Advertisement
E-Paper

ভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশনা

প্রথম অনুষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয় ‘নৃত্যছন্দ’। ধ্রুপদী নৃত্য ভরতনাট্যমের মাধ্যমে পরিকল্পিত এই নৃত্যগুলির মধ্যে ছিল ‘পুষ্পাঞ্জলি’, ‘স্বরপল্লবী’, ‘আল্লারিপু’, ‘শ্লোকম’, ‘হে মুরলী’, ‘তিল্লানা’ (চাঞ্চুরুটি) এবং ‘তিল্লানা’ (কুন্তলাভারালি)।

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
নৃত্যানুষ্ঠান

নৃত্যানুষ্ঠান

সম্প্রতি সিঁথি মেঘদূত ব্যালে ট্রুপের ২৮তম বার্ষিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হল রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে। নৃত্যগুরু শুভাশিস দত্ত পরিচালিত যে নির্বাচিত নৃত্যানুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিল আক্ষরিক অর্থেই বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

প্রথম অনুষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয় ‘নৃত্যছন্দ’। ধ্রুপদী নৃত্য ভরতনাট্যমের মাধ্যমে পরিকল্পিত এই নৃত্যগুলির মধ্যে ছিল ‘পুষ্পাঞ্জলি’, ‘স্বরপল্লবী’, ‘আল্লারিপু’, ‘শ্লোকম’, ‘হে মুরলী’, ‘তিল্লানা’ (চাঞ্চুরুটি) এবং ‘তিল্লানা’ (কুন্তলাভারালি)। এতে অংশগ্রহণ করেন সুশোভনা, সৃজা, অয়ন্তিকা, সঞ্চয়িতা, শৌর্য্যা, দেবিকা, মহাশ্বেতা, শ্রেয়সী, রিমিকা প্রমুখ সর্বমোট ৮৬ জন সুদক্ষ নৃত্যশিল্পী এবং এর নৃত্য পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন গুরু শুভাশিস দত্ত স্বয়ং।

অনুষ্ঠানটির পরে সংস্থার পক্ষ থেকে এ সন্ধের প্রধান অতিথিদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। প্রধান অতিথিদের আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডান্স গ্রুপ ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক চন্দ্রোদয় ঘোষ এবং নেহরু চিলড্রেন্স মিউজ়িয়ামের কর্ণধার সুদীপ শ্রীমল ও সুকল্যাণ ভট্টাচার্য। এই পর্বে প্রয়াত নৃত্যগুরু আদিত্য মিত্রের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন নৃত্যগুরু শুভাশিস দত্ত।

এর পরে ছিল সৃজনশীল নৃত্যানুষ্ঠান ‘আনন্দ’। এই নৃত্যগুলি মন ভরিয়ে দেয়। সবচেয়ে ভাল লেগেছে ‘মাই, তুই জলে না যাইয়ো’ নৃত্য পরিবেশনাটি। লোকনৃত্যের আঙ্গিকে এই নৃত্যটি পরিকল্পিত ছিল। কত্থক নৃত্যশৈলীতে ধৃত ‘বসন্ত’ও প্রশংসার দাবি রাখে। তাল-লয় সমন্বিত ‘এনে দে এনে দে ঝুমকা’ এবং ট্যাম্বোরিনের ব্যবহারে ‘এসো প্রিয় মন রাঙায়ে’ যথার্থই দৃষ্টিনন্দন মনে হয়েছে। এ ছাড়া ছোটদের নৃত্য প্রদর্শন ‘আমাদের খেপিয়ে বেড়ায়’ দর্শকদের প্রভূত আনন্দ দিয়েছে।

সৃজনশীল নৃত্যানুষ্ঠান ‘আনন্দ’-র শেষ পরিবেশনা ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত সহযোগে ‘ঝরঝর ঝরঝর ঝরে রঙের ঝরনা’। শাস্ত্রীয় নৃত্য এবং সৃজনশীল নৃত্যের সংমিশ্রণে এটি ছিল রীতিমত উল্লেখযোগ্য একটি পরিবেশনা। এতে অংশগ্রহণ করেন অস্মি, আগমনী, শুভেচ্ছা, স্তুতি, সৃজা, ঋষিকা প্রমুখ প্রায় ৩০ জন শিল্পী। এর পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন শুভাশিস দত্ত। সহ-পরিচালনায় ঝুম্পি ঘোষ, সায়ন্তী দাস, তানিয়া সাহা ও অনির্বাণ ঘোষ।

এই সন্ধের তৃতীয় তথা মূল আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘তাসের দেশ’। মেঘদূত ব্যালে ট্রুপের সদস্যরা এই নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ করেন। এর মূল চরিত্রে অংশগ্রহণকারী সকলেই নৃত্য ও অভিনয়ে স্বীয় মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। বিশেষত ‘রাজপুত্র’ চরিত্রে শুভাশিস দত্ত, ‘হরতনী’ চরিত্রে দেবারতি গোস্বামী ও ‘রুইতন’ চরিত্রে কৌস্তভ বসু তাঁদের নৃত্যাভিনয়ে দর্শককে মুগ্ধ করেছেন। দেবারতি, শুভাশিস এবং কৌস্তভের সঙ্গে গানে অসাধারণ সহযোগিতা করেন তিন প্রথিতযশা কণ্ঠশিল্পী যথাক্রমে ইন্দ্রাণী সেন, শ্রীকান্ত আচার্য এবং ইন্দ্রনীল সেন। তাঁদের গান সমগ্র নৃত্যনাট্যে এক প্রাণবন্ত নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। নৃত্যে বিশেষ উল্লেখ করতে হয় ‘টেক্কানী’ চরিত্রে অবতীর্ণ সহেলি মহাপাত্রের কথা। একই ভাবে উল্লেখ্য, তাঁকে সঙ্গীতে সহযোগিতা করা রমা মণ্ডলের গানগুলি এই নাটকের একটি বিশিষ্ট সম্পদ। এ ছাড়া সদাগরপুত্রের ভূমিকায় গোবিন্দ সাহা, পত্রলেখার নৃত্যে মালিনী চন্দ ও গানে রচয়িতা রায়, তাসের রাজা ও রানি রূপে অরিন্দম দাস ও মণিদীপা বিশ্বাস, ‘ছক্কা-পাঞ্জা’ প্রদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় ও অরিন্দম ঘোষ, ‘গোলাম’ তাপস মণ্ডল, ‘ইস্কাবনী’ মধুরিমা চৌধুরী, ‘চিঁড়েতনী’ সমাদৃতা দে ও ‘দহলানী’ ঋতুপর্ণা নন্দী তাঁদের নৃত্যাভিনয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।

সমগ্র অনুষ্ঠান ও নৃত্য পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন নৃত্যগুরু শুভাশিস দত্ত। ওঁর সহযোগী পরিচালক হিসেবে সহেলি মহাপাত্রর প্রচেষ্টাও প্রশংসনীয়।

জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়

Dance Program Meghdoot Ballet Troupe Rabindra Sadan Auditorium
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy