বিশ্বের সবথেকে বড় মাছি। সিমন রবসনের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দারা বলেন ‘রাজা অফু’। অর্থাত্ মাছিদের রাজা। পতঙ্গ বিজ্ঞানীরা একে ‘ফ্লাইং বুলডগ’ বলে ডাকেন। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম মেগাচিলে প্লুটো। নাম যাই হোক না কেন, এটিই পৃথিবীর সবথেকে বড় মৌমাছি। এর আকার মানুষের বুড়ো আঙুলের সমান। সাধারণ মৌমাছির থেকে ১০ গুণ বড় সে।
ঊনবিংশ শতকে ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ ও প্রাণীবিজ্ঞানী আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস ইন্দোনেশিয়ার বাকান দ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর সময় প্রথম দেখা পেয়েছিলেন এই মৌমাছির। তার প্রায় ১২২ বছর পর ১৯৮১ সালে আমেরিকার বিজ্ঞানী অ্যাডাম মেসার দেখা পান এই দৈত্যাকার মৌমাছির। তিনি এই মৌমাছিকে ‘ফ্লাইং বুলডগ’ নামে অভিহিত করেন। আর ওয়ালেসের পর্যবেক্ষণকে সম্মান জানাতে এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ওয়ালেস জায়ান্ট বি’। এর প্রায় চার দশক পর একদল গবেষক ফের দেখা পেলেন দৈত্যাকার মৌমাছির। ইন্দোনেশিয়ার গহন অরণ্যে।
ফটোগ্রাফার ক্লে বোল্ট, পতঙ্গবিদ এলি ওয়াইম্যান, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিদ্যার অধ্যাপক সিমন রবসন ও পক্ষীবিজ্ঞানী গ্লেন চিলটন বেশ কিছুদিন ধরে গবেষণার কাজে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে। সেখানেই তাঁরা এই দৈত্যাকার মৌমাছির খোঁজ পেয়েছেন। এই দৈত্যাকার মৌমাছির খোঁজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত গবেষকরা বলেছেন, ‘‘এটা বিশাল, ডানার ঝাপটায় তীব্র আওয়াজ তৈরি হয়।’’
এলি ওয়াইম্যানের হাতে দৈত্যাকার মৌমাছির নমুনা। ছবি ক্লে বোল্টের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত।
তবে এই গোত্রের মৌমাছিদের লিঙ্গ ভেদে আকারের ভিন্নতা চোখে পড়ার মতো। সাধারণত পুরুষদের থেকে স্ত্রী মৌমাছিরা আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। স্ত্রী দৈত্যাকার মৌমাছির দৈর্ঘ যেখানে ৩৮ মিলিমিটার, সেখানে পুরুষদের দৈর্ঘ মাত্র ২৩ মিলিমিটার। পুরুষদের তুলনায় স্ত্রী ফ্লাইং বুলডগের চোয়ালের আকার বড় ও অনেক বেশি শক্ত। এদের ডানার আকার প্রায় ৬৪ মিলিমিটারের কাছাকাছি।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গভীর অরণ্যে গাছের ভিতর কোটরের মতো বাসা তৈরি করে বসবাস করে দৈত্যাকার ফ্লাইং বুলডগ। এদের মাথার সামনে থাকা এক জোড়া সাঁড়াশির মতো অংশ দিয়ে নিজেদের বাসা তৈরি করে এরা। মৌমাছিদের মতো ফুলের মধু খেলেও মধু তৈরি করতে অক্ষম জায়ান্ট বি।
NOPE... NOPE... NOPE...
— Tim Williams (@realtimwilliams) February 21, 2019
WORLD’S LARGEST BEE: Take a look at Wallace’s Giant Bee. It’s the biggest bee in the world and hasn’t been seen in over 30 years ... until now. pic.twitter.com/327I8lDvXA
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলি উইম্যান বলেছেন, ‘‘এই সন্ধান মৌমাছিদের উৎপত্তি ও বিবর্তন সম্পর্কিত গবেষণার কাজ এক ধাক্কায় অনেকটা এগিয়ে দেবে।’’ জীবনযুদ্ধ লড়াই সম্পর্কিত তথ্য জানতেও এই দৈত্যাকার মৌমাছি সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পূর্বপুরুষের হাঁড়ির খবর জানতে বিশেষ গবেষণা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy