Advertisement
E-Paper

বিষ-বায়ুতে বিপন্ন শৈশব, প্রকাশ রিপোর্টে

ডব্লিউ এইচ ও আরও জানিয়েছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর বায়ুদূষণে ১৫ বছরের কম বয়সী অন্তত ৬ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। এই হিসেব ২০১৬-র তথ্য ধরে। পরিবেশবিদদের দাবি, বর্তমানে পরিস্থিতি আরও বিষিয়েছে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০৬
 প্রতি ১০টি শিশু মৃত্যুর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে দায়ী থাকছে বায়ুদূষণ। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউ এইচ ও) একটি রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।— ফাইল চিত্র।

প্রতি ১০টি শিশু মৃত্যুর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে দায়ী থাকছে বায়ুদূষণ। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউ এইচ ও) একটি রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।— ফাইল চিত্র।

ভারতের পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের ৯৮ শতাংশ বায়ুদূষণের প্রকোপে পড়ছে। প্রতি ১০টি শিশু মৃত্যুর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে দায়ী থাকছে বায়ুদূষণ। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউ এইচ ও) একটি রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। শুধু ভারত নয়, আয়ের নিরিখে ‘নিম্ন-মধ্যবিত্ত’ গোত্রে থাকা দুনিয়ার বাকি দেশগুলিতেও একই ছবি বলে ডব্লিউ এইচ ও (হু)-র দাবি। তারা জানিয়েছে, এই দূষণ যেমন রাস্তাঘাটে, তেমনই বাড়ির ভিতরেও বায়ুদূষণের প্রভাব পড়ছে।

ডব্লিউ এইচ ও আরও জানিয়েছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর বায়ুদূষণে ১৫ বছরের কম বয়সী অন্তত ৬ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। এই হিসেব ২০১৬-র তথ্য ধরে। পরিবেশবিদদের দাবি, বর্তমানে পরিস্থিতি আরও বিষিয়েছে।

পরিবেশবিদেরা বলছেন, সামনেই শীতকাল। ইতিমধ্যেই দিল্লির দূষণ মাত্রা ছাড়িয়েছে। কলকাতার হাওয়াতেও দূষণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে বলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের দাবি। পরিবেশবিদদের একাংশের বক্তব্য, এই দূষণের পিছনে গাড়ি, কংক্রিটের গুঁড়ো এবং উত্তর ভারতের ক্ষেত্রে খড় পোড়ানোর ছাইকে দায়ী করছেন। তবে ডব্লিউ এইচ ও-র সমীক্ষা বলছে, শিশুদের শ্বাসকষ্টের পিছনে ৫০ ভাগ দায়ী রান্নাঘরের ধোঁয়া।

ডব্লিউ এইচ ও জানিয়েছে, এই দূষণ বাতাসে ভাসমান সুক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) মাত্রা ধরে করা হয়েছে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণাকে সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটি সুক্ষ্ম ধূলিকণা, অন্যটি ভাসমান ধূলিকণা (পিএম ১০)। কিন্তু পরিবেশবিদদের মতে, পিএম ২.৫ শরীরে রোগসৃষ্টির ক্ষেত্রে মারাত্মক। কারণ, এই ধূলিকণা সরাসরি শ্বাসনালিতে ঢুকে যায়। ফুসফুসে এবং রক্তেও মেশে তা। শ্বাসনালি ছাড়াও মস্তিষ্ক-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে রোগ সৃষ্টি করে।

এই সমীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুমিতা রায়চৌধুরী বলছেন, এ দেশে শিশুদের উপরে বায়ুদূষণের প্রভাবের কথা আগেও নানা রিপোর্টে উঠে এসেছে। এবং তাদের মতো একাধিক সংস্থার সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, বায়ুদূষণ থেকে তৈরি রোগে যেমন শিশুরা মারা যাচ্ছে, তেমনই ফুসফুসে স্থায়ী ক্ষতিও হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই সমস্যাকে সরকারের জরুরিকালীন পরিস্থিতি বা হেল্থ ইমার্জেন্সি হিসেবে দেখা উচিত।’’ তাঁর মতে, এই দূষণে শুধু এ প্রজন্ম নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

এ কথা উঠে এসেছে ডব্লিউ এইচ ও-র রিপোর্টেও। তারা বলেছে, কোনও অজুহাতেই এই বিষয়টি এড়ানো যায় না। শ্বাসযোগ্য বায়ু প্রতিটি শিশুর অধিকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধনী দেশগুলির ক্ষেত্রেও এই সমীক্ষা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, ৫২ শতাংশ শিশুর উপরে বায়ুদূষণ প্রভাব ফেলছে। গোটা বিশ্বের ক্ষেত্রে নাবালকদের ৯৩ শতাংশ এই বিষবায়ুর কবলে পড়ছে বলেও ডব্লিউ এইচ ও জানিয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের উপরে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, নবজাতকের ওজনের উপরেও প্রভাব ফেলছে এই দূষণ।

Air Pollution WHO Children Breathing Delhi Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy