Advertisement
E-Paper

করো নয় মরো: যুদ্ধের মেজাজে শুরু প্রিয়ঙ্কার

দুপুর থেকে নেহরু ভবনের দোতলায় চলছে প্রিয়ঙ্কা-দিদির ক্লাস। গত কালই রোড-শো শেষে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বেরিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। বিশেষ বিমানে রাহুলদের দিল্লিতে নামিয়ে চলে যান জয়পুর।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৫
নিজস্বী: লখনউয়ে দলের মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্বী: লখনউয়ে দলের মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

দিদি একটা সেলফি?

চশমার উপর দিয়ে কঠোর চোখে উত্তর এল, “না”। সঙ্গে যোগ হল, “সকলের সঙ্গে আমার ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এখন ‘করো ইয়া মরো’ মন্ত্র নিয়ে সবাই কাজে নেমে পড়ুন। সময় বেশি নেই।”

দুপুর থেকে নেহরু ভবনের দোতলায় চলছে প্রিয়ঙ্কা-দিদির ক্লাস। গত কালই রোড-শো শেষে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বেরিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। বিশেষ বিমানে রাহুলদের দিল্লিতে নামিয়ে চলে যান জয়পুর। স্বামী-শাশুড়ির সঙ্গে দেখা করতে। আজ লখনউ ফিরতে বেলা একটা হয়ে যায়। তার পর থেকেই শুরু ম্যারাথন বৈঠক। লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে কর্মীদের সঙ্গে। বৈঠক শেষ হতে গড়িয়ে যায় মাঝরাত। তাঁর জন্য আনা হয়েছিল লখনউয়ের বিখ্যাত টুন্ডে কাবাব। মঙ্গলবার বলে খাননি প্রিয়ঙ্কা।

আর প্রতিটি বৈঠকেই পড়া ধরছেন দিদিমণির মতো। বুথ কমিটি কটা হয়েছে? আপনার অধীনে ক’জন লোক? তাঁদের সকলের নাম বলতে পারবেন? বলুন তো! থতমত খেয়ে যাঁরা বলতে পারছেন, প্রিয়ঙ্কা সঙ্গে সঙ্গে নোট করে নিচ্ছেন সব। ভাবটা এমন, মিলিয়ে দেখব। আর তাতেই অনেকে বুঝে যাচ্ছেন, এই বুঝি ধরা পড়ে গেলাম। আর ‘হাওয়াবাজি’ চলবে না। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে উন্নাওয়ের বীর প্রতাপ সিংহ তো বলেই ফেললেন, “এ তো সাক্ষাৎ ইন্দিরা গাঁধী! প্রিয়ঙ্কার সামনে হাওয়াবাজি করে কংগ্রেসে আর কেউ টিকতে পারবে না।”

একটু বেশি কঠোর হয়ে গেলে নেতা-কর্মীদের ভ্যাবাচেকা খেতে দেখে মাঝেমধ্যে নরমও হচ্ছেন। হেসে বলে ফেলছেন, “ভাববেন না, আমি ক্লাস নিচ্ছি। আমি আসলে জানতে চাইছি।” শুধু প্রশ্নই নয়, প্রিয়ঙ্কা কী করতে চান, সেটিও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন। কর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সামনের লোকসভার ভোটের আগে সংগঠনকে ফের দাঁড় করাবেন। তবে এ নির্বাচনে খুব বেশি প্রত্যাশা রেখে লাভ নেই। কিন্তু সংগঠনের এই ভিতে ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গড়বে কংগ্রেস।

প্রিয়ঙ্কার সাফ নির্দেশ, লোকসভার আর দেড় মাস বাকি নেই। প্রত্যেককে বুথের ১৫-২০ জনকে সঙ্গে নিতে হবে। এলাকার অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের কংগ্রেসের সঙ্গে জুড়তে হবে। রাজ্য কমিটির মাথায় এত বেশি লোক দরকার নেই। তা আরও ছোট করা হবে। নেতা কম, কাজের লোক বেশি চাই। ১৮ থেকে ২৮-এর যুবকদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য পৃথক কর্মসূচি তিনি তৈরি করে দেবেন। আর সকলের আগে কংগ্রেসের যে কাজটি শোধরাতে হবে, সেটি হল গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব বন্ধ করা।

কিন্তু কংগ্রেস তো কংগ্রেসেই। নির্বাচনী কেন্দ্রের তালিকা ধরে ধরে প্রিয়ঙ্কা যখন কর্মীদের সঙ্গে দোতলায় দেখা করছেন, এক তলায় হুলস্থূল। কর্মীদের ক্ষোভ, উপরে যাঁরা গেলেন, তাঁদের কেউ বিজেপির চর, কেউ এসপি-বিএসপির। দফায় দফায় নীচে নেমে আসতে হল প্রদেশ সভাপতি রাজ বব্বরকে। নতুন জমানায় যাঁর নিজের পদটি থাকবে কি না জানেন না। এসে শান্ত করলেন কর্মীদের, “দেখুন আমিও বৈঠকে নেই, বাইরে বসে আছি। কেন্দ্রের জেলা, শহরের সভাপতি, সাংসদ, হেরে যাওয়া প্রার্থীদেরই ডাকা হচ্ছে। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সকলের কথা শুনবেন। রাহুল গাঁধী এমন ব্যবস্থাই করে গিয়েছেন। আগে কখনও গাঁধী পরিবারের কেউ এ ভাবে দেখা করেছেন?”

দিনভর কড়া দিদিমণি রাতে অবশ্য দলের মহিলা নেত্রীদের আবদারে সেলফি তুলতে রাজি হন। মাত্র একটি।

Priyanka Gandhi Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy