করোনার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছ একটি স্কুল। ছবি: পিটিআই।
শিক্ষা ব্যবস্থায় কোভিডের প্রভাব ভয়াবহ আকার নিয়েছে। শুধু পঠনপাঠনেই নয়, বেসরকারি স্কুলগুলো চালানোর ক্ষেত্রেও কোভিড এক বড় প্রতিবন্ধক। ফলে দেশের প্রায় ১ হাজার বেসরকারি স্কুল বিক্রি হওয়ার পথে! স্কুলগুলিকে বাঁচাতে গেলে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় ভয়াবহ এই ছবি উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ‘সেরেস্ট্রা ভেনচারস’ নামে একটি সংস্থা।
সেরেস্ট্রা-র সমীক্ষা অনুযায়ী, অতিমারির জেরে দেশের সমস্ত স্কুল এখন বন্ধ। স্কুলের খরচ চালিয়ে শিক্ষকদের বেতন মেটাতে অনেক বেসরকারি স্কুলই হিমশিম খাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অভিভাবকরাও ঠিক মতো স্কুলের ফি দিতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে স্কুলগুলিকে বাঁচাতে মালিকদের অনেককেই অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে। তাই অনেকেই স্কুলের মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ফলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়েও একটা ঘোরতর সংশয় তৈরি হয়েছে।
ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৮০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি বিনিয়োগে চলে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক ফি ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা। সেরেস্ট্রা-র তরফে বিশাল গোয়েল বলেন, “করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অনেক রাজ্য সরকার বেসরকারি স্কুলগুলোর ফি বেঁধে দিয়েছে। ফলে সেখানেও একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।” তাঁর কথায়, “স্কুলের সামগ্রিক খরচ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন মেটাতে একটা বিশাল অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বেতন দিতে না পেরে কোনও কোনও স্কুল শিক্ষক ছাঁটাই করছে, কোথাও আবার শিক্ষকদের বেতন কেটে নেওয়া হচ্ছে।” তাই এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে অনেক স্কুল মালিক বিক্রির পথে হাঁটছেন বলে দাবি গোয়েলের। সেরেস্ট্রা-র সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, কর্নাটক-মহারাষ্ট্র-তেলঙ্গানায় এমন ২০-২৫টি স্কুল রয়েছে যেগুলো মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ক্রেতা খুঁজছেন।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ থেকে এনআইএ-র হাতে পাকড়াও ৬ আল কায়দা জঙ্গি
দেশে যে হারে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তাতে স্কুলগুলো কবে খুলবে তা স্পষ্ট নয়। তবে এই পরিস্থিতি শুধরাবে বলে আশাবাদী একটি আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি স্কুলের কর্ণধার প্রজোধ রাজন। তিনি বলেন, “বেসরকারি স্কুল চালাচ্ছেন এমন অনেকেই কোনও না কোনও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। সেই ব্যবসার টাকা আবার স্কুলে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু করোনার জেরে তাঁদের সেই সব ব্যবসাতেও প্রভাব পড়েছে। বাধ্য হয়ে তাই অনেকেই স্কুলগুলিতে আর বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy