Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আলোচনা

দুর্গার হাতে পদ্মফুল

ফ্রেমের মধ্যে ইমেজ ঠাসা হয়ে রয়েছে। এতে দূর থেকে ছবি বড় মাপের মনে হচ্ছে। তাঁর ছবি ‘দুর্গা’ দশ হাতে দশ পদ্মফুল নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়ানো। লেগে থাকলে ভাল ছবি করতে পারবেন। রাজেশ বাহাদুর রায়ের জলরঙের দুটি মনোক্রোম মুখাবয়ব উল্লেখযোগ্য।

ইমেজ: বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সম্মেলক প্রদর্শনীর একটি ছবি

ইমেজ: বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সম্মেলক প্রদর্শনীর একটি ছবি

শমিতা নাগ
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সম্মিলিত প্রদর্শনী করলেন ১০ জন শিল্পী। মণিকা বর্মণ একজন বলিষ্ঠ আলোকচিত্রী। বিশেষ করে সিল্যুট ফর্মের ফোটোগ্রাফগুলি বেশ জোরালো। তবে একটু কম সংখ্যক ছবি থাকলে ভাল হতো। পায়েল দে ছবি করেছেন সমস্ত ক্যানভাস জুড়ে। ফ্রেমের মধ্যে ইমেজ ঠাসা হয়ে রয়েছে। এতে দূর থেকে ছবি বড় মাপের মনে হচ্ছে। তাঁর ছবি ‘দুর্গা’ দশ হাতে দশ পদ্মফুল নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়ানো। লেগে থাকলে ভাল ছবি করতে পারবেন। রাজেশ বাহাদুর রায়ের জলরঙের দুটি মনোক্রোম মুখাবয়ব উল্লেখযোগ্য। মহিষ দুটির ড্রয়িং বলিষ্ঠ। মাটিতে লালচে রং অন্য ডাইমেনশন এনেছে।

তাপস দাসের মেটাল পাতের টুকরো জুড়ে ভাস্কর্য কয়েকটি উতরে গেছে। সাইকেল আরোহী, বুক রিডার ইত্যাদি। সাইকেল আরোহীর থেমে থাকা সাইকেল এখুনি চলতে শুরু করবে, এ রকম গতির আবর্তন ধরার চেষ্টা করেছেন। বিষয় নির্বাচন ভাল। তবে মেটাল প্লেট ঝাল দিয়ে জোড়া হয়েছে দৃষ্টিকটু ভাবে। ত্রিমাত্রিক কাজ ডিসপ্লে করতে পেডেস্টাল দরকার হয়, এখানে তা নেই। অনুরাধা হালদার বুদ্ধের মুখ করেছেন। ছবি অন্য কারও মতো হয়ে যাচ্ছে সেটি খেয়াল করেননি। তা ছাড়া, মিউজিয়াম মার্কা বুদ্ধের মুখাবয়বের অতিরিক্ত ব্যবহার খুব ক্লিশে।

অতনু দাসের কৃষ্ণ সাজা নীল মুখ। একটু লালের ব্যবহার বেশ। কিন্তু টাইটেল ‘হোপ’ কেন, বোঝা গেল না। স্বাতী হংসরিয়া বেশ নাটকীয় ঢঙে ছবি করেছেন। ত্রিশূলে ভর দিয়ে খোলা চুলে দাঁড়ানো মহিলা, কপালে লাল রং, আবার পশ্চাৎপট সবজে কালো আর লাল। মহিলার পোশাক এবং লাল রঙের প্রয়োগ-রীতিতে মনে হয় কোনও নাটকের চরিত্র আনতে চেয়েছেন। অনিন্দিতা বিশ্বাস রায় করেছেন সর্ষেখেত, দূরে সূর্য। উজ্জ্বল বর্ণ। মহর্ষি পাত্র সবুজ বেগুনি হলদে নীল প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন খুব অপরিচ্ছন্ন ভাবে। অনেক নারীমুখ, ফাঁকে ফাঁকে নারীশরীরের অংশবিশেষ, নীচে কালী ইত্যাদি। কী আঁকবেন আর কেন আঁকবেন, সে সম্বন্ধে তিনি একেবারেই দিশেহারা।

অটুট গানের বিশুদ্ধতা

শ্রীনন্দা মুখোপাধ্যায়

সম্প্রতি শিশির মঞ্চে ‘দেবব্রত বিশ্বাস স্মরণ কমিটি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল শিল্পীর ১০৭ তম জন্মদিন। শুরুতেই শিল্পীর অনেক অজানা তথ্য জানা গেল তথাগত রায়, স্বামী সুপর্ণানন্দ মহারাজ, বুদ্ধদেব গুহ, গৌতম দে, সুগত বসুর আলোচনায়। ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত এখন’ শীর্ষক আরও একটি মনোগ্রাহী আলোচনা শোনা গেল বেশ কয়েক জন বক্তার কণ্ঠে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন অনুপ মতিলাল, আশিস ভট্টাচার্য, পিনাকেশ সরকার, সত্যকাম সেন, অদিতি গুপ্ত ও আলপনা রায়। পিনাকেশ শিল্পীদের যন্ত্র সহযোগিতার দিকে নজর দিতে বলেছেন, যাতে কোনও ভাবেই শিল্পীর গান আড়াল না হয়। আশিসবাবু বলেছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীতে বাণী প্রধান, তাই কোনও আড়ম্বরই যেন বাণীকে আড়াল না করে। অন্যান্য বক্তার কথায় ফুটে উঠেছে, গানের বিশুদ্ধতা কখনও যেন ক্ষুণ্ণ না হয়। পঙ্কজ সাহার পরিচালনায় আলোচনাটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হল শরৎ ঋতু অবলম্বনে গীতি-আলেখ্য ‘ছুটির নিমন্ত্রণে’। গানে অংশ নিয়েছিলেন শমীক পাল, অদিতি গুপ্ত ও রঞ্জিনী মুখোপাধ্যায়। রঞ্জিনীর ‘তোমরা যা বলো তাই বলো’ গানটি শান্তিনিকেতনের খোলা হাওয়ার মতো শ্রোতার মনে প্রবেশ করে। শমীকের গাওয়া ‘অমল ধবল’ ও অদিতির গাওয়া ‘শরতে আজ’ সুগীত। পাঠে ছিলেন প্রণতি ঠাকুর ও পঙ্কজ সাহা। শরতের আগমনী গানের মতো প্রণতির পাঠ মনকে স্পর্শ করে। অনুষ্ঠান শেষ হয় ডালিয়া দাস ও বিধানচন্দ্র পালের (বাংলাদেশ) কবিতায়।

ভানুসিংহের পদাবলী

পলি গুহ

সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে জয়িতা সাহার পরিচালনায় নৃত্যাঙ্গনের বার্ষিক নৃত্যানুষ্ঠানে ছিল সংস্থার ছাত্রীদের পরিবেশনায় ওড়িশি নৃত্য। গণেশ বন্দনা, বটু ও মোহনাপল্লবী সুন্দর প্রয়াস। পরবর্তী নিবেদন রবীন্দ্রনাথের ‘ভানুসিংহের পদাবলী’। রাধা ও কৃষ্ণের ভূমিকায় ছিলেন জয়িতা সাহা ও নোয়েল দত্ত। নৃত্য ও অভিনয় খুবই সুন্দর ও সাবলীল। ও়ড়িশি, মণিপুরী ও সৃজনশীল নৃত্যের মাধ্যমে তা পরিবেশিত হয়। সমবেত নৃত্যে ছাত্রীরা দক্ষতার পরিচয় দেয়। তবে শিশুশিল্পীদের নৃত্যই শ্রোতাদের মন অধিক জয় করে।

অনুষ্ঠান

• সম্প্রতি স্বরক্ষেপণ আয়োজন করেছিল ‘ভাঙা দেউলের দেবতা’। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সরস্বতী স্তোত্র দিয়ে । পরে বাসবদত্তা মজুমদারের পরিচালনায় সংস্থার শিশুশিল্পীরা কবিতা শোনায় । আলাদা করে ভাল লাগে আয়ূষ চৌধুরী, গৌতমী কর, সিলভিয়া হককে। পিয়ালী বিশ্বাস ও ঊর্জস্বী মহলানবিশের নিবেদনও ছিল খুব সুন্দর। পার্থসারথি দেব পরিচালিত শ্রুতিনাটকটি ছিল সে দিনের বিশেষ পাওনা। সব শেষে ছিল বাসবদত্তার একক নিবেদন। সঞ্চালনায় ছিলেন তমালি ঘোষ।

• গিরিশ মঞ্চে স্বপ্নশিশির সম্প্রতি আয়োজন করেছিল গান ও পাঠের সুন্দর অনুষ্ঠান। শিরোনাম ছিল ‘বেঁধেছি আমার প্রাণ’। গানে ছিলেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, শ্যামল ভট্টাচার্য, সুচিন সিংহ প্রমুখ। পাঠ ও আবৃত্তিতে অংশ নিয়েছিলেন কেশবরঞ্জন, তাপস নাগ, কৃষ্ণকলি বসু প্রমুখ। সব শেষে ছিল সুরশ্রী ভট্টাচার্যের নৃত্য। সঞ্চালনায় ছিলেন সুদীপ্তা ভাদুড়ি ও এমিলি বন্দ্যোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Painting Dance Songs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE