Advertisement
E-Paper

বড়দিনের রূপকথা

দুয়োরানিকে আর কেউ ভুল বোঝে না। বেঙ্গমার ছানারাও দিব্যি উড়তে পারে ডানা মেলে। রাজকন্যের ঘুম ভেঙেছে অনেক দিন পর। আর বড়দিনে সেই সব গল্পের নকশিকাঁথা কেকের উপরে বুনছেন সায়ন্তনী মহাপাত্র দুয়োরানিকে আর কেউ ভুল বোঝে না। বেঙ্গমার ছানারাও দিব্যি উড়তে পারে ডানা মেলে। রাজকন্যের ঘুম ভেঙেছে অনেক দিন পর। আর বড়দিনে সেই সব গল্পের নকশিকাঁথা কেকের উপরে বুনছেন সায়ন্তনী মহাপাত্র।

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৬

এই একটা দিনের দিকেই তো তাকিয়ে থাকা। আগের রাতে সাদা মোজা ঝুলিয়ে রেখে অসীম প্রতীক্ষা। কখন সান্তা ক্লজ় এসে নিজের বড় ঝোলা থেকে মনের মতো উপহারটা রেখে যাবে মাথার কাছে! এই আশাতেই জিইয়ে রাখা সারা বছরের স্বপ্ন। সঙ্গে জড়িয়ে যায় কত শত প্রতিশ্রুতি— ‘পরীক্ষায় আরও ভাল ফল করব’, ‘এ বার ঠিক মায়ের সমস্ত কথা শুনব’, ‘বাধ্য মেয়ে হয়ে আর একটুও রাস্তার খাবার খাব না’, ‘বাবার কথা শুনে আর ফোনে গেম খেলব না’...

বড়দিন আসলে যত না উপহারের, তার চেয়ে অনেক বেশি স্বপ্নের, আশার। সমস্ত কিছু খারাপের ঊর্ধ্বে উঠে আর একটু ভাল হওয়ার আশা, সব পরাজয়কে হার মানিয়ে জিতে যাওয়ার আশা, গহীন আঁধারে দীপ জ্বালিয়ে আলোয় উত্তরণের আশা। আর এই আশার কথা বলে বাংলার রূপকথাও। সেই আশাতেই তো বুক বাঁধে ছোটরানি। ছিন্ন কাঁথায় শুয়েও ঘুঁটে কুড়ানি দাসী সন্তানস্নেহে বুদ্ধুর মাথায় রাখে চাঁদের আলো। একই আশায় আজও সোনার পালঙ্কে ঘুমিয়ে রাজকন্যে। কারণ সে জানে, সোনার কাঠি-রুপোর কাঠি হাতে ঠিক হাজির হবে রাজকুমার! কিংবা লালকমল-নীলকমলের হাতের রক্তে চোখ ফোটে বেঙ্গমা-বেঙ্গমীর ছানাদের। আবার শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে ময়ূরপঙ্ক্ষী কিন্তু ঘরেই ফেরে। পিছু পিছু আসে সুখের দিন, খুশির জোয়ার, ভালবাসার জয়গান।

বড়দিনের সঙ্গেই জড়িয়ে কেকের গন্ধ। তাই কেকের মূল বেস তৈরি করা হোক ফ্রুট কেক দিয়ে (রেসিপি ডান দিকে)। তার উপরে ফনড্যান্ট দিয়েই হাতে গড়ে রূপ দেওয়া যেতে পারে পুতুল-বাড়ি-দাসী-ময়ূরপঙ্ক্ষী। তা হলে একই সঙ্গে পাওয়া যাবে কেকের স্বাদ আর গল্পের ঘ্রাণ!

তাই এ বারের বড়দিনে সাবেক ক্রিসমাস ক্যারলের সঙ্গেই জুড়ে যাক আমাদের ফেলে আসা রূপকথার সোনালি দিন। রাংতা মোড়া উপহারের বাক্সে উপচে পড়ুক গল্পগাথা। কচি সবুজ পাইনগাছের ডাল থেকে ঝুলে থাক বেঙ্গমা-বেঙ্গমীর সুখের বাসা। যিশুর আনন্দের সঙ্গে মিলেমিশে যাক আমাদের দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ‘ঠাকুরমার ঝুলি’। আর বড়দিনের মোরব্বা-কাজু-কিশমিশ-বাদাম ভর্তি কেকের উপরেই থাক কিরণমালা কেশবতী কন্যে, বুদ্ধু-ভুতুমের গল্প। গল্পশেষে চুঁইয়ে পড়ুক ভালবাসা আর বড়দিনের খুশি।

মায়ের পুরনো ফ্রুট কেকের রেসিপি

উপকরণ: ময়দা এক ও ১/৪ কাপ, মাখন ১০০ গ্রাম, ডিম ২টি, বেকিং পাউডার ১ চা চামচ, চিনি ১ কাপ, দুধ ৩/৪ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ, ড্রাই ফ্রুট ‌(কাজু, কিশমিশ, চেরি, মোরব্বা) ১ কাপ

প্রণালী: ময়দা, বেকিং পাউডার চেলে নিন। একটি বাটিতে মাখন, ভ্যানিলা, চিনি ফেটিয়ে একটি একটি করে ডিম মেশান। তার মধ্যে ময়দার মিশ্রণ অল্প করে ঢেলে মেশান। মাঝে দুধ দিতে থাকুন। এক চামচ ময়দায় ড্রাই ফ্রুট মিশিয়ে সেটি দিন।
ব্যাটার গ্রিজ় করা কেক মোল্ডে ঢালুন। ১৭৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে প্রি-হিট করা আভেনে ৩৫-৪০ মিনিট ধরে বেক করে কেক নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে কেকের গায়ে বাটার ক্রিম লাগিয়ে ফ্রিজে রাখুন। পরে বার করে ফনড্যান্ট দিয়ে যেমন খুশি সাজান।

ফনড্যান্টের সময়ে খেয়াল রাখুন

•রং অবশ্যই জেল কালার হতে হবে। ওয়াটার বেসড রং ব্যবহার করলে ফনড্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে।
•যে জায়গার উপরে ফনড্যান্ট মাখছেন, সেটা শুকনো রাখার জন্য কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার করুন।
•ফনড্যান্ট তাড়াতাড়ি শুকোনোর জন্য টাইলোস পাউডার মেশান।
•গাম পেস্ট দিয়ে ফনড্যান্টের তৈরি পুতুলের হাত-পা জোড়া লাগান। গুলির আকারের ফনড্যান্ট ও এক চা চামচ জল মিশিয়ে নিলেই তৈরি গাম পেস্ট।
•কেকের উপরে ফনড্যান্ট দিয়ে ঢেকে দেওয়ার জন্য সেটি আধ সেমি মোটা করে বেলে নিন।

Food and Recipe Cake Christmas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy