Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Veeru Devgan

অমৃতসরের কাঠের মিস্ত্রি থেকে বলিউডের স্টান্ট মাস্টার হয়ে ওঠেন অজয়ের বাবা বীরু

বীরুর জন্ম ১৯৪২ সালে পঞ্জাবের অমৃতসরে। তাঁর বাবা ছিলেন কাঠের মিস্ত্রি। ছোটবেলার বাবার কাঠের কাজে হাতও লাগাতেন তিনি। ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে কাঠের কাজে একেবারে মন ছিল না তাঁর। স্বপ্ন দেখতেন পর্দার হিরো হওয়ার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ১৫:০৩
Share: Save:
০১ ১৭
পকেটে মাত্র ৪ টাকা নিয়ে অমৃতসর থেকে মুম্বইয়ের ট্রেন ধরেছিলেন। মাথার মধ্যে তখন ভর করেছে ফিল্মের হিরো হওয়ার ভূত।

পকেটে মাত্র ৪ টাকা নিয়ে অমৃতসর থেকে মুম্বইয়ের ট্রেন ধরেছিলেন। মাথার মধ্যে তখন ভর করেছে ফিল্মের হিরো হওয়ার ভূত।

০২ ১৭
সেই সময় ফিল্মে 'চকোলেট বয়'-দের মাঝে তিনি জায়গা করে উঠতে পারেননি ঠিকই। মুম্বইয়ে এসে ফিল্মে হিরো হওয়ার বদলে কখনও ট্যাক্সি সাফ করে, তো কখনও কাঠের মিস্ত্রি হিসাবে কাজ করে দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু রিয়েল লাইফে তিনিই ‘হিরো’।

সেই সময় ফিল্মে 'চকোলেট বয়'-দের মাঝে তিনি জায়গা করে উঠতে পারেননি ঠিকই। মুম্বইয়ে এসে ফিল্মে হিরো হওয়ার বদলে কখনও ট্যাক্সি সাফ করে, তো কখনও কাঠের মিস্ত্রি হিসাবে কাজ করে দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু রিয়েল লাইফে তিনিই ‘হিরো’।

০৩ ১৭
তিনি অজয় দেবগণের বাবা বীরু দেবগণ। শরীরে যাঁর সমস্ত হাড়ই ভাঙা, একাধিক বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেও নিজের কাজে অবিচল থেকেছেন। তিনি কারও কাছে ছিলেন সেরা শিক্ষক, কারও পরম বন্ধু। ছেলে অজয়ের চোখে আবার তিনিই প্রকৃত 'সিঙ্ঘম'।

তিনি অজয় দেবগণের বাবা বীরু দেবগণ। শরীরে যাঁর সমস্ত হাড়ই ভাঙা, একাধিক বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেও নিজের কাজে অবিচল থেকেছেন। তিনি কারও কাছে ছিলেন সেরা শিক্ষক, কারও পরম বন্ধু। ছেলে অজয়ের চোখে আবার তিনিই প্রকৃত 'সিঙ্ঘম'।

০৪ ১৭
বীরুর জন্ম ১৯৪২ সালে পঞ্জাবের অমৃতসরে। তাঁর বাবা ছিলেন কাঠের মিস্ত্রি। ছোটবেলার বাবার কাঠের কাজে হাতও লাগাতেন তিনি। ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে কাঠের কাজে একেবারে মন ছিল না তাঁর। স্বপ্ন দেখতেন পর্দার হিরো হওয়ার।

বীরুর জন্ম ১৯৪২ সালে পঞ্জাবের অমৃতসরে। তাঁর বাবা ছিলেন কাঠের মিস্ত্রি। ছোটবেলার বাবার কাঠের কাজে হাতও লাগাতেন তিনি। ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে কাঠের কাজে একেবারে মন ছিল না তাঁর। স্বপ্ন দেখতেন পর্দার হিরো হওয়ার।

০৫ ১৭
সেই স্বপ্ন নিয়েই মাত্র ১৪ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এলেন। অমৃতসর থেকে ট্রেন ধরে সোজা মুম্বই। পকেটে ছিল মাত্র ৪ টাকা।

সেই স্বপ্ন নিয়েই মাত্র ১৪ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এলেন। অমৃতসর থেকে ট্রেন ধরে সোজা মুম্বই। পকেটে ছিল মাত্র ৪ টাকা।

০৬ ১৭
বিনা টিকিটে ট্রেনে তো উঠে পড়েছিলেন, কিন্তু মহারাষ্ট্রের বিরার স্টেশনে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। মু্ম্বই পৌঁছে প্রথম ১ সপ্তাহ তাই তাঁর জেলেই কাটে।

বিনা টিকিটে ট্রেনে তো উঠে পড়েছিলেন, কিন্তু মহারাষ্ট্রের বিরার স্টেশনে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। মু্ম্বই পৌঁছে প্রথম ১ সপ্তাহ তাই তাঁর জেলেই কাটে।

০৭ ১৭
জেলে বসেও তিনি ফিল্মের হিরো হওয়ার স্বপ্নই দেখতেন। জেল থেকে বেরিয়েও সেই স্বপ্নে এতটুকু ভাটা পড়েনি।

জেলে বসেও তিনি ফিল্মের হিরো হওয়ার স্বপ্নই দেখতেন। জেল থেকে বেরিয়েও সেই স্বপ্নে এতটুকু ভাটা পড়েনি।

০৮ ১৭
মুম্বইয়ে দিনযাপন করার জন্য কখনও ট্যাক্সি পরিষ্কার করেছেন, তো কখনও কোনও কাঠের দোকানে মিস্ত্রির কাজ করেছেন। সঙ্গে ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।

মুম্বইয়ে দিনযাপন করার জন্য কখনও ট্যাক্সি পরিষ্কার করেছেন, তো কখনও কোনও কাঠের দোকানে মিস্ত্রির কাজ করেছেন। সঙ্গে ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।

০৯ ১৭
কিছু দিন ইন্ডাস্ট্রিতে ঘোরার পর বীরু বুঝে গিয়েছিলেন, চকোলেট হিরোদের ভিড়ে তাঁর সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই হতে চলেছে। ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

কিছু দিন ইন্ডাস্ট্রিতে ঘোরার পর বীরু বুঝে গিয়েছিলেন, চকোলেট হিরোদের ভিড়ে তাঁর সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই হতে চলেছে। ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

১০ ১৭
অমৃতসর থেকে কাকা এসে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। গ্রামে ফিরে ফের বাবার সঙ্গে কাজে যোগ দেন তিনি। পরে তিনি টেম্পো চালকের কাজও করেন।

অমৃতসর থেকে কাকা এসে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। গ্রামে ফিরে ফের বাবার সঙ্গে কাজে যোগ দেন তিনি। পরে তিনি টেম্পো চালকের কাজও করেন।

১১ ১৭
হিরো হওয়ার স্বপ্ন তাঁকে ফের মুম্বই টেনে আনে। এ বার  মুম্বই এসে অ্যাকশন ডিরেক্টর রবি খন্নার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। রবির কাছেই তাঁর স্টান্টম্যান হয়ে ওঠা।

হিরো হওয়ার স্বপ্ন তাঁকে ফের মুম্বই টেনে আনে। এ বার মুম্বই এসে অ্যাকশন ডিরেক্টর রবি খন্নার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। রবির কাছেই তাঁর স্টান্টম্যান হয়ে ওঠা।

১২ ১৭
১৯৬৭-এর ফিল্ম ‘অনিতা’তে তিনি প্রথম স্টান্ট করার সুযোগ পান। এর পর প্রচুর ফিল্মে স্টান্ট করেছেন তিনি।

১৯৬৭-এর ফিল্ম ‘অনিতা’তে তিনি প্রথম স্টান্ট করার সুযোগ পান। এর পর প্রচুর ফিল্মে স্টান্ট করেছেন তিনি।

১৩ ১৭
১৯৭৪-এর ফিল্ম ‘রোটি কপড়া অউর মকান’-এ তিনি প্রথম স্টান্ট ডিরেক্টরের কাজ পান। সাতের দশকের মাঝামাঝি থেকে নয়ের দশক পর্যন্ত বলিউডে স্টান্ট মাস্টার হিসাবে তিনিই রাজত্ব করেছেন।

১৯৭৪-এর ফিল্ম ‘রোটি কপড়া অউর মকান’-এ তিনি প্রথম স্টান্ট ডিরেক্টরের কাজ পান। সাতের দশকের মাঝামাঝি থেকে নয়ের দশক পর্যন্ত বলিউডে স্টান্ট মাস্টার হিসাবে তিনিই রাজত্ব করেছেন।

১৪ ১৭
দিলীপ কুমার, ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন, জিতেন্দ্র, বিনোদ খন্না, শত্রুঘ্ন সিনহা, রাজেশ খন্না- সে সময়ের সমস্ত সুপার হিট হিরোদের জন্য অ্যাকশন দৃশ্যে হয় তিনিই অভিনয় করেছেন বা স্টান্ট মাস্টার হয়ে সেই দৃশ্যের পরিচালনা করেছেন।

দিলীপ কুমার, ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন, জিতেন্দ্র, বিনোদ খন্না, শত্রুঘ্ন সিনহা, রাজেশ খন্না- সে সময়ের সমস্ত সুপার হিট হিরোদের জন্য অ্যাকশন দৃশ্যে হয় তিনিই অভিনয় করেছেন বা স্টান্ট মাস্টার হয়ে সেই দৃশ্যের পরিচালনা করেছেন।

১৫ ১৭
কখনও ফিল্মের হিরোর হয়ে মার খেয়েছেন, কখনও উঁচু বাড়ি থেকে লাফিয়ে নীচে পড়েছেন- যে কোনও বিপজ্জনক দৃশ্যেই তিনি সব সময় অবিচল থেকেছেন।

কখনও ফিল্মের হিরোর হয়ে মার খেয়েছেন, কখনও উঁচু বাড়ি থেকে লাফিয়ে নীচে পড়েছেন- যে কোনও বিপজ্জনক দৃশ্যেই তিনি সব সময় অবিচল থেকেছেন।

১৬ ১৭
ছেলে অজয় বলিউডে 'স্টান্ট হিরো' হিসেবে পরিচিত। ডেবিউ ফিল্ম ‘ফুল অউর কাঁটে’-তে স্টান্ট করে সকলের নজর কেড়ে নেন অজয়। এই ফিল্মে দু’টো চলন্ত মোটর সাইকেলের মাঝে দাঁড়িয়ে স্টান্ট দেখিয়েছিলেন। তাঁর স্টান্টে হাতেখড়ি বাবা বিরুর কাছেই। তেমনই অভিনেতা ভিকি কৌশলের বাবা অ্যাকশন ডিরেক্টর শ্যাম কৌশলের গুরু বিরুই।

ছেলে অজয় বলিউডে 'স্টান্ট হিরো' হিসেবে পরিচিত। ডেবিউ ফিল্ম ‘ফুল অউর কাঁটে’-তে স্টান্ট করে সকলের নজর কেড়ে নেন অজয়। এই ফিল্মে দু’টো চলন্ত মোটর সাইকেলের মাঝে দাঁড়িয়ে স্টান্ট দেখিয়েছিলেন। তাঁর স্টান্টে হাতেখড়ি বাবা বিরুর কাছেই। তেমনই অভিনেতা ভিকি কৌশলের বাবা অ্যাকশন ডিরেক্টর শ্যাম কৌশলের গুরু বিরুই।

১৭ ১৭
দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০১৯ সালে মুম্বইয়ে মৃত্যু হয় বিরুর। মৃত্যুর পর ছেলে অজয় বাবার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "তাঁর মাথায় ৫০টিরও বেশি সেলাই পড়েছিল। শরীরের প্রায় প্রতিটা হাড়ই তাঁর ভাঙা ছিল। একাধিক বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। তিনিই আমার প্রকৃত 'সিঙ্ঘম'।"

দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০১৯ সালে মুম্বইয়ে মৃত্যু হয় বিরুর। মৃত্যুর পর ছেলে অজয় বাবার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "তাঁর মাথায় ৫০টিরও বেশি সেলাই পড়েছিল। শরীরের প্রায় প্রতিটা হাড়ই তাঁর ভাঙা ছিল। একাধিক বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। তিনিই আমার প্রকৃত 'সিঙ্ঘম'।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE