মন্দসৌরে স্বজনহারা কৃষকের পাশে রাহুল গাঁধী।
মাধুরী দীক্ষিতকে মুম্বইয়ে চার বছরের ‘সাফল্য’ বোঝাচ্ছেন অমিত শাহ। ঠিক একই সময় রাহুল গাঁধীকে জড়িয়ে হাউ-হাউ করে কাঁদছেন স্বজনহারা কৃষক।
নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধছেন রাহুল। জনতা বলছে, ‘‘ফেকু-ফেকু-ফেকু।’’
রাহুল বলছেন, ‘‘কৃষক সমস্যা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর কাছে গিয়েছি। তাঁর মজাদার জবাব শুনবেন? তিনি চুপ। জানেনই না কৃষি-সমস্যা। হৃদয়ে কৃষক নেই।’’ জনতা বলছে, ‘‘মোদী অশিক্ষিত।’’ রাহুল বলছেন, ‘‘না না, তিনি শিক্ষিত। তবে আরএসএসের শিক্ষায়। রাগ, ঘৃণায় ভর্তি।’’ জনতার জবাব, ‘‘রাহুল গাঁধী জিন্দাবাদ।’’
রাহুল: ‘‘মেহুল চোক্সী, নীরব মোদীকে মোদী কী নামে ডাকেন জানেন? মেহুল ভাই, নীরব ভাই। হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে পালাতে দেন, অথচ কৃষি ঋণ মাফ করেন না। কংগ্রেস দশ দিনে করবে।’’
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের চৌকাঠে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন চিদম্বরম
লক্ষ জনতা: ‘‘রাহুল-রাহুল।’’
বুধবার অমিত শাহ জনসম্পর্ক স্থাপনে জুহুতে মাধুরীর বাড়িতে। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস ও বিজেপির কয়েক জন নেতা। ছবি: পিটিআই
জনতার সঙ্গে এমন গল্প ফেঁদে ঝাঁঝালো সভা করতেন মোদী। পরের লোকসভা ভোটের এক বছর আগে সে ছবি রাহুলের সভায়। এক বছর আগে আজকের দিনেই মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ৬ কৃষক। কৃষক আন্দোলনের সেই আঁতুড়ঘরে দাঁড়িয়েই রাহুল সাফ জানালেন, মোদীর মতো বছরে ২ কোটি রোজগার, অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকার মিথ্যা শুনতে হলে অন্য কোথাও যান। কিন্তু কংগ্রেস এলে দশ দিনে ঋণ মাফ নিশ্চিত। খেতের পাশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ইউনিট বসবে। সব জেলায় ‘ফুড চেন’ হবে। কৃষক সন্তানরাই রোজগার পাবেন। চিনের সঙ্গে টেক্কা হবে। ৫-৭ বছরে মোবাইল ‘মেড ইন মন্দসৌর’ হবে।
রাহুলের সভা বানচাল করতে কম কসরত করেননি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। নিহত কৃষক পরিবারকে আটকানো থেকে সভায় বিধিনিষেধ আরোপ, হার্দিক পটেলকে ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে না দেওয়া। শেষরক্ষা হয়নি।
বছর শেষেই মধ্যপ্রদেশে ভোট। কমল নাথ-জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে একজোট করে ভোট প্রচারও শুরু করলেন রাহুল। নেতাদের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললেন, ‘‘আপনাদের কাজ ঘরে-ঘরে যাওয়া। জনতার সঙ্গে যাঁরা থাকবেন, সরকারে তাঁদেরই জায়গা হবে। আমার কাছে প্রথম জনতা, পরে কর্মী, শেষে নেতা।’’ সভার আগে পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষক পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বললেন, ‘‘সরকারে এলে দশ দিনে সুবিচার পাবেন।’’ এক মায়ের কথা শোনালেন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর ১ কোটি টাকা ফিরিয়ে বলেছিলেন, ২ কোটি দিচ্ছি ছেলে ফেরত দিন।
রাহুলকে সামলাতে নিবন্ধ লিখতে হল অসুস্থ অরুণ জেটলিকে। প্রশ্ন তুললেন, ‘‘কতটা জানেন রাহুল? শিল্পপতির এক পয়সা মাফ হয়নি। এনপিএ, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সব ইউপিএ জমানার। চার বছরে ১২০টি মোবাইল সংস্থা ভারতে এসেছে। রোজগার, পরিকাঠামো বেড়েছে।’’ কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার পাল্টা নিবন্ধ, ‘‘কতটা জানেন অরুণ জেটলি? মন্ত্রক ছাড়া মন্ত্রী জেটলির জ্ঞানের ভাঁড়ার শূন্য। তবু কৃষি দুর্দশা, এনপিএ নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy