‘‘ম্যায় নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী...’’
ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে সাতটা বেজে তিন মিনিট। দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি ভবন প্রাঙ্গণ জুড়ে রব উঠল ‘জয় শ্রীরাম’, ‘মোদী-মোদী-মোদী’, ‘হর হর মোদী’।
লোকসভা নির্বাচনে দু’হাত তুলে মোদীকে ভোট দিয়েছেন দেশের জনতা। নতুন সরকারের যাত্রা শুরুর মুখে তিনি আগের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী। সেই শক্তির ছাপও পড়ল মন্ত্রিসভায়। অসুস্থতার কারণে অরুণ জেটলি মন্ত্রী হতে রাজি হলেন না। বদলে এলেন মোদীরই সেনাপতি, ক্ষমতার নিরিখে মোদীর পরেই— অমিত শাহ। সুষমা স্বরাজও মন্ত্রী হলেন না। চমক হিসেবে পূর্ণমন্ত্রী হয়ে এলেন প্রাক্তন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর। জেটলি-সুষমা না-থাকার অর্থ, একদা লালকৃষ্ণ আডবাণীর অনুগামী দুই প্রধান নেতার বিদায়। অনেকেই বলছেন, এ বার পাকাপাকি ভাবে শেষ হল আডবাণী-যুগ।
আরও পড়ুন: বাদ গত বারের অর্থমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, আরও যে মন্ত্রীরা জায়গা পেলেন না এ বার
শিবসেনা, অকালির মতো শরিকরা থাকলেও মোট ৫৮ জনের মন্ত্রিসভায় শামিল হল না নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ। এডিএমকে, আপনা দলও এল না। যদিও নীতীশ বলছেন, এর জন্য বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে কোনও ছেদ পড়বে না।
অমিত শাহ মন্ত্রী হবেন, এমন ইঙ্গিত ছিলই। বিজেপির অন্দরের গুঞ্জন, আপাতত রাজনাথ সিংহ সরকারে দু’নম্বর থাকলেও অচিরেই তাঁকে টপকে যাবেন শাহ। তবে মন্ত্রী হওয়ার কারণে শাহকে শীঘ্রই বিজেপি সভাপতির পদ ছাড়তে হবে। দল সূত্রে ইঙ্গিত, জগৎপ্রকাশ নাড্ডার মতো কাউকে সভাপতি করা হবে।
সুষমা স্বরাজ শারীরিক কারণে ভোটে লড়েননি। তা সত্ত্বেও তাঁকে রাজ্যসভায় এনে মন্ত্রী করার সম্ভাবনার কথা বলছিলেন অনেকে। আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ অনুষ্ঠানে সুষমা দর্শক আসনে উপস্থিত ছিলেন বটে। কিন্তু তাঁকে সেখানে দেখেই অনেকে বিস্মিত হন। তবে মোদী-শাহের পরে উপস্থিত জনতার থেকে আজ যিনি সব চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছেন, তিনি স্মৃতি ইরানি। কাকে কী মন্ত্রক দেওয়া হল, তা ঘোষণার পরেই স্পষ্ট হবে কে কতটা গুরুত্ব পেলেন। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, জাতপাতের অঙ্ক এবং আঞ্চলিক ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখেই মন্ত্রিত্ব বণ্টন করা হয়েছে। পাশাপাশি, জনগণের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে, এমন সাংসদদেরই বেছেছেন মোদী-শাহ। আর সেই সূত্রেই মেনকা গাঁধী, সুরেশ প্রভু, জয়ন্ত সিন্হা, রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর, বিজয় গয়ালের মতো অনেক চেনা মুখই বাদ পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিজেপি বলছে, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের এখনও অনেক সুযোগ আছে। মোট ৮১ জনকে মন্ত্রী করার সুযোগ থাকলেও শপথ নিয়েছেন ৫৮ জন। ফলে ২৩টি জায়গা এখনও খালি রয়েছে। প্রয়োজন বুঝে সময়মতো সেগুলি পূরণ করা হবে।