নির্বাস ও ‘ছোট ছোট বাড়ি’র পর ‘আবাসন প্রকল্প’ বিভিন্ন নাট্যদলের প্রযোজনা হলেও বিষয় একই। প্রমোটারদের চক্রান্তে ছোট ছোট বাড়ির মালিকদের নিবাসে গড়ে উঠছে বিশাল বহুতল আবাসন প্রকল্প। অন্য ছন্দের ‘আবাসন প্রকল্প’-এর (নাটক: চিরন্তন চক্রবর্তী। পরিচালনা: বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়) বিষয় একই হলেও সমস্যাকে এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়েছে এবং নাটক শেষ হয় এক সোচ্চার আশাবাদে। কাহিনি একটু দুর্বল হলেও নাটকের আবেদন জোরালো। পরিচালনায় কোনও খুঁত নেই। অভিনয়-ও এ নাটকের প্রাণ।
উঠতি প্রমোটার তিমিরের নজর রিটায়ার্ড শিক্ষকের বাগানসমেত পুরোনো বসতবাড়ি। টাকা ও ফ্ল্যাটের প্রলোভন সত্ত্বেও তিনি চান না তিমিরের আবাসন প্রকল্পের জন্য তাঁর বাড়ি জমি ছেড়ে দিতে। বাগান তাঁর প্রাণ। কিন্তু তিমিরের আছে রাজনৈতিক নেতার মদত আর পোষা গুন্ডা। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে শিক্ষকের দুই স্বার্থান্বেষী ছেলে। কিন্তু নির্লোভ শিক্ষক দলিল সই করতে রাজি না হওয়ায় তিমির তাঁকে ভয় দেখায়, গুন্ডা লেলিয়ে বাড়ি তছনছ করে। দর্শক যখন রুদ্ধশ্বাসে এক ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্যে অপেক্ষা করেন, ঠিক সেই সময়ে এক আশ্চর্য পরিবর্তন ঘটে। শিক্ষকের শিশু নাতির ধমকানিতে প্রমোটারের হৃদয়ের পরিবর্তন ঘটে, হাত থেকে পিস্তল পড়ে যায় তাঁর।
প্রমোটাররাও যে মানুষ, তাদেরও যে হৃদয় বলে কিছু আছে, তারাও শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে এক সুস্থ ভবিষ্যতের দিশা পায় এমন একটি পজিটিভ বার্তাই এই নাটকের অনন্য বৈশিষ্ট্য। বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের কুশলী অভিনয়ে জটিল তিমির চরিত্রে প্রমোটার আর ‘ভেতরের মানুষ’ তেল-জলের মতো মেশে না, তাই সে একটা টাইপ খলনায়ক হয়ে ওঠেনি। দীপক বসু (সৎ নির্লোভ আদর্শবাদী শিক্ষক), জয়া চৌধুরী (অসহায় পতিব্রতা স্ত্রী), সোনালী দাস (শুভবুদ্ধি ও ব্যক্তিত্বে দৃপ্ত পুত্রবধূ) এবং অন্যান্যরা যথাযথ অভিনয় করেছেন। কিন্তু মনে রাখার মতো আইকন দাশগুপ্তের নির্ভীক ছটফটে নাতি এবং প্রমোটারের গুন্ডা হাতকাটা কার্তিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy