Advertisement
E-Paper

পাকিস্তান এ বার সতর্ক, বদলার পথ খুঁজছে দিল্লি

পুলওয়ামার ঘটনার পরে প্রশ্ন এখন এটাই। প্রত্যাঘাতের দাবি উঠেছে দেশের নানা প্রান্তে। কবে হবে ‘উরি-টু’? 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৯
হামলার প্রতিবাদে জম্মুর রাস্তায় বিক্ষোভ। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।

হামলার প্রতিবাদে জম্মুর রাস্তায় বিক্ষোভ। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।

অতঃপর?

পুলওয়ামার ঘটনার পরে প্রশ্ন এখন এটাই। প্রত্যাঘাতের দাবি উঠেছে দেশের নানা প্রান্তে। কবে হবে ‘উরি-টু’?

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরি সেনা ছাউনিতে হামলা চালায় জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা। মারা যান ১৮ জন জওয়ান। সেই ঘটনার দশ দিনের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে পাল্টা হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। সার্জিকাল স্ট্রাইক করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা একাধিক জঙ্গি শিবির। সেই দাবি উঠেছে আবার। লোকসভার আগে দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছে সঙ্ঘ পরিবারও। প্রত্যাঘাতের দাবি তুলেছেন একাধিক বিজেপি সাংসদও। সব মিলিয়ে ক্ষেত্রে প্রস্তুত হয়েছে পাল্টা আক্রমণের। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সুরক্ষা কমিটির বৈঠকের পর পাকিস্তানকে এক ঘরে করতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জানিয়ে দিয়েছেন, কড়ায় গন্ডায় হিসেব বুঝে নেওয়া হবে। হত্যাকারীদের মাথারা ছাড় পাবে না।

প্রশ্ন হচ্ছে, আবার কি সার্জিকাল স্ট্রাইক করবে ভারত?

আরও পড়ুন: ‘বহুত বড়ি গলতি’, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষার হুঁশিয়ারি মোদীর, সেনাবাহিনীকে ‘স্বাধীনতা’

প্রথম বার যখন করা হয়েছিল, তখন তা ধারণার অতীত ছিল পাক সেনা তথা ইসলামাবাদের কাছে। কিন্তু এ বারে সীমান্তে পাকিস্তান যে সতর্ক থাকবে, তা স্পষ্ট। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পুলওয়ামা হামলার অন্তত সাত দিন আগে থেকেই ভারত-পাক সীমান্তের কাঠুয়া ও পুঞ্চ সেক্টরে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে সীমান্তে লাল সতর্কতা জারি করা ছাড়াও ওই এলাকায় মোতায়েন সমস্ত পাক সেনার ছুটিও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: উরি-পঠানকোট-ডোকলাম-মায়ানমারের পরে পুলওয়ামা, ফের প্রশ্নের মুখে ডোভাল নীতি

পাক সেনার এই প্রস্তুতিকে কাল দুপুর অবধি রুটিন সেনা মোতায়েন বলেই মনে করছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। কিন্তু পুলওয়ামার পরে স্বরাষ্ট্রকর্তারা বুঝতে পারছেন, ওই জঙ্গি হামলার বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য ছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে। আর তাই ভারতের প্রত্যাঘাতের কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে বারামুলা ও গুরেজ সেক্টরের লঞ্চপ্যাডগুলিতে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে বলেও জেনেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ভোটের আগে কাশ্মীর-সহ দেশের নানা প্রান্তে অশান্তি সৃষ্টি করতেই ওই জঙ্গিদের ভারতে ঢোকাতে সক্রিয় হয়েছে পাক সেনা। এদের মধ্যে বেশ কিছু জঙ্গি আদিল আহমেদের মতো আত্মঘাতী বলে আশঙ্কা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

যে ভাবে সার্জিকাল স্ট্রাইকের জন্য গোটা দেশে দাবি উঠছে, তাতে মোদীর পক্ষে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু পাক বাহিনী সতর্ক থাকায় তাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। নতুন করে সেনা হারানোর ঝুঁকি মোদী নেবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সার্জিকাল স্ট্রাইক না করলে ড্রোন বা অ্যানম্যানড এরিয়েল ভেহিকলের মাধ্যমে হামলা চালাতে পারে ভারত। অথবা কামান দেগে পাক সীমান্তে থাকা শিবিরগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়ার রণকৌশল নিতে পারে ভারত। কিন্তু পাল্টা প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা থাকছেই। যাতে প্রাণ হারাবেন সাধারণ মানুষই।

আরও একটি বিকল্প নিয়েও কথা হচ্ছে নানা স্তরে। তা হল, সীমিত যুদ্ধ। সরাসরি সীমান্ত পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে শুধু সীমান্তের কাছাকাছি জঙ্গিঘাঁটিগুলি নয়, ভিতরেও যে সমস্ত জঙ্গিঘাঁটি রয়েছে সেগুলিকে ধ্বংস করা। তাতে বাধা এলে পাল্টা মার দেওয়া হবে— এমন ভাবনাও রয়েছে। কিন্তু এতে বেশ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। তা ছাড়া, চিন যে ভাবে পাকিস্তানের পাশে রয়েছে, তাতে এমন করা সম্ভব কি না, সে ভাবনাও রয়েছে মোদী সরকারের অন্দরে। এই বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে।

যতই সেনাকে পাল্টা আক্রমণের স্বার্থে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলুন না কেন, দ্বিতীয় বার প্রত্যাঘাতের আগে তাই সব মিলিয়ে বেশ অস্বস্তির মুখে মোদী। কোন পথে তিনি এখন এগোন, সেটাই দেখার।

Pulwama Attack পুলওয়ামা পুলওয়ামা হামলা Pakistan India Terrorism Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy