছে, তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। ১২ হাজার টাকার কম পেলে বাকিটা পুষিয়ে দেওয়া হবে। দেশের ২০ শতাংশ গরিব পরিবারের কাছে পৌঁছতে এমনিতেই বছর দুয়েক সময় লাগবে। তা ছাড়া শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যকেও কিছু দায়ভার বহন করতে হবে। আর গরিবদের আয় বাড়লে রাজস্ব বাড়বে, আর্থিক বৃদ্ধিও হবে।

জেটলি অবশ্য বলছেন, ‘‘গোটাটাই ধাপ্পা। ইন্দিরা গাঁধীর সময়েও এই স্লোগান তোলা হয়েছিল। কিন্তু গরিবি দূর হয়নি। এমনিতেই নরেন্দ্র মোদী সরকার এখন সব প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা গরিবদের দিচ্ছে। ফলে রাহুল গাঁধী কী-ই বা ঘোষণা করলেন? এ তো ছলনা।’’ রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, ‘‘এত দিন পরে রাহুল গাঁধীর টনক নড়ল গরিবদের নিয়ে?’’ নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার বলেন, ‘‘এতে রাজকোষ ঘাটতি ৩.৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ চলে যাবে।’’ বিজেপির মতে, এর পরেও যদি কৃষিঋণ মাফ করা হয়, তা হলে বর্তমান ভর্তুকি না তুলে কোনও মতেই এ প্রকল্প রূপায়ণ সম্ভব নয়।

কিন্তু কংগ্রেস বলছে, ১৯৩৪ সালে সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিদেশেও আলোচনা হয়েছে।

রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘মোদীজি, অরুণজি খুশি মনে তাঁদের গুটিকয়েক বন্ধুর ৩.১৭ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মাফ করে দিয়েছেন। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গরিবি-বিরোধী প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন।’’

Rahul Gandhi Lok Sabha Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy