Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

তেলঙ্গানা এনকাউন্টারে নিহত অভিযুক্তদের দেহ সংরক্ষণ করতে হবে, নির্দেশ হাইকোর্টের

শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশ, ওই এনকাউন্টারে নিহত চার অভিযুক্তের দেহ আগামী সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।

এনকাউন্টারের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় গোটা দেশে। ছবি: পিটিআই।

এনকাউন্টারের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় গোটা দেশে। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:১১
Share: Save:

তেলঙ্গানা এনকাউন্টার কাণ্ডে নিহত অভিযুক্তদের দেহ তদন্তের স্বার্থে সংরক্ষণের নির্দেশ দিল আদালত। আদালত ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিংও করে রাখতে বলেছে। একটি জনস্বার্থ মামলার আবেদনের শুনানিতে ওই রায় দিল তেলঙ্গানা হাইকোর্ট।

শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশ, ওই এনকাউন্টারে নিহত চার অভিযুক্তের দেহ আগামী সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। হাইকোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চ জানিয়েছে, দেহ সংরক্ষণ করা ছাড়াও শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং জমা দিতে হবে পুলিশকে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই মামলার শুনানি শুরু হবে।

গত ২৭ নভেম্বর তেলঙ্গানায় এক তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনের পর থেকেই ওই ঘটনা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। এই আবহে গত কাল ভোরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশবুলু (২০) নামে চার অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করতেই শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ তাদের শাদনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ভোর পৌনে ৬টা নাগাদ পুলিশের রিভলভার ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে দুই অভিযুক্ত। বাকিরাও পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। সে সময়ই পুলিশ তাদের গুলি করে। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় চার অভিযুক্ত। ওই কাণ্ডে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা। যদিও সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনারের দাবি, আত্মরক্ষার্থেই অভিযুক্তদের গুলি করা হয়। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আইন তার কর্তব্য পালন করেছে।’’

আরও পড়ুন: ২ বছরে এনকাউন্টারে খতম ১০৩ ‘অপরাধী’, মায়াবতীর আক্রমণের জবাবে বিস্ফোরক তথ্য যোগীর পুলিশের

তবে ওই এনকাউন্টারের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে ফের তোলপাড় শুরু হয় গোটা দেশে। রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক, অভিনেতা— সমাজের বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, প্রায় সকলের কাছেই চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে এটি। একাংশের মতে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সঠিক কাজ করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, একে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ আখ্যা দেন অনেকে। বাহবা ও সমালোচনা— দুই-ই জোটে তেলঙ্গানা পুলিশের। এই আবহে অভিযুক্তদের দেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন না করে তা সংরক্ষণের নির্দেশ দেয় আদালত।

আরও পড়ুন: উন্নাও গেলেন প্রিয়ঙ্কা, ধর্নায় অখিলেশ, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারের ঘোষণা যোগীর

পুলিশ সূত্রে খবর, গত কাল রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর পর রাত ১০টার মধ্যেই অভিযুক্তদের দেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে গত কাল ১৫ জন মহিলা-সহ মানবাধিকার কর্মীদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে তা নিয়ে মামলা শুরু হয়। পুলিশি এনকাউন্টারের আইনি বৈধতা নিয়েই ওই আবেদনে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। জরুরি ভিত্তিতে এক শুনানিতে অভিযুক্তদের শেষকৃত্য স্থগিত রেখে দেহ সংরক্ষণের নির্দেশ দেয় আদালত।

প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলের যায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের দেহ রাখা আছে যে হাসপাতালে, সেই মাহবুবনগর সরকারি হাসপাতালেও গিয়েছেন কমিশনের সদস্যদের। একটি বিবৃতিতে কমিশন বলেছে, ‘গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ সেই সঙ্গে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ঘটনাস্থলে একটি তদন্তকারী দল পাঠানোরও দাবি করেছে কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE