ইসমাইলকে নাকি মোট ছ’বার মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু প্রতি বার শেষকৃত্যের ঠিক আগে চোখ মেলেন তিনি। ফিরে আসেন বহাল তবিয়তে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ১২:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
মৃত্যুর পরের অভিজ্ঞতা কেমন? সেখানেও কি আছে অন্য কোনও জগৎ! যুগ যুগ ধরে মনোজগতের অন্ধিসন্ধি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন তাঁরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন।
০২১৮
মৃত্যুর পরের সেই জগতের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। যখন হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় এবং শরীর স্থির হয়ে যায় তখন কী হয়? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। যদিও মৃত্যুর পর কী হয়, সেই ‘অভিজ্ঞতা’ ভাগ করে নিয়েছেন এমন মানুষও রয়েছেন বিস্তর।
০৩১৮
তবে এমন এক জনও পৃথিবীতে রয়েছেন যিনি মৃত্যুকে ফাঁকি দিয়েছেন মোট ছ’বার। অন্তত তেমনটাই দাবি করা হয়।
০৪১৮
কথা হচ্ছে তানজ়ানিয়ার যুবক ইসমাইল আজ়িজ়ির। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কিত দাবি, বিজ্ঞান বা যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। তাঁর জীবন তানজ়ানিয়ার মানুষদের কাছে রহস্য এবং ভয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
০৫১৮
নাইরাল্যান্ডের আফ্রিম্যাক্স ইংলিশের সাম্প্রতিক একটি তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইল ছ’বার ‘মারা’ গিয়েছেন। জীবিত হয়ে ‘ফিরে এসেছেন’ ছ’বারই।
০৬১৮
ওই তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইলকে নাকি মোট ছ’বার মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু প্রতি বার শেষকৃত্যের ঠিক আগে আবার চোখ মেলেছেন তিনি। জীবিত হয়ে ফিরে এসেছেন, যা চিকিৎসক এবং স্থানীয় মানুষকে হতবাক করে দিয়েছিল। পরের দিকে তাঁদের মনে ভয়ের সঞ্চারও করেছিল এই ঘটনা।
০৭১৮
বর্তমানে ইসমাইলকে তাঁর সম্প্রদায়ের মানুষেরাই ভয় পান। একঘরে করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এমনকি পরিবারও প্রত্যাখ্যান করেছে তাঁকে।
০৮১৮
তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইলের প্রথম ‘মৃত্যু’ হয় কর্মক্ষেত্রে। গুরুতর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল তাঁকে। দেহ রাখা হয়েছিল মর্গে। কিন্তু তাঁকে যখন কবর দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল, তখন হঠাৎ করেই আবার চোখ মেলেন তিনি। শেষকৃত্যের ঠিক আগে উঠে বসেন।
০৯১৮
আফ্রিম্যাক্সকে ইসমাইল বলেন, ‘‘সবাই আমায় মর্গে নিয়ে গেল। ওখানে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভব করে আমি ঘুম থেকে উঠে পড়ি। সৌভাগ্যবশত মর্গ বন্ধ ছিল না। আমি বেরিয়ে আসি। আমার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা আমাকে দেখেই ভয় পেয়ে যান। তখন ওঁরা শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আমাকে দেখে পালিয়ে যান।’’
১০১৮
এর পর ইসমাইলের ‘মৃত্যু’ হয় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। সে বারেও মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সে বারও কবর দেওয়ার ঠিক আগে চোখ খোলেন ইসমাইল। আবার হতবাক হয়ে যান পরিবার-পরিজনেরা। ভয় ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে।
১১১৮
সেখান থেকে বিষয়টি আরও চাঞ্চল্যকর হয়ে ওঠে। এর পর একটি গাড়ি দুর্ঘটনা, সাপের কামড় এবং সেপটিক ট্যাঙ্কে পড়ে যাওয়ার পরেও মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল ইসমাইলকে।
১২১৮
কিন্তু প্রতি বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। শেষকৃত্যের ঠিক আগে নড়াচড়া শুরু করে ‘মৃতদেহ’। চোখ মেলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া শুরু করেন ইসমাইল।
১৩১৮
তবে ষষ্ঠ বার ইসমাইলের ‘মৃত্যু’ ছিল ভয়ঙ্কর। অপশক্তি ভেবে তাঁকে তাঁর বাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন প্রতিবেশীরা। আগুন ধরিয়ে দেন তাঁর ঘরে। ইসমাইলকে সে বারও মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
১৪১৮
সে বার ইসমাইলের দেহ তিন দিন ধরে মর্গে পড়ে ছিল। গ্রামবাসীরা ভেবেছিলেন ল্যাঠা চুকেছে। কিন্তু তিন দিন পর জীবন্ত অবস্থায় মর্গ থেকে বেরোনোর পর ইসমাইলকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। তাঁকে একঘরে করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৫১৮
ইসমাইলের কথায়, ‘‘প্রতি বার যখনই আমি মারা যেতাম এবং ফিরে আসতাম, আমার শরীরে অদ্ভুত অনুভূতি হত। লোকেরা আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতে শুরু করলেন যেন আমি এক জন পিশাচ।’’
১৬১৮
ইসমাইলের দাবি, তিনি কখনও কারও ক্ষতি করেননি। তবুও স্থানীয়দের সন্দেহ যে তিনি অপশক্তি বা কালোজাদুর সঙ্গে যুক্ত। পরিবারও ত্যাগ করেছে তাঁকে।
১৭১৮
তানজ়ানীয় যুবক জানিয়েছেন, বর্তমানে গ্রামের একটি জীর্ণ বাড়িতে একা বসবাস করেন তিনি। সামান্য চাষাবাদ, রান্নাবান্না এবং ঘর পরিষ্কার করে সময় কাটে তাঁর।
১৮১৮
তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইলকে তাঁর গ্রামে অভিশপ্ত এবং অমর বলে মনে করা হয়। স্থানীয় সম্প্রদায় বা পরিবারের কাছ থেকে কোনও সমর্থন পান না তিনি। এত কিছুর পরেও ইসমাইল কিন্তু শান্ত। জবাবদিহি করতে করতে ক্লান্তও বটে।