গিরিরাজ সিংহ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ফের তীব্র আক্রমণে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জঙ-উনের সঙ্গে তুলনা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। পশ্চিমবঙ্গে কোনও গণতন্ত্র নেই বলে গিরিরাজ এ দিন মন্তব্য করেছেন। তৃণমূলের তরফ থেকে এখনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
বিজেপি প্রস্তাবিত ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ আটকে যাওয়ার প্রেক্ষিতেই বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন গিরিরাজ সিংহ। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে গিরিরাজ এ দিন বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ হল দেশের একমাত্র রাজ্য, যেখানে গণতন্ত্রের কোনও স্থান নেই।’’ এতেই থামেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বাংলায় যে ভূমিকা পালন করছেন, তা উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জঙ-উনের মতো। কিমের মতোই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব কণ্ঠস্বরকে তিনি শেষ করে দিচ্ছেন।’’
‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র অনুমতি চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনকে অক্টোবরে চিঠি দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও অনুমতি না মেলায় বিজেপি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়েছিল। কিন্তু পরে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যার সমাধান করতে। বৈঠক হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তার পরে ফের চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, যাত্রার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: এবার বিচারব্যবস্থায় সংরক্ষণ! জোর সওয়াল কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর
রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই চিঠি পাওয়ার পরে বিজেপি ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সিঙ্গল বেঞ্চ বিজেপির পক্ষে রায় দেয় অর্থাৎ যাত্রার অনুমতি দিয়ে দেয়। কিন্তু সেই রায়কে রাজ্য সরকার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ফের যাত্রা স্থগিত করে দেন এবং সিঙ্গল বেঞ্চকে নির্দেশ দেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে রায় পুনর্বিবেচনা করতে।
এই দীর্ঘ টানাপড়েনের জেরে বিজেপির প্রস্তাবিত যাত্রা ইতিমধ্যেই অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে যা শুরু হওয়ার কথা ছিল, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়ার আশাও ক্ষীণ।
আরও পড়ুন: খনি শ্রমিকরা জলমগ্ন, প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত ছবি তোলায়, মোদীকে তোপ রাহুলের
বিষয়টি এখন আর কলকাতায় বা বাংলায় সীমাবদ্ধ নেই। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাত্রা বার করাকে এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। অমিত শাহ-সহ বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ইতিমধ্যেই এই যাত্রা সংক্রান্ত টানাপড়েন নিয়ে একাধিক বার দিল্লি থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে বিজেপি এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। ২ জানুয়ারির পরে যে কোনও দিন মামলাটির শুনানি হতে পারে। কিন্তু আদালতের লড়াইয়ের বাইরেও যে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে স্নায়ুর লড়াই তুঙ্গে পৌঁছচ্ছে প্রস্তাবিত যাত্রাকে ঘিরে, তা স্পষ্ট।
বুধবার গিরিরাজ সিংহের মন্তব্যে আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে উত্তাপটা। গিরিরাজের কথায়,‘‘আমাদের কেউ ঠেকাতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্টে আমরা জিতব।’’
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy