Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে রবীন্দ্রনাথ

গান ও পাঠের অপূর্ব সংমিশ্রণে নৃত্যগীতি আলেখ্য। লিখছেন বারীন মজুমদারকলাক্ষেত্রমের রজত জয়ন্তী বর্ষ পালন উপলক্ষে সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত হয়েছিল নৃত্যগীতি আলেখ্য ‘অনুভবে রবীন্দ্রনাথ’। মূল ভাবনা রায়া ভট্টাচার্যের। আর সেই ভাবনাকে আলেখ্য রূপে গঠিত করেছেন শুক্তি রায় ও শর্মিষ্ঠা নন্দী। মূল বিষয়বস্তু হল, রবীন্দ্ররচনার নানা বিষয়ের মধ্য থেকে কিছু কিছু অংশ তুলে এনে তার সঙ্গে পাঠ ও গান সংযুক্ত করে একটা সামগ্রিক রূপ দেওয়া। প্রথম অংশ দু’টি অপূর্ব।

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share: Save:

কলাক্ষেত্রমের রজত জয়ন্তী বর্ষ পালন উপলক্ষে সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত হয়েছিল নৃত্যগীতি আলেখ্য ‘অনুভবে রবীন্দ্রনাথ’। মূল ভাবনা রায়া ভট্টাচার্যের। আর সেই ভাবনাকে আলেখ্য রূপে গঠিত করেছেন শুক্তি রায় ও শর্মিষ্ঠা নন্দী। মূল বিষয়বস্তু হল, রবীন্দ্ররচনার নানা বিষয়ের মধ্য থেকে কিছু কিছু অংশ তুলে এনে তার সঙ্গে পাঠ ও গান সংযুক্ত করে একটা সামগ্রিক রূপ দেওয়া। প্রথম অংশ দু’টি অপূর্ব। সমবেত সঙ্গীতের পরে জয়তী চক্রবর্তী মুগ্ধ করলেন ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’ গানটি গেয়ে।

ছবি: কৌশিক সরকার

আর এই মুগ্ধতারই রেশ ধরে রায়া শোনালেন তাঁর নিজস্ব ঘরানায় ‘কৃষ্ণকলি’। বোঝা যাচ্ছিল প্রকৃতির মনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যে নিবিড় যোগাযোগ তাই যেন উঠে আসবে পর পর। আসছিলও তাই গানের মাধ্যমে। কেননা মনোজ মুরলী নায়ারের ‘তিমির অবগুণ্ঠনে’ জানিয়ে দিল বর্ষার অনুষঙ্গেই বোধ হয় অনুষ্ঠানটি চলবে। প্রকৃতির মনের সঙ্গে নারীর মনের মিলের যে কথা বলা হয়েছে তাও একটু পরেই চলে গিয়ে বিষয়বস্তু চলে গেল মিলন বিরহ/ অন্তহীন বিরহ/ বিশ্বচেতনা/ মৃত্যুভাবনা/ স্বদেশপ্রীতি প্রভৃতিতে— সেই নানা রবীন্দ্রনাথের একখানি মালা।

তবু এরই মধ্যে শিল্পীদের নিজস্ব অবদান যে সুন্দর মাত্রায় পৌঁছেছিল তা অনস্বীকার্য। প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় রায়া ভট্টাচার্য ও জয়তী চক্রবর্তীর কথা। জয়তীর সব ক’টি গানই হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত। আর রায়ার নিবেদনে ‘বাঁশিওয়ালা’ ও ‘শেষের কবিতা’ শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে— যার রেশ শেষ অবধি থেকে যায়। পুরুষ কণ্ঠের গানগুলি গেয়েছেন মনোজ মুরলী নায়ার। কণ্ঠ ও পরিবেশনের গুণে সেগুলি আলাদা মাত্রা পেয়েছে। ডাকঘরের শিল্পীদের সমবেত সঙ্গীতগুলি সুমহড়াযুক্ত। নৃত্যশিল্পীদ্বয় শুভাশিস ভট্টাচার্য ও সুস্মিতা ভট্টাচার্য ও কলাক্ষেত্রমের ছাত্রীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি যত্নবান ছিলেন। পাঠে ছিলেন মধুমিতা বসু ও অলক রায় ঘটক। এ দিন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর আবৃত্তি নিষ্প্রভ হওয়ায় অনুষ্ঠানটি শেষাংশে কেমন যেন গতি হারিয়ে ফেলে। তবু শেষ রক্ষা হল কেননা রায়া আবৃত্তি করলেন ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য’ ও সমবেত নৃত্যগীত ‘নৃত্যের তালে তালে’ পরিবেশিত হওয়ায়।

রবি শশী তারা

সকাল থেকে সন্ধ্যা। তারও পরে রাত। সময়ের এই ধারাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় ধরে রাখতে ‘নীলাভ’ আয়োজন করেছিল গীতিআলেখ্য ‘রবি শশী তারা’। সম্প্রতি রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ছিল মূলত দুটি পর্বের। প্রথম পর্বে একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে ছিলেন মৈত্রেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায়, পত্রলেখা ঘোষ ও চন্দ্র দাস। দ্বিতীয় পর্বে ছিল গীতিআলেখ্য। সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘আলোর অমল কমলখানি’ অত্যন্ত শ্রুতিমধুর। এ ছাড়াও সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘বিশ্ব যখন নিদ্রা মগন’ গানটি অনুষ্ঠানে এক অন্য মাত্রা এনে দেয়। রুবি গঙ্গোপাধ্যায় ও সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের অন্য গানগুলিও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। পাঠে ছিলেন রুমা মিত্র, সুস্মিতা চক্রবর্তী।

স্মরণে মোহরদি

‘স্মরণে ও বরণে’ মোহরদি। সম্প্রতি আই সি সি আর-এ সৃষ্টি পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল গান। দ্বিতীয় পর্বে ‘নব রবি কিরণ’এর ‘ভানুসিংহের পদাবলী’। প্রথম পর্বে এষা মিত্রের কয়েকটি গানে প্রতিফলিত হয় রবীন্দ্রগানে প্রকৃতির নানা রূপ। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ইমন চক্রবর্তী, বুলবুল গঙ্গোপাধ্যায়, সুতপা রায়, নন্দিনী ভট্টাচার্য প্রমুখ। নৃত্যে স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিরূপ সেনগুপ্ত।

শুধু গান নয়

সম্প্রতি বেলেঘাটা তিনকন্যা নাট্যসংস্থা আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুরুতেই গান শোনালেন কুমকুম বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন দীপঙ্কর পাল, অজন্তা সরকার, মৌসুমী সান্যাল, ছন্দা দেব, নিবেদিতা ঘোষ প্রমুখ। দ্বিতীয় পর্বে ‘ভুলি কেমনে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, জীবন গুহ, সরমা সেন, অপর্ণা ঘোষ বিশ্বাস, মউ গুহ। তবে এ দিন নৃত্যে নজর কাড়লেন স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়। সব শেষে সরমা সেনের গান অন্য মাত্রা পায়।

রবির গানে

সম্প্রতি শিখা চৌধুরীর এককে শোনা গেল রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন পর্যায়ের গান। প্রথমেই তিনি গাইলেন ‘গোধূলি লগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা’। শান্তিনিকেতনের ঘরানা এখনও তাঁর প্রতিটি গানেই ফুটে ওঠে। এই অনুষ্ঠানে তাঁর গাওয়া অন্যান্য গানগুলির মধ্যে ছিল ‘স্বপন যদি ভাঙিলে’, ‘রূপে তোমায় ভোলাব না’, ‘যেতে যেতে একলা পথে’ প্রভৃতি।

গানের শ্রদ্ধা

সম্প্রতি নবদিশারী কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে পালিত হল বিমান মুখোপাধ্যায়ের তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকী এবং শিল্পী যূথিকা রায়ের স্মরণ। বিমান মুখোপাধ্যায়ের সহোদর নিতাই মুখোপাধ্যায়ের কথায় ও গানে অনুষ্ঠান অন্য মাত্রা পেল। ইন্দ্রাণী সেন গানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানালেন তাঁর গানের গুরুকে। পরের শিল্পী ছিলেন সুস্মিতা গোস্বামী। তিনিও শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন চারটি গান শুনিয়ে। সব শেষে ছিল নবদিশারীর সম্মেলক গান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE