Advertisement
E-Paper

মানুষের বিপর্যয়েও ছুটেছে মনের ঘোড়া

সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস দলের ৫৭-তম বার্ষিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে। প্রথমটি সোসাইটির বর্তমান ২০-জন সদস্যের চিত্র ও ভাস্কর্য নিয়ে সম্মেলক। দ্বিতীয়টি ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’।

মৃণাল ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০০:০০

সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস দলের ৫৭-তম বার্ষিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে। প্রথমটি সোসাইটির বর্তমান ২০-জন সদস্যের চিত্র ও ভাস্কর্য নিয়ে সম্মেলক। দ্বিতীয়টি ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’। সদ্য প্রয়াত এই দলের দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সুনীল দাস ও সুহাস রায়ের ছবি নিয়ে প্রদর্শনী।

সুনীল দাস ও সুহাস রায় এই দুই শিল্পীরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে ১৯৬০-এর দশকে উদ্ভূত আধুনিকতার নির্মাণে। কিন্তু তাঁদের প্রকাশভঙ্গি স্বভাবতই স্বতন্ত্র, ঘোড়া ও বাইসন খ্যাত সুনীল সারা জীবন এই বিশ্লিষ্ট, বিপর্যস্ত সময়ের গভীরে ঢুকতে আধুনিকতাবাদী সমস্ত আঙ্গিক পদ্ধতি নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষ-নিরীক্ষা করেছেন। উন্মোচিত করেছেন মানুষের বিশেষত নারীর নিভৃত হাহাকার। তুলনায় সুহাস রায় যেন একটু ধ্রুপদী মনোভাবাপন্ন। সত্তর দশকের ভঙ্গুর জীবনের বিশ্লিষ্ট অন্তর্গূহ প্রতিমাকল্পগুলি অতিক্রম করে তিনি এসেছেন আলো-আঁধারি নির্জন নিসর্গে। কিন্তু যিশুখ্রিষ্টের আত্মদানের করুণার ভিতর সন্ধান করেছেন জীবনের তাৎপর্য।

প্রদর্শনীর সব শিল্পী তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা-সঞ্জাত উৎকর্ষের সবটুকু দিয়েই কাজ করেছেন। ষাটের দশকের শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়, গণেশ হালুই, লালুপ্রসাদ সাউ, মনু পারেখ, সনৎ কর এবং নিরঞ্জন প্রধান। সত্তর দশকের একমাত্র প্রতিনিধি ভাস্কর মানিক তালুকদার। তাঁর ব্রোঞ্জের ‘প্যাঁচা’ কাঠের ‘হি ম্যান’ কনসেপচুয়ালিজম-এর দিকে অভিক্ষেপের দৃষ্টান্ত।

আশির দশকের শিল্পীরা প্রায় সকলেই তাঁদের ভাবনা ও দক্ষতা নিয়ে উপস্থিত। আদিত্য বসাকের ‘জার্নি’ শীর্ষক তিনটি মিশ্রমাধ্যম মানবিক অভিযাত্রার সংকটকে অভিব্যক্ত করেছেন। মনোজ দত্তের টেম্পোরায় আলোকিত নিসর্গ, মনোজ মিত্রের ‘পাপেট’-এর নিহিত রহস্যময়তা, প্রদীপ মৈত্রের অসামান্য দুটি জলরং, বিমল কুণ্ডু ও সুনীল কুমার দাসের ভাস্কর ও ব্রোঞ্জে প্রদর্শনীটি উজ্জ্বল হয়ে থাকে।

বার্ষিক প্রদর্শনী: বিড়লা অ্যাকাডেমিতে প্রদর্শিত ছবি দুটির শিল্পী সুনীল দাস ও আদিত্য বসাক

পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের অনেকের কাজই দ্বিতীয় সংকটে ভারাক্রান্ত। বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় পার্থ দাশগুপ্ত। পার্থর কাজ সব সময়েই নতুন ভাবনায় উজ্জ্বল থাকে। এ বারের লৌহ নির্মিত ইনস্টলেশন দুটির কেন্দ্রীয় ভাবনাকে তিনি খুব স্পষ্ট করেননি। পঙ্কজ-এর ছবি দুটি তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় নয়।

রাজেন মণ্ডলের গত বছরের অসামান্য বহুমাত্রিক গ্রাফিকসটির তুলনায় এ বারের এচিং দুটিকে ম্লান মনে হয়।

অতনু ভট্টাচার্যের ক্যানভাস দুটিতে অভিব্যাক্তিবাদী বিমূর্ততার নতুন অভিমুখ আছে। ড্রয়িং নিয়ে অসামান্য কাজ করেছেন শ্রীকান্ত পাল। অতীন বসাকের এচিংগুলি এককের প্রতিধ্বনি। অখিলচন্দ্র দাসের কাঠ ও ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য দুটি প্রতিবাদী মননে উজ্জ্বল।

Paintings Exhibition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy