প্রতীকী ছবি।
বেতন বাড়ছে বেতনের মতো। তার সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে জিনিসপত্রের দামও। অথচ বিগত কয়েক বছরে সমান তালে কমেছে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার। করোনার ভ্রুকুটিতে বাজারও মন্দা। ঝুঁকি বাড়ছে জীবনযাত্রায়। এই সমস্ত কিছুর সাঁড়াশি চাপে এখন আমজনতার কপালে চিন্তার ভাঁজ। এই পরিস্থিতিতে বাজারে যে প্রকল্পেই বিনিয়োগ করা হোক না কেন, তা যদি ভবিষ্যতের মুদ্রাস্ফীতির হারকে না ছাপাতে পারে তা হলে স্বচ্ছল জীবন খুব সহজেই দূর্বিষহ হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে বছর কয়েক পরে লক্ষাধিক টাকা বেতন পেলেও চিন্তার ঘোর কাটবে না।
এমন পরিস্থিতিতে অবসর নিয়ে চিন্তায় থাকেন অনেকেই। ৬০ বছরের পরে ঠিক কত টাকা হাতে থাকলে মাথায় চিন্তারা ঘুরপাক খাবে না, তার হিসেব কষতে বসে হাত কামড়ান অনেকেই। বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের পরেও সেই একই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মানুষ এমন প্রকল্প খোঁজেন যা ভবিষ্যতে বিপুল রিটার্ন দিতে পারবে। এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব এমন একটি ফান্ডের কথা যা আপনাকে আগামী ২৫ বছরে ১০ কোটি টাকা ফেরত দিতে পারে।
অবসরকালীন জীবন চিন্তাহীন ভাবে কাটাতে হলে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান তথা এসআইপি-র উপরে ভরসা করেন অনেকেই। এ বার প্রশ্ন হল কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন? প্রথমেই বলেছি অবসর জীবন পরিকল্পনার জন্য মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টি ভীষণ ভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যেখানেই বিনিয়োগ করা হোক না কেন, সেই বিনিয়োগকৃত অর্থের উপরে বার্ষিক ছয় থেকে ১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির হার চাপবে। তাই সব সময় দেখতে হবে যে সেই লগ্নি করা অর্থ যখন রিটার্ন আসছে, সেই অঙ্কের পরিমাণ যেন মুদ্রাস্ফীতির অন্তত ১০ শতাংশ হারকে পিছনে ফেলে দিতে পারে।
মনে রাখবেন, বড় রিটার্ন মানেই বড় ঝুঁকি। সেই সঙ্গে এই ধরনের বিনিয়োগ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়। ২৫ বছরের জন্য অর্থ বিনিয়োগের জন্য এই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিউচুয়াল ফান্ড বিভিন্ন ধরনের হয়— ডেট ফান্ড, ইকুয়িটি ফান্ড ইত্যাদি। এর মধ্যে ইকুয়িটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে অবসরের সময় পাওয়া যেতে পারে বিপুল পরিমাণ অর্থ। যা মুদ্রাস্ফীতির চোখ রাঙানিকে টপকে দুর্দান্ত রিটার্ন দিতে পারে লগ্নিকারীকে।
তবে এই ক্ষেত্রে যদি কোনও বিনিয়োগকারী ২৫ বছর কোনও মিউচুয়াল ফান্ড ধরে রাখতে পারেন, তবে মেয়াদপূর্তিতে ১০ কোটি টাকার প্রাপ্তি এমন কিছু অসম্ভব হবে না। তবে এক জন বিনিয়োগকারী সংশ্লিষ্ট ফান্ডে কত টাকা বিনিয়োগ করছেন, তার ওপর নির্ভর করে ১০ কোটি টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি। বাজার ঠিক থাকলে ২৫ বছরও সময় লাগবে। এতে কম্পাউন্ডিং বা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ ঢুকবে অ্যাকাউন্টে।
একটি ছোট্ট হিসেব দেওয়া যাক। ধরা যাক কোনও এসআইপি আপনাকে বছরে ১৫ শতাংশ করে রিটার্ন দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এসআইপি রিটার্ন ক্যালকুলেটর বা মিউচুয়াল ফান্ড ক্যালকুলেটরের হিসেব অনুযায়ী কোনও বিনিয়োগকারীকে মাসে ১১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবেই ওই বিনিয়োগকারী ২৫ বছর শেষে ১০ কোটি টাকা ফেরত পেতে পারেন। অতীতের হিসেব অনুযায়ী বেশ কয়েকটি ফান্ড অতীতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে ১৫ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। যেমন, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া স্মল ক্যাপ ফান্ড রেগুলার গ্রোথ, আদিত্য বিড়লা সান লাইফ মিড ফান্ড-প্ল্যান-গ্রোথ-রেগুলার প্ল্যান, এইচডিএফসি টপ ১০০ ফান্ড-রেগুলার প্ল্যান-গ্রোথ ইত্যাদি।
উপরে উল্লিখিত রিটার্নের হিসেবে অঙ্ক কষে করা। মনে রাখবেন, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ সব সময় বাজারের ঝুঁকি সাপেক্ষ। বিনিয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সমস্ত নথি মন দিয়ে পড়ুন। বাজার অনুযায়ী ন্যাভ ভ্যালু বা ইউনিটের দাম বাড়তে বা কমতে পারে। এর সঙ্গে সুদের হারের পরিমাণ সরাসরি জড়িত। সর্বোপরি একটি মিউচুয়াল ফান্ডের অতীতের পারফরম্যান্স ভবিষ্যতে প্রতিফলিত নাও হতে পারে। তাই বিনিয়োগের আগে প্রয়োজনীতা অনুযায়ী কোনও বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy