Advertisement
E-Paper

মন্দির-মসজিদ নয়, বিতর্কিত জমিতে শিশুদের জন্য মাঠ চাইছে অযোধ্যা

লোকসভার ভোট যতই এগিয়ে আসছে, রাম-রাজনীতি উস্কে দিতে তৎপর হয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৫
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ, ১৯৯০।—ছবি পিটিআই

অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ, ১৯৯০।—ছবি পিটিআই

মন্দির কিংবা মসজিদ নয়। অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ চাইছেন স্থানীয়রা। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের অনেকেরই বক্তব্য, অযোধ্যা আর যেন রাজনীতিকদের খেলার মাঠ না হয়ে থাকে।

লোকসভার ভোট যতই এগিয়ে আসছে, রাম-রাজনীতি উস্কে দিতে তৎপর হয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। রাম মন্দির মামলা সুপ্রিম কোর্টে থাকলেও ধর্মীয় আস্থাকেই বড় করে দেখাতে তৎপর সঙ্ঘের একাংশ। দু’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও অযোধ্যায় গিয়ে রাম-রাজনীতিতে হাওয়া দিয়ে এসেছেন।

কিন্তু সরযূ নদীর তীরে এই পুরনো শহরের মানুষ এ সবে বিশেষ উৎসাহী নন। বরং তাঁরা কথা বলছেন একেবারে ভিন্ন সুরে। রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত এলাকার কিছুটা দূরেই থাকেন বিজয় সিংহ। পেশায় ডাক্তার। ৪৮ বছর বয়সি এই চিকিৎসক ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে সেখানে হাজির ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এখন বলছেন, ‘‘অযোধ্যার মানুষ বহু যুগ ধরে শান্তিতে বসবাস করে এসেছেন। কিন্তু সে দিন বাইরের অনেকে এসে মসজিদ ভেঙে দিল। দুর্ভাগ্যজনক সেই ঘটনা আজও অযোধ্যার মানুষের উপর ছাপ রেখে দিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: অচ্ছে দিন আসবে না, দাবি নকল মোদীর

অযোধ্যার অন্য অনেকের মতোই সিংহ নিজে একজন রামভক্ত। বিতর্কিত জমির পাশে গাছের তলায় টেবিল পেতে ভক্তদের চিকিৎসাও করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ওখানে রামমন্দির হলে ব্যক্তিগত ভাবে আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে সেই ঘটনা যদি সংঘাতের সৃষ্টি করে, তা হলে আমি রামমন্দির গড়ার পক্ষপাতী নই। বরং ওখানে খেলার মাঠ হোক, যেখানে সব ধর্মের শিশুরাই খেলতে পারবে।’’

অযোধ্যার আর এক বাসিন্দা বিবেক ত্রিপাঠীর গলাতেও একই সুর। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়ে থাকতেন ভোপালে। ৬ ডিসেম্বরের ঘটনায় হানাহানি ছড়িয়ে পড়েছিল সেই শহরেও। তিনি তখন স্কুলে।

আরও পড়ুন: সঙ্কট নেই মিউচুয়াল ফান্ডে, লগ্নিকারীদের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের

আচমকাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ক্লাস। কোনওক্রমে অলিগলি পেরিয়ে সে বাড়ি ফিরেছিল। সে দিনের ছাত্রটি আজ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ত্রিপাঠীর মন্তব্য, ‘‘মন্দির-মসজিদ নিয়ে লড়াইয়ের অর্থ বুঝি না। যে বিষয় সংঘাতের জন্ম দেয়, তাকে খুঁচিয়ে তুলব কেন? তাই ওই জমিতে খেলার মাঠ হোক। শিশুদের খেলার জন্য, রাজনীতিকদের জন্য নয়।’’

শহরের আর এক বাসিন্দা মহম্মদ আজিম বলেন, ‘‘এখানে হিন্দু আর মুসলিমরা সব সময়েই শান্তিতে বাস করেছে। তাঁরা এখনও শান্তি রাখতে পারবে।’’ আজিমের ক্ষোভ, ‘‘রাজনীতিক আর বাইরের লোকেরাই নিজেদের কর্মসূচি অনুযায়ী দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত বাধানোর চেষ্টা করছে রাজনীতিতে লাভের অঙ্ক কষতে।’’

৪৫ বছর বয়সি রাম লোচন একজন জ্যোতিষী। বিতর্কিত জমির পাশেই ভাগ্যগণনা করেন। বলেন, ‘‘মন্দির হলে হোক। কিন্তু বাচ্চাদের জন্য খেলার মাঠ হলে তো ভালই। রামলালা তো রামেরই শৈশবের রূপ।’’ বিতর্কিত জমিতে রামলালার অস্থায়ী মন্দির দর্শনে এসেছিলেন অন্ধ্রের বাসিন্দা অরবিন্দ ও বাসন্তী। এই প্রথম বার অযোধ্যায় এলেন তাঁরা। অরবিন্দ বলেন, ‘‘আমরা চাই এখানে রামমন্দির গড়ে উঠুক। এটা আস্থার প্রশ্ন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যা ফয়সালা দেবে, সেটাই সকলের মেনে চলা উচিত।’’

Ayodhya Ram Temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy