Advertisement
E-Paper

আমাকে যে ভাবে হেনস্তা করা হল তা নিয়েও হয়তো নাটক করব

তবে এখনই নয়। সুমন মুখোপাধ্যায়ের নতুন থিয়েটার নাকি বড়সড় একটা বোমা! মহলা দেখে এলেন দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়তাঁর রিং টোনে এখন ডোর বেলের গম্ভীর ডাক। নতুন থিয়েটারে থেকে থেকেই বেজে উঠবে পাগলাঘন্টি! হুঁশিয়ার! হুঁশিয়ার! আবার নাকি মঞ্চের জন্য বোমা বানাচ্ছেন সুমন মুখোপাধ্যায়! ‘রাজা লিয়ার’-এর পর ছোট নাটক ‘শূন্য থেকে শূন্য নয়’। আর নতুন করে ‘মেফিস্টো’ করেছেন শুধু। বহু দিন বাদে তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাটক। নাট্যকার ম্যাক্স ফ্রিশের ‘ফায়ার রেইজার’-এর বাংলা অনুবাদ ‘যারা আগুন লাগায়’। প্রথম শো ১৩ জুলাই। একাডেমি। দুপুর সাড়ে তিনটে।

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০০:১৪

তাঁর রিং টোনে এখন ডোর বেলের গম্ভীর ডাক।

নতুন থিয়েটারে থেকে থেকেই বেজে উঠবে পাগলাঘন্টি!

হুঁশিয়ার! হুঁশিয়ার!

আবার নাকি মঞ্চের জন্য বোমা বানাচ্ছেন সুমন মুখোপাধ্যায়!

‘রাজা লিয়ার’-এর পর ছোট নাটক ‘শূন্য থেকে শূন্য নয়’। আর নতুন করে ‘মেফিস্টো’ করেছেন শুধু। বহু দিন বাদে তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাটক। নাট্যকার ম্যাক্স ফ্রিশের ‘ফায়ার রেইজার’-এর বাংলা অনুবাদ ‘যারা আগুন লাগায়’। প্রথম শো ১৩ জুলাই। একাডেমি। দুপুর সাড়ে তিনটে।

‘বোমা’-র মশলা নিয়ে কৌতূহল তো আছেই, দিন দশ আগে ফেসবুকে খবরটা রটে যাওয়ার পর চাপা হিসহিসানিতে কানে এল আরও কিছু। সেই কানাকানিও ব্যাগবন্দি করে ‘পত্রিকা’ হাজির সল্টলেকের আই-এ ব্লকে তাঁর বাড়িতে।

শুক্রবারের সকাল। দোতলার চিলতে ঘর। মাসখানেক ধরে পুলিশ-মিডিয়ার টানাপড়েন সরিয়ে এ দিন একেবারে সোজাসাপটা সুমন। এবং কানাকানির হেস্তনেস্ত তাই সাক্ষাতের প্রথম দৃশ্যেই।

•••

পত্রিকা: কেউ বলছেন বোমা...

সুমন: হা হা হা হা। কেউ আমাকে আবার বললেন জ্বালাময়ী... হা হা হা...

পত্রিকা: তাই? আচ্ছা, মেফিস্টো-র মতো এ বারও কি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় আসবেন প্রথম শো-এ?

সুমন: কাজ না থাকলে নিশ্চয়ই আসবে। আমার আমন্ত্রণ থাকবে। এই তো কিছু দিন আগে ও কৌশিকেরও (সেন) নাটক দেখে এল।

পত্রিকা: আপনার নতুন কাজ নিয়ে ওঁর প্রতিক্রিয়া? শুভেচ্ছা ...

সুমন: শুভেচ্ছা? হ্যাঁ, বন্ধু হিসেবে সে তো জানিয়েইছে। আসলে নাটকটা ঠিক কী বিষয়ে এ সব নিয়ে ও ততটা কিছু জানে না। তবে আনোয়ার শাহ্ রোডে আমরা যেখানে রিহার্সাল করছি, একদিন দেখতে এসেছিল সেখানে।

পত্রিকা: আর আপনার নাট্যজগতের বন্ধুরা, তাঁদের সঙ্গে কথা হল?

সুমন: কী ব্যাপারে?

পত্রিকা: নতুন নাটক নিয়ে...

সুমন: নতুন নাটক নামানোর আগে অমন করে কথাবার্তা কোনও কালেই হত না।

পত্রিকা: দিন কয়েক আগেই মৈনাক ভৌমিকের নতুন ছবিতে স্বস্তিকার কামব্যাকের খবর হল। তার ঠিক কাছাকাছি সময়ে আপনি ফেসবুকে নতুন নাটক নিয়ে পোস্ট করলেন। প্ল্যানমাফিক?

সুমন: আমার তো কামব্যাকের কোনও গল্পই নেই। ফেব্রুয়ারিতে ‘মেফিস্টো’ নেমেছে। তারপর থেকেই নতুন নাটকের চিন্তাটা মাথায় ছিল।

পত্রিকা: এই নাটকটা বাছলেন কেন?

সুমন: কলেজ-বেলায় ম্যাক্স ফ্রিশের ‘ফায়ার রেইজার’ পড়ার পর থেকে নাটকটা মাথায় ছিল। ’৮৬-’৮৭-তে স্টুডেন্টস হল-এ নবারুণদার (ভট্টাচার্য) একটা প্রযোজনাও দেখেছিলাম। সত্তর দশকের গোড়ায় অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অগ্নি বিষয়ক সতর্কতা’ নামে রঙ্গনায় যে নাটক করতেন, সেটাও এই একই। এ বারও পড়ে ভাল লাগল। তার সঙ্গে আরেকটা ব্যাপার হল।

পত্রিকা: কী?

সুমন: মনে হল, বিশ্বব্যাপী যে ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হচ্ছে, সিরিয়া-ইরান, ইউরোপীয় কমিউনিটি, আমেরিকা, এমনকী ভারতেও... ‘ফায়ার রেইজার’ এই মুহূর্তে সবার সঙ্গে শেয়ার করা দরকার।

পত্রিকা: ফোকাসটা কোথায় থাকছে?

সুমন: নাটকের মূল বিষয়টা একটা প্রশ্ন তুলে দেয়, আমাদের চারপাশে বারবার যা ঘটছে, সেগুলোর জন্য আমরাও কি অনেকটা দায়ী নই? মানুষ হিসেবে আমরা ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে? সভ্যতার কোন পর্ব দিয়ে চলেছি আমরা? এগুলোই ফোকাস। এ বার আমেরিকা যাওয়ার আগে আমার দলের (তৃতীয় সূত্র) সঙ্গে কথা হল। ফিরেই রিহার্সাল শুরু করে দিয়েছি।

পত্রিকা: সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা ও আপনাকে থানায় ডেকে পুলিশি জেরার পরে অনেকে ভেবেছিলেন, আপনার নাটকের বিষয় হতে চলেছে, পুলিশি রাষ্ট্র!

সুমন: সাম্প্রতিক বিষয় দেখলে প্রতিদিন কত কিছুই কাগজে পড়ছি। গোলাবাড়ি, মনিরুল, প্রীতি জিন্টা, বিমান বসুদের নবান্ন-য় কাটলেট খেতে যাওয়া, তারপর রাতভর জেগে ধর্না... সেই সঙ্গে মোদীর উত্থান, সবই। আমি ও ভাবে ঠিক সাম্প্রতিক বিষয় থেকে সরাসরি নাটক করি না তো! আর দেখুন, পুলিশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হাজার হাজার নাটক হয়েছে। সে আর নতুন কী! তবে আমায় যে ভাবে হ্যারাস করা হয়েছে, সেটা নিয়ে হয়তো পরে থিয়েটার করতে পারি। কিন্তু এখন নয়। ‘সাম্প্রতিক’ ব্যাপারটা আমার ওপর প্রভাব ফেলে ঠিক কথা, এক্ষেত্রে এই জেরা-টেরা আমার ক্ষতিও করেছে, সেটাও ঠিক। এগুলো ‘ব্যাক অব দ্য মাইন্ড’-এ কাজ করে, কিন্তু ইমিডিয়েট প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সরাসরি নাটক তো আমি করি না। প্রোপাগান্ডা বা অ্যাজিট প্রপ কোনওটার মধ্যেই আমি নেই। শিল্প-সংস্কৃতিকে আমি ও ভাবে দেখতেও চাই না। আমি ইতিহাসের একটা বড় ঘটনাকে রূপকের মোড়কে ধরতে চাই। তাতে যদি কেউ সমকালকে খুঁজে পান, আঞ্চলিক কিছু বিষয়ের মিল পান, পাবেন। আমি কাউকে কোনও পাঠে বন্দি করতে চাই না। আমার কাছে ব্রেখট যেমন রাজনৈতিক নাট্যকার, চেখভও তাই। আঙ্কল ভানিয়া-য় একজন গ্রামের মানুষকে নিয়ে চেখভ যখন নাটক লেখেন, গ্রাম্যজীবনের অবসাদকে যে ভাবে তুলে ধরেন, সেটাকে আমি রাজনৈতিক উচ্চারণই বলব।

একাডেমির মহলায়। ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল

•••

ম্যাক্স রুডল্ফ ফ্রিশ। সুইশ নাট্যকার, ঔপন্যাসিক। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মান-সাহিত্যের অন্যতম সেরা একজন প্রতিনিধি। এক সময় ব্রেখটের সঙ্গেও মোলাকাত হয় তাঁর। ফ্রিশের এই নাটকটি লেখা ১৯৫৩ সালে, জার্মান ভাষায়। তবে তার অনুবাদ শুধু ইংরেজিতেই আছে তিন-চারটি। যার একটি ‘ফায়ার রেইজার’। নাৎসি আর ফ্যাসিস্তদের রূপক অর্থে ব্যবহার করে এ নাটকে ফ্রিশ দেখিয়েছেন, কী ভাবে সাধারণ নাগরিক ক্ষমতার খপ্পরে পড়ে নিজের সর্বস্ব হারায়।

নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে বিডারম্যান (অনির্বাণ ভট্টাচার্য)। জার্মান ভাষায় বিডার কথাটির অর্থ রক্ষণশীল, সৎ, ঋজু। বিডারম্যানও খানিকটা তেমনই একজন মানুষ। বাড়িতে তিনি ছাড়া আর থাকেন তাঁর স্ত্রী বাবেট (তমালি কক্কড়), পরিচারিকা আন্না (অঙ্কিতা মাজি)।

বিডারম্যান যে শহরে থাকেন, সেখানে অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটে চলেছে। ফেরিওয়ালা পরিচয় দিয়ে প্রায় দিন কোনও না কোনও বাড়িতে আসছে আগন্তুক। বাড়ির লোকজনকে ভুলভাল বুঝিয়ে, বিশ্বাস আদায় করে রাত কাটাতে বেছে নিচ্ছে সে-বাড়ির চিলেকোঠা। পরদিন গোটা বাড়িটা ভস্মীভূত হয়ে যাচ্ছে আগুনে। বিডারম্যানের পণ ছিল কিছুতেই এমন লোককে তিনি বাড়িতে রাখবেন না। অথচ শেষমেশ তাই-ই করে বসেন তিনি। স্মিটস্ (গৌতম মৃধা) ও আইজেনরিং-এর (শান্তনু নাথ) ঠাঁই হয় তাঁর বাড়িতে।

দুই আগন্তুকের অদ্ভুত সব কার্যকলাপে প্রতি মুহূর্তে রহস্য তৈরি হয় নাটকে। সেই রহস্যে সর্বক্ষণ জুড়ে থাকে দুটো মেরুর টানাটানি। যারা আগুন লাগায় আর যাদের আগুন লাগানো হয়।

•••

পত্রিকা: নাটকটা পড়তে পড়তে মনে হয়, অনেকটা যেন ‘মেফিস্টো’র এক্সটেনশন...

সুমন: তা কিছুটা বলতে পারেন। তফাত শুধু ‘মেফিস্টো’র নায়ক হফগেন ছিলেন এক শিল্পী। যিনি ক্ষমতার মোহে জড়িয়ে পড়েন। এ নাটকে বিডারম্যান নেহাতই গেরস্ত এক মানুষ। শেষ দৃশ্যে হফগেন নিজের পরিণতি বুঝতে পেরে অসহায়ের মতো বলেন, “আমাকে নিয়ে ওরা অমন করছে কেন, আমি তো একজন সাধারণ শিল্পী মাত্র।” গোটা নাটকটায় যেটা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট, সেরকম এখানেও যে সংলাপ দিয়ে শেষ হচ্ছে নাটক, তার একটা আলাদা তাৎপর্য আছে।

•••

‘ফায়ার রেইজার’ ইংরিজি থেকে বাংলা অনুবাদ নবারুণ ভট্টাচার্যর।

সুমন-নবারুণ জুড়ি মানেই কোথাও যেন হাভাতে-হাঘরে মানুষের হয়ে, ক্ষমতাকে জানান দেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে— “এই যে আমি কিন্তু আছি”। মৃত ‘হারবার্ট’ যে কারণে বোমা হয়ে ফেটে পড়ে, ‘কাঙাল মালসাট’-এর ফ্যাতাড়ুর দল যে কারণে যেখানেই ‘অর্ডার’ দেখে ‘ডিসঅর্ডার’ তৈরি করে। ক্যাওস ছড়িয়ে দেয়।

এই নাটকে কিন্তু ঠিক তেমনটা নেই। বরং আছে, ছা-পোষা গেরস্তকে রাম ধাক্কা— হুঁশিয়ার! হুঁশিয়ার! নইলে আগুন লাগিয়ে দেবে!

•••

পত্রিকা: স্ক্রিপ্টে অনেকগুলো কোরাস কবিতা আছে, ওগুলো কি গান হিসেবে থাকছে?

সুমন: না, তাল আর ছন্দ দিয়ে এক-একটা কম্পোজিশন থাকবে।

পত্রিকা: কে করছেন?

সুমন: দেবজ্যোতি মিশ্র। তবে আমার নাটকে যেমন গান একটা বড় জায়গা জুড়ে থাকে, এখানে কিন্তু কোনও গান নেই, বলা ভাল কোনও মিউজিকই রাখব না ঠিক করেছি।

পত্রিকা: তা হলে দেবজ্যোতির কাজটা কী হবে?

সুমন: হা হা হা হা, ওই নন মিউজিক্যাল জার্নির মধ্যে মিউজিক্যালিটি খোঁজা।

পত্রিকা: কিচ্ছু বোঝা গেল না।

সুমন: সবটা বুঝে গেলে নাটকের জন্য থাকবেটা কী!

•••

সোমবার। সকাল ন’টা। একাডেমি। প্রথম স্টেজ রিহার্সাল।

মঞ্চের একেবারে পিছন দিকে উঁচু থেকে সার সার চটের পর্দা ঝোলানো। তার সামনেই বিরাট একটা ঘণ্টা। বাঁ ধারে চিলেকোঠা তৈরির কাজ চলছে। ডান ধারে ঘরের দরজা লাগানো হচ্ছে। দর্শক আসনে বসে তারই তদারকি করছেন সুমন নিজে, সঙ্গে সেট-ডিজাইনার হিরণ মিত্র।

একটু বাদেই শুরু হল মহলা।

“শহরের লোক শোনো/আগুন লাগছে, লাগবে/ আমরা হলাম ফায়ারব্রিগেড/ আমরা রয়েছি তৈরি...”

কোরাস। তার সঙ্গে অনেকগুলো হুইসলের তীব্র আওয়াজ। সংঘবদ্ধ দলের হাতে ধরা লাঠি থেকে ঠক ঠক ঠক ঠক শব্দ। পায়ের ঘসটানি। ধুপধাপ দৌড়। পাগলা ঘন্টির টং টং টং টং টং টং....। সব মিলিয়ে মুহূর্তে যেন একটা আতঙ্কের আবহাওয়া তৈরি করে দিল। গোটা নাটক জুড়েই এমনটা বারবার। মিউজিক নেই। কিন্তু বাদল সরকার ঘরানার থার্ড থিয়েটার মুড তৈরি করতে যে ভাবে গড়াত, এ বার মঞ্চে তাকেই কি ধরতে চাইছেন সুমন?

সংলাপে অদ্ভুত একটা স্টাইলাজেশন। মাঝেমাঝেই নিচু স্বরে চাপা ফিসফাস। কেটে কেটে কথা। বিডারম্যান-বাবেটের নড়াচড়া, কথা বলায় অনেকটাই যেন পিএলটি-র শোভা সেন-সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়দের যুগের ছায়া।

সবচেয়ে বিচিত্র লাগে আন্নাকে যে ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষ নয়, কথা বলা যন্ত্র যেন। এক্সপ্রেশনলেস! ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে শব্দ গড়িয়ে পড়ছে শুধু। অথচ কোথায় যেন আতঙ্কের হিলহিলে ভয় তাঁকে আচ্ছন্ন করে রাখে।

‘দেবী সর্পমস্তা’ থেকে অনির্বাণ রীতিমতো চোখে পড়ছেন, সদ্য ‘অ্যান্টনি কবিয়াল’-এও তাঁর অভিনয় মন জুড়িয়েছে। ‘বিডারম্যান’ সম্ভবত হতে চলেছে তাঁর মঞ্চ জীবনের বড় একটা মাইলফলক।

মশলা প্রায় তৈরি। শুধু ‘বোমা’ কতটা বিস্ফোরক, জানতে মাঝে আর ছ’টা দিন। রহস্যের হাসি ছড়িয়ে সুমন বললেন, “হারবার্ট-এর সেই সংলাপটা মনে আছে? ... কে যে কখন বিস্ফোরণ ঘটায়, রাষ্ট্রশক্তির এখনও জানতে বাকি আছে!”

এই রহস্য নিয়েই আপাতত অপেক্ষা।

পাগলাঘন্টি বাজল বলে!

debshankar mukhopadhyay suman mukhopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy