Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেলে জেলা কমিটি, যোগী-রোষে বামেরা

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ দিবসের ডাক দিয়ে উত্তরপ্রদেশে এখন রাজরোষের মুখে বামেরা।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

জেলা কমিটির বৈঠক আপাতত বসতে পারে জেলে! কারণ, সিপিএমের আস্ত বারাণসী জেলা কমিটিকে গারদে পুরে ফেলেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার!

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ দিবসের ডাক দিয়ে উত্তরপ্রদেশে এখন রাজরোষের মুখে বামেরা। গোটা রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে ৬৯ জন বাম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁরা এখনও বাইরে আছেন, সেই সব নেতাদের দফতরে বা বাড়িতে পুলিশ-প্রশাসনের নোটিস যাচ্ছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, দেশের আইনের বিরুদ্ধে পথে নামার ডাক দেওয়ায় কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?

উত্তরপ্রদেশে ভোটের রাজনীতিতে বামেরা বহু দিনই উল্লেখযোগ্য শক্তি নয়। কিন্তু হিন্দি বলয়ের হৃৎপিণ্ডে সীমিত সংগঠন নিয়ে সেই বামেরাই ছোট ছোট প্রচারপত্র ছাপিয়ে মহল্লায় গিয়ে গিয়ে দাওয়ায়-খাটিয়ায় বসে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জনমত তৈরির চেষ্টা করছে। এমন উদ্যোগে স্বভাবতই কূপিত যোগী-রাজ। তারই মধ্যে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহতদের বাড়িতে হাজির হচ্ছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সুভাষিণী আলি ও তাঁর সতীর্থেরা। সুভাষিণীর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশ সরকার কারও কোনও কথা শুনতেই রাজি নয়। প্রতিবাদের ডাক দেওয়ায় আমাদের কর্মীদের মাসুল দিতে হচ্ছে এবং তার মধ্যেই আমরা লড়াই করছি।’’

আরও পড়ুন: ফুটবল খেললেও বিরোধীরা বলবেন রাজনীতি করছি, সেনাপ্রধানের হয়ে ব্যাট ধরলেন ভি কে সিংহ

রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে যে রিপোর্ট দলের পলিটব্যুরোকে পাঠিয়েছেন সিপিএমের উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সম্পাদক হীরালাল যাদব, সেখানেই প্রশাসনের ‘দমন-পীড়নে’র ছবি স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। বাম দলগুলি সম্মিলিত ভাবে যেখানে যেখানে প্রতিবাদের কর্মসূচি নিয়েছে, সেখানেই পুলিশ গিয়ে খবরদারি করছে। ধরপাকড়ের পরে জামিনের আবেদন করার সুযোগও ঠিকমতো মিলছে না বলে বাম নেতাদের অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, অসম, ত্রিপুরা, দিল্লি-সহ নানা রাজ্যে প্রতিবাদের উপরে প্রশাসনিক ‘পীড়নে’র পাল্টা প্রতিবাদে আগামী ১ থেকে ৭ জানুয়ারি সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন ফের পথে নামার ডাক দিয়েছে।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ‘‘ব্রিটিশদের চাপানো নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টি লড়াই করে এসেছে। এখনও জনতার পাশে থেকে লড়াই চলবে।’’ বাম নেতাদের কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন দু’দশক আগে সিপিআই নেতা ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের মন্তব্য— দাবি আদায় বা প্রতিবাদের জন্য হিন্দি বলয়েও সকলে জড়ো হন লাল ঝান্ডার নীচে। কিন্তু ভোট দেওয়ার সময়ে কাঁসিরাম, মুলায়মদের দলকে বেছে নেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Yogi Adityanath CPM Uttar Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE