Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’, গুজরাত ভবনের উদ্বোধনে এসে ক্ষমাপ্রার্থী মোদী, কারণ ঘিরে জল্পনা

জৈন ধর্মে ‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’ একটি প্রচলিত কথা। আজ যার অর্থ ব্যাখ্যা করলেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই।

নতুন ভবন উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: প্রেম সিংহ

নতুন ভবন উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: প্রেম সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌।

বললেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন বললেন? কাকে বললেন? তাই নিয়েই জল্পনার পারদ চড়ল রাতের রাজধানীতে।

জৈন ধর্মে ‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’ একটি প্রচলিত কথা। আজ যার অর্থ ব্যাখ্যা করলেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই। বললেন, ‘‘গণেশ চতুর্থীর সন্ধ্যায় আমরা অনেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করি। আর জৈন প্রথায় এটি একটি উত্তম সংস্কার— মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌। কথায়, কাজে কখনও কাউকে যদি দুঃখ দিয়ে থাকি, তো ক্ষমা চাওয়ার পর্ব হল ‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’। আমার তরফ থেকেও গুজরাতের মানুষদের, দেশের মানুষদের আর এখন তো দুনিয়াকেও মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌।’’

গুজরাতের মানুষদের কথা উল্লেখ করার কারণ যে মঞ্চে তিনি এ কথা বললেন, সেটি দিল্লিতে গুজরাতের নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। যেখানে দর্শক আসনের প্রথম সারিতেই বসেছিলেন শিল্পপতি গৌতম আদানি, ছিলেন গুজরাতের অনেক বর্তমান ও প্রাক্তন অফিসার, নেতারাও। মোদী বললেন, ‘‘অনেক মুখ ১২-১৫ বছর পর দেখছি। অনেককে দেখছি, যাঁরা গুজরাতের জন্য নিজের যৌবন দিয়েছেন। অনেক অবসরপ্রাপ্ত অফিসার রয়েছেন, যাঁরা অন্যকে আলো দিয়েছেন। এই ভবনের ফিতে তো যে কেউ কেটে দিতেন। কিন্তু আপনাদের দেখার সুযোগ হল।’’ এর পরেই গণেশ চতুর্থীর প্রসঙ্গ তুলে সকলের কাছে ‘ক্ষমা’ চেয়ে নেন। অনুষ্ঠানের পরে টুইট করেও মোদী বলেছেন, ‘সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ ছড়িয়ে পড়ুক। মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’।

আচমকা কেন ক্ষমা চাইলেন মোদী, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির এক নেতা অবশ্য বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে সংসদের শেষ দিনেও প্রধানমন্ত্রী ‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম্‌’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন গোটা শাসক শিবিরের পক্ষ থেকে। ফলে এতে নতুনত্ব কিছু নেই।’’ কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, সংসদের বক্তৃতায় তো প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেই জানিয়েছিলেন, শাসক শিবিরের কেউ যদি ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কাউকে আঘাত দিয়ে থাকেন, তা হলে সে জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন। এ বারে তিনি কারণ স্পষ্ট করলেন না কেন?

দশ জনপথে সনিয়া গাঁধীর বাড়ির পাশেই এআইসিসি দফতর। তার ঠিক উল্টো দিকেই ১৩১ কোটি টাকায় তৈরি হয়েছে প্রাসাদের মতো নতুন গুজরাত ভবন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘গর্বি গুজরাত ভবন’। অনুষ্ঠানে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারকে বারবার একটি জমি দিতে বলেছেন। কিন্তু তারা গুজরাতকে গুরুত্ব দেয়নি। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই ২০১৫ সালে জমির ব্যবস্থা করেছেন। কাজ শুরু হওয়ার দু’বছরের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ হয়েছে।’’

লাটিয়েন্স দিল্লিতে প্রায় সব বাংলোই একতলার। হাতে গুণে কয়েকটি দোতলার। কিন্তু তারই মধ্যে ছ’তলার একটি বাড়ি কংগ্রেস দফতরের দিকে তাক করে থাকার অনুমতি দেওয়া কি নরেন্দ্র মোদীর আস্ফালন? বিরোধীরা আগেই এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। যদিও তখনই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জায়গার অভাবে এখন অনেক ভবনই বহুতল হচ্ছে— সাংসদদের আবাসন থেকে শুরু করে কংগ্রেস দফতরের অনতিদূরে নতুন বাণিজ্য ভবনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi BJP Apology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE