এই লেখা যখন লিখতে বসেছি, লর্ডসে আমার জীবনের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলার কুড়ি বছর পূর্ণ হয়েছে। যে কোনও মানুষের জীবনেই কুড়ি বছর একটা দীর্ঘ সময়, আর এই কুড়ি বছরে আমার জীবনটাও যে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করে ফেলেছে, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আর আইপিএল-এর মধ্যে দিয়ে ক্রিকেট খেলাটাতেই একটা আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশ্ব জুড়ে টেস্ট ক্রিকেটকে চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে দিয়েছে এই শর্ট ফর্ম্যাটের ক্রিকেট। আমি নিজে সব ধরনের ক্রিকেটই খেলেছি, কিন্তু গর্বের সঙ্গে বলব, লর্ডস-এ করা ওই টেস্ট সেঞ্চুরিটা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত।
আমি আজ যা কিছু, তার শুরুটা হয়েছিল সেই দিন। ২২ জুন ১৯৯৬, লর্ডসের দারুণ এক শনিবারের বিকেলে। লর্ডসে কোনও টেস্ট ম্যাচে শনিবারটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। উইকএন্ড তো, একটাও আসন ফাঁকা ছিল না সে দিন। আর চা-বিরতির ঠিক আগেই, ডমিনিক কর্কের একটা পিচ্ড-আপ ডেলিভারিতে নেওয়া গোলার মতো একটা কভার ড্রাইভ আমার ক্রিকেট কেরিয়ারের গতিপথ পালটে দিয়েছিল।
বহু মানুষ সে দিনটার কথা, লর্ডসে আমার সেই ইনিংসটার কথা বলেন। কিন্তু আমার কাছে ওই টেস্ট ম্যাচটার আগের দেড় মাসটাই সব, কারণ সেই সময়েই আমার মধ্যে এই বিশ্বাসটা এসেছিল, আমি ক্রিকেটের এই লেভেলেও রান করতে পারি, পারব। ব্রিস্টলের সেই বিকেলটা মনে পড়ে। ডব্লিউ জি গ্রেস-এর স্ট্যাচুর সামনে, ছোট্ট একটা বেঞ্চে বসে আছি, ভারত আর গ্লস্টারশায়ারের একটা ম্যাচ চলছে সামনে। সেটাই মরশুমের প্রথম ম্যাচ, জোনাথন লিউয়িসের বল-এ শূন্য রানে আউট হয়ে, মনখারাপ করে বসে আছি। আমার দাদা, যে ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে মেডিসিন নিয়ে পড়ত, আমায় ও ভাবে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে এল। পাশে একটু চুপ করে বসে থেকে বুঝল, আমার মনের অবস্থা খুব খারাপ। হেসে বলল, তুই কিন্তু এখান থেকে আর খারাপ নয়, শুধু ভালই করতে পারিস।