Advertisement
E-Paper

রবিবাসরীয় ম্যাগাজিন

মার খেয়ে আধমরা হয়ে একটা বিচ্ছিরি নোংরা গলিতে পড়ে ছিল জো। সেই বরফঝরা রাতে, ভাঙা অ্যাসবেস্টস আর পুরনো ড্রামের পাশে, নোংরা জলে মাখামাখি মেয়েটাকে যত্ন করে নিজের বাড়িতে তুলে এনেছিলেন সেলিগম্যান।

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০০

যেমন মেয়েটি কিশোরীবেলায় তার কৌমার্য-হরণের প্রসঙ্গে যখন বলে তার সেই তরুণ প্রেমিক তিন বার সোজাসুজি, পাঁচ বার উলটো করে তার শরীরে প্রবেশ করেছিল, ওই জ্ঞানবৃদ্ধের তক্ষুনি ‘ফিবোনাচি’ সংখ্যা-সিরিজের কথাই মনে হয়! আবার সেলিগম্যান যখন বাখ-এর পলিফনি-র ব্যাখ্যা করেন, যেখানে একটা ‘বেস ভয়েস’ থাকে আর পিয়ানোর দু’পাশ থেকে দুটো স্বর এসে সিম্ফনিটাকে সম্পূর্ণ করে, জো’রও তখন তার তিন পুরনো প্রেমিকের কথা মনে হয়। তাদের এক জন ‘এফ’, কী কমনীয় যত্নে তার শরীর ছুঁত। জো’র শরীর যে ভাবে আদর চাইছে, সে ভাবেই তাকে আদর করত। মিলনের সময় জো’র সুখ, জো’র কামনা-তৃপ্তির কথাই খেয়াল রাখত। আর এক জন ‘জি’, সে যেন বিছানায় চিতাবাঘটি! বাঘ যেমন তার থাবার ভেতর হরিণছানাটিকে নিয়ে খেলা করে, ‘জি’ তেমনই ছন্দ-ক্ষিপ্রতা-কৌতুক-আধিপত্য নিয়ে বিছানায় জো’র শরীরটাকে দখলে রাখে। কিন্তু ওর যৌন-অর্কেস্ট্রার তৃতীয় স্বর, ওর সেই প্রথম প্রেমিক জেরোম, যাকে সে বার বারই ফিরিয়ে দিয়েছে, আর বার বারই যার কাছে ফিরে যেতে চেয়েছে!

জেরোমের সঙ্গে থাকার সময় সে বুঝতে পারে, যৌনতার সবচেয়ে গোপন, রহস্যময়, উত্তেজক উপাদানটার নাম প্রেম। কিন্তু জেরোমের সঙ্গে তৃতীয় বার দেখা হওয়ার পর সে যখন গহন সংরাগে তাকে বলে: আমার শরীরের সমস্ত গহ্বরগুলো তুমি পূর্ণ করে দাও, তার একটু পরেই মিলনের তুঙ্গ মুহূর্তে জো হঠাত্‌ই বুঝতে পারে, তার আর কোনও অনুভূতি হচ্ছে না। মিলনের কোনও আনন্দ, উত্তেজনা তাকে ছুঁচ্ছে না! এবং এখান থেকেই ছবিটা কোনও নিম্ফোম্যানিয়াক নারীর যৌন অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনি আর থাকে না। পরিচালক অবশ্যই দর্শকদের শক দেওয়ার ঢালাও বন্দোবস্ত রেখেছেন। কোনও অ্যানাস্থেসিয়া ছাড়া যোনির ভেতর তারের হুক ঢুকিয়ে জো’র গর্ভপাতের দৃশ্যে আপনার গা গুলোতে পারে। ‘কে’ নামের পেশাদার সেডিস্ট যুবকটি যে ক্লিনিকাল নির্লিপ্তি আর নিষ্ঠুরতায় চাবুক মেরে জো’র শরীর ফালাফালা করে, আপনার সেটা সহ্য না-ও হতে পারে। ছবির ন্যারেটিভে আপনি সূক্ষ্ম জাতিবিদ্বেষের আভাসও পেতে পারেন।

কিন্তু ছবিটা শেষ অবধি অনেক পুরুষের গায়ের গন্ধ আর পুরুষাঙ্গের নানান আকারের ভিড়ে এক নারীর একলা, নির্জন হয়ে থাকার গল্প। সেই মেয়ের মনখারাপ হলে এখনও ছোটবেলার পাতা জমানোর খাতাটা খুলে বসে। কে’র হাতে রোজকার হিংস্র রুটিন-নির্যাতন সইতে যাওয়ার রাস্তায় সে আকাশভরা জ্যোত্‌স্নার সামনে থমকে দাঁড়ায়। এবং যৌনতার সব অনুভূতি হারিয়ে ফেলার পরেও, তার প্রথম ও একমাত্র প্রেমিকের বাহুবন্ধনে অন্য মেয়েকে দেখলে তার তীব্র ঈর্ষা হয়, এখনও। জেরোমের বাড়ির দরজা থেকে ফিরে, টিলার ওপরে শীতের পাতাঝরা গাছটার সামনে নিঃস্ব, নিঃসঙ্গ জো এটাই ছবির শেষ দৃশ্য হতে পারত। কিন্তু অতটা রোম্যান্টিক দার্শনিকতায় তো ছবিটা শেষ করতে চাননি পরিচালক। তাই পিস্তল পকেটে জো’কে আবার ফিরে যেতে হবে জেরোমের কাছে। কিন্তু তার বন্দুক থেকে গুলি বেরোবে না। বরং জেরোমই তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বাড়ির পেছনের ওই নোংরা গলিতে ফেলে যাবে। যেখান থেকে সেলিগম্যান তাকে কুড়িয়ে আনবেন। তা হলেই তো সম্পূর্ণ হবে নিম্ফোম্যানিয়াকের জীবনবৃত্ত বা বৃত্তান্ত!

sanajkol@gmail.com

আনন্দবাজার পত্রিকা রাজ্য জুড়ে তাদের সমস্ত ছাপাখানা বন্ধ করে দিল। এ বার থেকে এই কাগজ শুধুমাত্র ডিজিটাল সংস্করণেই পাওয়া যাবে। এই সংস্থা বাজারে আনল নতুন পেপার-রিডার ‘সিএমএস’ (কার্বন মসলিন শিট)। এই পরদাটি খবরের কাগজের পাতার মতোই বড় ও হালকা, আধাস্বচ্ছ। ভাঁজ করে যেখানে খুশি নিয়ে যাওয়া যায়। ক্যালেন্ডারের মতো গুটিয়েও রাখা যায়। এর সঙ্গে আনন্দবাজারের ‘ই-পেপার’-এর সংযোগ করে দেওয়া হল। যন্ত্রটি আনন্দবাজার রিটেলার্স বা যে কোনও স্মার্ট-কিয়স্ক থেকে কেনা যাবে। ‘টাচ’ করলেই যন্ত্রটি চালু হবে ও মাসিক ভাড়া দিলে প্রতি দিনের সংবাদ ‘আপডেটেড’ হবে। এতে খবরের ভিডিয়ো-টুকরোও আঙুলের ছোঁয়ায় দেখা যাবে। মনে থাকতে পারে, ‘গ্রিন অ্যাপ্ল’ সংস্থার তৈরি যন্ত্রটি ঠিক এক বছর আগে ভারতে প্রোমোট করা হচ্ছিল। সংবাদগোষ্ঠীগুলি তখন গ্লোবাল ওয়ার্মিং রোধের জন্য ‘গ্রিন ইজ কিং’ প্রকল্পে কাজ শুরু করেছে, কিন্তু নিজেদের পুরোপুরি ‘পেপারলেস’ করে তুলতে পারেনি। উদ্ভাবনটিকে তারা লুফে নেয় ও নতুন প্রযুক্তিতে কর্মীদের প্রশিক্ষিত করতে শুরু করে। তার পরেই এল আজকের দিন। আনন্দবাজার পত্রিকা সবার আগে নতুন ব্যবস্থায় পারদর্শী হল ও জিতে নিল ভারতের প্রথম ডিজিটাইজ্ড সংবাদপত্রের শিরোপা। বাকি সংবাদপত্রগুলিও কয়েক দিনের মধ্যেই যন্ত্রটির ব্যবহার শুরু করবে বলে ঘোষণা করেছে। তবে, আলাদা আলাদা সংবাদপত্রের জন্য আলাদা আলাদা সিএমএস কিনতে হবে না। একটাই যন্ত্র কিনে, যে বা যে যে সংবাদপত্র পড়তে চান তাদের ই-পেপারও পড়া যাবে, নির্ধারিত দাম দিলেই। তবে, ‘মাল্টি-পেপার ডিভাইস’ হিসেবে এটিকে ব্যবহার করলে, দাম ‘বিটকয়েন’-এই দিতে হবে। এত কিছুর পরেও কিছু বাঙালির হা-হুতাশ চলছে পাড়ায় পাড়ায়। এ বছর থেকে মাস গেলে আর কেজি-দরে পুরনো খবরের কাগজ বিক্রি করা যাবে না যে!

সৌমিত পাল, বিবেকানন্দ রোড, বারাসত

লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট? ঠিকানা:

টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১।

অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in

rabibasariyo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy