বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সম্মিলিত প্রদর্শনী করলেন ১০ জন শিল্পী। মণিকা বর্মণ একজন বলিষ্ঠ আলোকচিত্রী। বিশেষ করে সিল্যুট ফর্মের ফোটোগ্রাফগুলি বেশ জোরালো। তবে একটু কম সংখ্যক ছবি থাকলে ভাল হতো। পায়েল দে ছবি করেছেন সমস্ত ক্যানভাস জুড়ে। ফ্রেমের মধ্যে ইমেজ ঠাসা হয়ে রয়েছে। এতে দূর থেকে ছবি বড় মাপের মনে হচ্ছে। তাঁর ছবি ‘দুর্গা’ দশ হাতে দশ পদ্মফুল নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়ানো। লেগে থাকলে ভাল ছবি করতে পারবেন। রাজেশ বাহাদুর রায়ের জলরঙের দুটি মনোক্রোম মুখাবয়ব উল্লেখযোগ্য। মহিষ দুটির ড্রয়িং বলিষ্ঠ। মাটিতে লালচে রং অন্য ডাইমেনশন এনেছে।
তাপস দাসের মেটাল পাতের টুকরো জুড়ে ভাস্কর্য কয়েকটি উতরে গেছে। সাইকেল আরোহী, বুক রিডার ইত্যাদি। সাইকেল আরোহীর থেমে থাকা সাইকেল এখুনি চলতে শুরু করবে, এ রকম গতির আবর্তন ধরার চেষ্টা করেছেন। বিষয় নির্বাচন ভাল। তবে মেটাল প্লেট ঝাল দিয়ে জোড়া হয়েছে দৃষ্টিকটু ভাবে। ত্রিমাত্রিক কাজ ডিসপ্লে করতে পেডেস্টাল দরকার হয়, এখানে তা নেই। অনুরাধা হালদার বুদ্ধের মুখ করেছেন। ছবি অন্য কারও মতো হয়ে যাচ্ছে সেটি খেয়াল করেননি। তা ছাড়া, মিউজিয়াম মার্কা বুদ্ধের মুখাবয়বের অতিরিক্ত ব্যবহার খুব ক্লিশে।
অতনু দাসের কৃষ্ণ সাজা নীল মুখ। একটু লালের ব্যবহার বেশ। কিন্তু টাইটেল ‘হোপ’ কেন, বোঝা গেল না। স্বাতী হংসরিয়া বেশ নাটকীয় ঢঙে ছবি করেছেন। ত্রিশূলে ভর দিয়ে খোলা চুলে দাঁড়ানো মহিলা, কপালে লাল রং, আবার পশ্চাৎপট সবজে কালো আর লাল। মহিলার পোশাক এবং লাল রঙের প্রয়োগ-রীতিতে মনে হয় কোনও নাটকের চরিত্র আনতে চেয়েছেন। অনিন্দিতা বিশ্বাস রায় করেছেন সর্ষেখেত, দূরে সূর্য। উজ্জ্বল বর্ণ। মহর্ষি পাত্র সবুজ বেগুনি হলদে নীল প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন খুব অপরিচ্ছন্ন ভাবে। অনেক নারীমুখ, ফাঁকে ফাঁকে নারীশরীরের অংশবিশেষ, নীচে কালী ইত্যাদি। কী আঁকবেন আর কেন আঁকবেন, সে সম্বন্ধে তিনি একেবারেই দিশেহারা।