Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Sohrabuddin

কেউ মারেনি, এমনিই মারা গিয়েছেন সোহরাবুদ্দিন, বিচারপতি লোয়া, কটাক্ষ রাহুলের

টুইট করে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘সোহরাবুদ্দিন, ওঁর স্ত্রী কওসর বাঈ,বন্ধু তুলসীরাম প্রজাপতি এবং বিচারপতি লোয়াকে কেউ মারেনি। সবাই এমনি এমনিই মারা গিয়েছেন!’’

টুইট করে কটাক্ষ রাহুলের। ফাইল চিত্র।

টুইট করে কটাক্ষ রাহুলের। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:০৯
Share: Save:

‘হাইপ্রোফাইল’ সোহরাবুদ্দিন মামলায় ২২ জন অভিযুক্তকে শনিবারই বেকসুর খালাস করেছে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। সোহরাবুদ্দিনের বুলেটবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নিলেও অভিযুক্তরা যে সেই খুনের সঙ্গে জড়িত তার তথ্যপ্রমাণ না থাকাতেই এই রায় বলে জানিয়েছিলেন বিচারক এস জে শর্মা। এই ক্ষেত্রে তিনি যে অসহায়, রায় দেওয়ার সময় তাও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। টুইট করে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘সোহরাবুদ্দিন, ওঁর স্ত্রী কওসর বাঈ, বন্ধু তুলসীরাম প্রজাপতি এবং বিচারপতি লোয়াকে কেউ মারেনি। সবাই এমনি এমনিই মারা গিয়েছেন!’’

২০০৫-এর নভেম্বরে সোহরাবুদ্দিন শেখ খুন হওয়ার পর থেকেই এই মামলা হয়ে উঠেছিল দেশের অন্যতম হাইপ্রোফাইল মামলা। এর পরই ঘটতে থাকে একের পর এক খুন, প্রমাণ লোপাট, বিরূপ সাক্ষ্য, এমনকি খোদ বিচারপতির রহস্যজনক মৃত্যুর মতো ঘটনাও। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম জড়িয়েছিল গুজরাতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির বর্তমান সভাপতি অমিত শাহ-এর নাম। পাশাপাশি রাজস্থান এবং গুজরাত পুলিশের একাধিক শীর্ষকর্তার নামও জড়িয়ে গিয়েছিল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে।

সোহরাবুদ্দিন শেখ খুন হওয়ার কয়েক দিন পরেই ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী কওসর বাঈকে। প্রায় এক বছর পর পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই খুন হয়ে যান তাঁর বন্ধু এবং সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতি। নাটকের এখানেই শেষ নয়। এই মামলার রায় দেওয়ার ঠিক আগে ২০১৪-র ডিসেম্বরে রহস্যজনক ভাবে খুন হয়ে যান এই মামলার দায়িত্বে থাকা বিচারপতি লোয়া। ২১০ জন সাক্ষীর মধ্যে প্রথমে দেওয়া বয়ান বদলে ফেলেন ৯২ জনই। এর পরই মামলায় দায়িত্ব নিয়ে বিচারক এম বি গোসাভি অমিত শাহ, রাজস্থানের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাস দমন বাহিনীর তদানীন্তন ডিআইজি ডি জি বানজারা-সহ ১৬ জনকে রেহাই দেন। বাকি ২২ অভিযুক্তকে শুক্রবার বেকসুর খালাস করে দেন মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক এস জে শর্মা।

আরও পড়ুন: জল্পনার শেষ, আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়ার কথা জানালেন অভিনেতা কমল হাসন

এতগুলি মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও সবাই বেকসুর খালাস পাওয়ার ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। টুইটারে তাঁর মন্তব্য, ‘‘হরেন পাণ্ড্য, বিচারপতি লোয়া, তুলসীরাম প্রজাপতি, প্রকাশ থম্বড়ে, শ্রীকান্ত খান্ডালকর, কওসর বাঈ, সোহরাবুদ্দিন শেখ... এঁদের কেউ মারেনি। এঁরা এমনিই এমনিই মারা গিয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: ৮৪-র শিখ দাঙ্গায় কারাদণ্ডের শাস্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ সজ্জন

শুক্রবার রায় দেওয়ার সময় নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন বিচারক এস জে শর্মা নিজেও। কখনও তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘তিন প্রধান সাক্ষী বয়ান বদলে ফেলেছেন। সরকারি আইনজীবীরা অভিযোগ প্রমাণ করতে যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সাক্ষীরা কথা না-বললে তাঁরা কী করবেন!’’ কখনও আবার বলেন, ‘‘সোহরাবুদ্দিন বুলেট-বিদ্ধ হয়েই মারা গিয়েছেন, ময়না-তদন্তে তা প্রমাণিত। কিন্তু অভিযুক্তদের মধ্যেই কেউ যে তাঁকে গুলি করেছিলেন, এর কোনও প্রমাণ নেই। পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থাকলেও যথেষ্ট প্রমাণ নেই।’’ সব শেষে নিহতদের পরিবারের কাছে কার্যত ‘ক্ষমা’ চেয়ে নিয়ে বিচারক শর্মা বলেন, ‘‘আমার চাকরি জীবনের এটাই শেষ রায়। আমি তাই নিহতদের পরিবারের কাছে সত্যিই দুঃখপ্রকাশ করছি। কিন্তু যে সাক্ষী ও প্রমাণ পেশ করা হয়েছে, খুন ও ষড়যন্ত্র প্রমাণের পক্ষে তা যথেষ্ট নয়।’’

আরও পড়ুন: প্রমাণের অভাব, ‘অসহায়’ বিচারক বেকসুর খালাস করলেন ২২ অভিযুক্তকেই!

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sohrabuddin Fake Encounter CBI Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE