ফাইল চিত্র।
গড় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির শতকরা হার, অর্থনীতির পরিভাষায় যার পরিচিতি জিডিপি নামে, সেই উন্নয়নের সূচক নিয়ে শুরু হল রাজনৈতিক তরজা। বুধবারই পুরনো উন্নয়নের সমস্ত হিসেব নতুন করে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর। সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ইউপিএ জমানার সমস্ত উন্নয়নের সূচক। নীতি আয়োগের এই অর্থনৈতিক রিপোর্ট সামনে আসার পরই পুরো বিষয়টিকে ‘বাজে রসিকতা’ বলে কটাক্ষ করে কংগ্রেস। আর এখন এই সংস্থাকে ‘অকর্মণ্য’ বলে নীতি আয়োগ তুলে দেওয়ার সময় এসেছে বলছেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। একই সঙ্গে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যানকে সাংবাদিক বৈঠক না করে অর্থনীতির তর্কযুদ্ধে বসার চ্যালেঞ্জও দিয়েছেন তিনি।
বুধবারই প্রকাশিত হওয়া এই রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ইউপিএ জমানায় সর্বোচ্চ গড় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার ২০১০-১১ অর্থবর্ষে। কিন্তু আগে এই সংখ্যা ১০.৩ শতাংশ হলেও নতুন হিসেবে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮.৫ শতাংশ। শুধু ২০১০-১১ অর্থবর্ষই নয়, ২০০৫ সাল থেকে প্রতিটি অর্থবর্ষের হিসেবই বদলে দেওয়া হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে জিডিপি সূচকের শতাংশের বৃদ্ধির হিসেব।
নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার জানিয়েছেন, ‘‘সাম্প্রতিকতম তথ্যের ভিত্তিতেই এই গণনা করা হয়েছে। গণনার পদ্ধতিতে বদল আনাতেই পাল্টে গিয়েছে পুরনো সব হিসেব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাউকে ছোট করে দেখাতে হিসেবে বদল করা হয়েছে, বিষয়টি এরকম নয়।’’ মুখ্য সংখ্যাতত্ত্ববিদ প্রবীণ শ্রীবাস্তবও জানিয়েছেন, ‘‘ আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন হিসেব করা হয়েছে।’’
যদিও পুরো বিষয়টিকে এতটা সহজ ভাবে দেখছে না দেশের রাজনৈতিক মহল। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেও হতবাক এই ভাবে দেশের উন্নয়নের হিসেব পাল্টে দেওয়ার ঘটনায়। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম নেমে পড়েছেন টুইট যুদ্ধে। পুরো বিষয়টিকে ‘ নিম্নরুচির, বোকা এবং বাজে রসিকতা’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। এতেই না থেমে নীতি আয়োগকে তিনি আক্রমণ করেছেন ‘অকর্মণ্য একটি সংস্থা’ বলে। কখনও আবার বলেছেন, ‘ পুরো বিষয়টি কাস্তে দিয়ে পরিসংখ্যান কাটা’-র সঙ্গে তুলনীয়। থেমে নেই বিজেপি শিবির। ইউপিএ জমানায় উন্নয়নের আসল হিসেব সামনে এল বলে তারাও নেমে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
Now that Niti Aayog has done the hatchet job, it is time to wind up the utterly worthless body.
— P. Chidambaram (@PChidambaram_IN) November 28, 2018
আরও পড়ুন: নতুন হিসেবে বৃদ্ধি ছাঁটাই শুধু মনমোহনেরই
মনমোহন সিংহ নাকি নরেন্দ্র মোদী, কার আমলে অর্থনৈতিক ভাবে বেশি এগিয়েছে দেশ, এই প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে। সেই বিষয়টি সামনে এনেই এখন পরিসংখ্যান যুদ্ধে ইউপিএ এবং এনডিএ, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: উনিশের বীজ বুনে সভা রাহুল-নায়ডুর
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy