Advertisement
E-Paper

ফুটবলাবলি

মাঝরাতে ফাইনাল। মাসভর রইরই হইহই, আজ এ ইন, কাল ও আউট, ফের বছর চারেকের অপেক্ষা। এই গ্রহের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটাকে ঘিরে আছে লক্ষ গল্পগাছা। তারই কয়েকখান শোনালেন শিশির রায় ও সৌরজিৎ দাসমাঝরাতে ফাইনাল। মাসভর রইরই হইহই, আজ এ ইন, কাল ও আউট, ফের বছর চারেকের অপেক্ষা। এই গ্রহের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটাকে ঘিরে আছে লক্ষ গল্পগাছা। তারই কয়েকখান শোনালেন শিশির রায় ও সৌরজিৎ দাস

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৪ ০১:০২

ডগ ক্যাচার

১৯৬২-র বিশ্বকাপ। ব্রাজিল ও ইংল্যান্ডের মধ্যে চলছে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ। হঠাৎই মাঠে ঢুকে পড়ল একটা নেড়ি। রেফারি দিলে খেলা বন্ধ করে। কিন্তু বিচ্ছু চারপেয়েটিকে কেউই আর ধরতে পারে না। সে খালি এ দিক ও দিক ছুটে পালায়। শেষমেশ সে কবজা হল ইংল্যান্ডের নামী স্ট্রাইকার জিমি গ্রিভ্স-এর হাতে। কুকুরপ্রেমী গ্রিভ্স মাঠময় হামাগুড়ি দিতে দিতে এক সময় খপ করে ধরে ফেললেন তাকে। অমনি গোটা স্টেডিয়াম ফেটে পড়ল হাততালিতে। কিন্তু কুকুরবাবাজিও ছাড়বে কেন! বদলা নিতে সোজা পিপি করে দিল গ্রিভ্স-এর গায়ে। বাকি ম্যাচটা গ্রিভ্সকে ওই ভেজা জার্সি পরেই খেলতে হয়েছিল। গোটা ব্যাপারটায় ব্রাজিলের গ্যারিঞ্চা এতটাই মজা পেয়েছিলেন যে তিনি পরে সেই কুকুরটিকে দত্তক নিয়ে নেন।

অপয়া

হলুদ জার্সি, নীল শর্টস বললেই কোন দলের কথা মাথায় আসে? ঠিক, ব্রাজিল। যদিও এক সময় তারা কিন্তু অন্য জার্সি পরে খেলত। ১৯৫০-এর বিশ্বকাপ হয় ব্রাজিলে। তখন তাদের জার্সি ছিল নীল কলারওয়ালা সাদা জামা আর শর্টস, মোজাও সাদা। সে বার ফাইনালে পৌঁছলেও তারা হেরে যায় উরুগুয়ের কাছে। আর এই হারের দায় গিয়ে পড়ে জার্সির রঙের ওপর। ব্রাজিলের মানুষ বলতে থাকেন, সাদা রং দলের জন্য অপয়া। রিয়োর একটি সংবাদপত্রে জাতীয় দলের নতুন জার্সি কেমন হবে, তার একটা প্রতিযোগিতাও হয়। সে থেকেই ব্রাজিলের এখনকার জার্সির আবির্ভাব। তার পর থেকে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তারা! যদিও এ বারের সেমিফাইনালের পর জার্সির রং বদলাবে কি না কে জানে!

তিন পাত্তি

২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দল খুব ভাল না খেললেও, সে দেশের রেফারি গ্রাহাম পোল কিন্তু টুর্নামেন্ট-এ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া-ক্রোয়েশিয়ার গ্রুপ ম্যাচে রেফারিং-এর ভার পড়ে পোল-এর। মজাটা এই, ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার জসিপ সিমুনিচ-কে তিনি তিন বার হলুদ কার্ড দেখান! খেলার মাঝামাঝি প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন সিমুনিচ। এর পরেরটা খেলার প্রায় শেষ মুহূর্তে। নিয়ম অনুযায়ী, পোল-এর তক্ষুনি সিমুনিচ-কে লাল কার্ড দেখানোর কথা। কিন্তু বেমালুম ভুলে গিয়ে পোল তা করলেনই না। এর কয়েক মিনিট পরেই ফের ফাউল করেন সিমুনিচ। ঠিক কার্ড দেখানোয় এ বার আর ভুল হয়নি পোল-এর।

ইস্পেসাল

লক্ষ লক্ষ যোজন দূরে, অসীম অতল মহাকাশ নিয়ে গবেষণায় কাটে ওঁদের দিন, মাস, বছর। তা বলে কি বিশ্বকাপ থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারেন? মহাকাশে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের মধ্যেই ছ’জন অ্যাস্ট্রোনট মিলে আস্ত একখান ফুটবল নিয়ে মেতেছেন। গ্র্যাভিটি নেই তো কী, ল্যাবের মধ্যে ভেসে, ফুটবলে কষে কিক ঝাড়ার ভঙ্গি করছেন, বাদ যায়নি বাইসাইকেল কিকও! অদ্ভুত, দারুণ মজাদার এই জিরো গ্র্যাভিটি গেম-এর একটা ভিডিয়ো তুলে মহাকাশচারীরা পাঠিয়েওছেন পৃথিবীতে, বিশ্বকাপের আগে। বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলভক্তের প্রতি এটাই ওঁদের ট্রিবিউট। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাঁদের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ভিডিয়োটা পোস্ট করেছেন। মেসি-মুলারদের খেলা তো দেখবেই, অ্যাস্ট্রোনটদের খেলাও দেখে নিয়ো এক ফাঁকে!

এক দো তিন

ঘটনা ইংল্যান্ডের। সময়টা ১৮৯৪। সান্ডারল্যান্ড আর ডার্বি কাউন্টি-র মধ্যে ম্যাচ। মাঠে লোক জড়ো, কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত রেফারি বেপাত্তা। অগত্যা এক সহকারীকে দিয়ে শুরু করা হল ম্যাচ। প্রথমার্ধের খেলা হয়ে গিয়েছে, তখন আসল রেফারি এসে পৌঁছলেন। তিনি ডার্বি কাউন্টিকে একটা প্রস্তাব দিলেন নতুন করে খেলা শুরু করার। তিন গোলে পিছিয়ে থাকা ডার্বি অমনি লুফে নেয় প্রস্তাব। নব্বই মিনিট শেষে দেখা গেল, ডার্বির নয়, সুবিধে হয়েছে সান্ডারল্যান্ড-এরই। স্কোরলাইন সান্ডারল্যান্ড ৮, ডার্বি কাউন্টি ০! যদিও খেলার তিনটি অর্ধ ধরলে সান্ডারল্যান্ড জিতত ১১-০’য়। ম্যাচটি পরে ‘দ্য গেম অব থ্রি হাভ্স’ নামে পরিচিত হয়।

তোমায় আমি মারব না

কড়া ট্যাকল-এর জন্য রীতিমত কুখ্যাত ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার ‘জাদুক স্প্লিট’ ক্লাব-এর ডিফেন্ডার গোরান গ্রানিচ। হঠাৎ এক দিন দেখা গেল সে সব এক্কেবারে বন্ধ। বিপক্ষের স্ট্রাইকার গোল দিয়ে গেলেও তাকে তেড়েফুঁড়ে আট কাতে যাচ্ছেন না গ্রানিচ। দলও হারছে দুমদাম। চারদিকে যাচ্ছেতাই সমালোচনা। ব্যাপার কী? জানা গেল, ঈশ্বরে মতি হয়েছে গোরান-এর। তাই আর মারধোরে মন নেই। একটি সংবাদমাধ্যমে তিনি এও বলেন, ঈশ্বর ফুটবল খেলাটা বানিয়েছেন মানুষকে আনন্দ দিতে। তো সেই খেলায় মাঠে লাথালাথি করাটা কি সাজে?

ছবি: দেবাশীষ দেব

rabibarer anandamela footbalabali sishir roy sourajit das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy