Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Saree

ধর্ষণ থামাতে তবে কি এমন পোশাক চাই? পুরুষতন্ত্রকে ব্যঙ্গ করে ওয়েবসাইটে ‘সংস্কারী শাড়ি’

আপনার পোশাক কি ‘সমাজের চোখে’ খাটো? শরীরের কিছু অংশ দেখা যায় কি ওই পোশাক পরলে? তাহলে ধর্ষণ হবে না কেন? পোশাকের কারণেই ধর্ষণ হয়। ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে এ জাতীয় মন্তব্য চোখে পড়তে বাধ্য।

সুপার সংস্কারী শাড়ি! নিগৃহীতার পাশে দাঁড়াতে এমনই বক্রোক্তি করা হয়েছে ওয়েবসাইটে।

সুপার সংস্কারী শাড়ি! নিগৃহীতার পাশে দাঁড়াতে এমনই বক্রোক্তি করা হয়েছে ওয়েবসাইটে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ১৬:৩৯
Share: Save:

আপনার পোশাক কি ‘সমাজের চোখে’ খাটো? শরীরের কিছু অংশ দেখা যায় কি ওই পোশাক পরলে? তাহলে ধর্ষণ হবে না কেন? পোশাকের কারণেই ধর্ষণ হয়। ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে এ জাতীয় মন্তব্য চোখে পড়তে বাধ্য।

তার চেয়ে বরং এমন পোশাক বেছে নেওয়া উচিত, যাতে এমন কিছু না হয়! শাড়ি পরতে হবে। সনাতন ভারতীয় পোশাক। তবে শুধুমাত্র চোখটুকু দেখা যাবে। গোটা হাত ও মুখ-গলার অংশও আবৃত শাড়িতেই, তাহলেই আর কোনও শারীরিক নির্যাতন ঘটবে না। এগুলোই তো সংস্কারী শাড়ি।

অবাক হচ্ছেন? ‘সংস্কারী’ নয় বলেই মেয়েটির সঙ্গে ওরকম ঘটনা ঘটেছে। এ কথাও নতুন কিছু নয়। তাই ‘সুপার সংস্কারী শাড়ি’-র ভাবনা মাথায় আসে বস্টনের তনভি ট্যান্ডনের। আসলে নিগৃহীতাকে সহজেই দোষী তকমা দেওয়া সমাজের বক্রোক্তির যোগ্য জবাব দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই তাঁরা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন।

আরও পড়ুন: যুদ্ধজাহাজে কানাডার নাগরিককে নিয়ে কী করছিলেন মোদী, তোপ কংগ্রেস নেত্রী দিব্যার

ই কমার্স সাইটে বিভিন্ন বাঁকা মন্তব্যকে ঠাট্টার ছলেই আঘাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই রেস্তরাঁয় ‘ছোট পোশাক’ পরে বন্ধুদের সঙ্গে খেতে গিয়েছিলেন এক তরুণী। আর সেই জন্য সেখানে উপস্থিত সাত জন পুরুষকে ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করার কথা বলে বিতর্কে জড়ান এক মাঝবয়সি মহিলা। তিনি এবং তাঁর মতো মানসিকতার ব্যক্তিদের আসলে যোগ্য জবাব দিতে চেয়েছেন কপিরাইটার তনভি, শিল্প নির্দেশক মিকলাস মানেকে, সৃজনশীল সহকারী পরিচালক জেমস বার্কলে।

আরও পড়ুন: স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা, লন্ডনে ছুরি হামলায় নিহত ভারতীয়, সুষমার সাহায্য প্রার্থনা পরিবারের​

ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, সুপার সংস্কারী শাড়ি আসলে অ্যান্টি রেপ প্রযুক্তিতে তৈরি, শাড়িগুলি ধর্ষণরোধী। কারণ কিছুই যখন দেখা যাচ্ছে না, তাহলে তো ধর্ষণের প্রশ্ন নেই, এমনই একটি ব্যঙ্গোক্তি ছুড়ে দেওয়া হয়েছে সাইটে। আসলে ব্যবসায়িক কোনও উদ্দেশ্য নয়, প্রতি মুহূর্তে মেয়েদের চলাফেরা, পোশাক সবকিছু ঠিক করে দেওয়া, ‘সবক’ শেখানো সমাজের ভাবনায় নাড়া দেওয়াই এর উদ্দেশ্য, বলেন তনভি।

এ জাতীয় শাড়ি কিনলে এটি দানের কাজেই ব্যবহার করা হবে, কারণ ভারতীয় নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থার সঙ্গে সংযুক্তিকরণ রয়েছে সাইটটির।

লাউঞ্জওয়ের শাড়ির দাম রাখা হয়েছে ৫০ টাকা, উচ্চাকাঙ্ক্ষী নারী কালেকশন, ‘সংস্কারী’ বিচওয়ের কালেকশন ২০০ টাকা, আচ্ছি বাচ্চি অর্থাৎ ছোট শিশুদের জন্য শাড়ির দাম রাখা হয়েছে ১০০০ টাকা, এর মাধ্যমে সমাজকে একটা মারাত্মক বার্তা দিতে চেয়েছেন তাঁরা। কারণ প্রতি ১৫ মিনিটে একজন শিশু অত্যাচারিত হয় এ দেশে, জানান তনভি। শাড়ির নামও বেছে নিয়েছেন সেই মতোই। আসলে ওই ওয়েবসাইটের মূল বিষয় যদি মানুষকে খানিকটা নাড়া দেয়, তবেই উদ্দেশ্য সফল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE