Advertisement
১১ নভেম্বর ২০২৪
Choosing and Using Cooking Oils

তেলের দোষেই কিন্তু যত রোগবালাই, রান্নার তেল কেনার আগে কী কী যাচাই করে নেবেন?

রান্নায় যে বেশি তেল খাওয়া হচ্ছে তা নয়, কোন তেল খাচ্ছেন এবং কী ভাবে, তা-ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। বাজার থেকে কী তেল কিনছেন, তার গুণাগুন, উপাদান যাচাই করে নিচ্ছেন তো?

How to choose the right cooking oil

রান্নার তেল কেনার সময়ে যা যা অবশ্যই দেখে নিতে হবে। ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:১১
Share: Save:

বাঙালির রান্না মানেই তেলে-ঝালে ভরপুর। সিদ্ধ খেলেও তাতেও কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেল না মেশালে ঠিক স্বাদ খোলে না। ভাজাভুজি হলে তো কথাই নেই। ছাঁকা তেলে ডুবিয়ে না ভাজলে মনই ভরে না। সারা দিনে যতই ৩-৪ চামচ তেল খাওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, লক্ষ্মণরেখা প্রায়শই পার হয়ে যায়৷ ফলে সমস্যাও বাড়ে ৷ রান্নায় যে বেশি তেল খাওয়া হচ্ছে শুধু তা-ই নয়, কোন তেল খাচ্ছেন এবং কী ভাবে, তা-ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। বাজার থেকে কী তেল কিনছেন, তার গুণাগুণ, উপাদান যাচাই করে নিচ্ছেন কি না তা-ও কিন্তু জরুরি। তা ছাড়া তেল কী ভাবে ব্যবহার করতে হয়, সে সম্বন্ধে ধারণা না থাকলেও বিপদ বাড়বে।

রান্নার তেল কেনার সময়ে ঠিক কী কী দেখে নেবেন?

১) সবচেয়ে আগে যাচাই করতে হবে তেলের উপাদান। কেনার সময়ে লেবেলে দেখে নেবেন স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স ফ্যাট কতটা আছে। যদি এই দুই ফ্যাটের পরিমাণই অনেক বেশি থাকে, তা হলে সেই তেলে রান্না করা খাবার খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে৷ যা থেকে হার্টের রোগের ঝুঁকিও বাড়বে।

২) ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর তথ্য অনুযায়ী, তেলে ওমেগা ৬ ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অনুপাতও দেখে নিতে হবে। সাধারণত, তেলে ওমেগা ৬ ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অনুপাত ২:১ থেকে ৪:১–এর মধ্যে হওয়া উচিত ৷ তেল কেনার সময়ে এই অনুপাত না বুঝলেও দেখে নিতে হবে ওমেগা ৩ বা ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে কি না। যদি ভিটামিন ই থাকে, তা হলেও খুব ভাল।

৩) তেলের স্মোক পয়েন্টও জরুরি বিষয়। কোন তেল কত তাপ সহ্য করতে পারে অর্থাৎ কত তাপমাত্রায় পুড়ে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি করতে শুরু করে— তাকে বলে ‘স্মোক পয়েন্ট’। এটি দেখেও তেলের ভাল-মন্দ বিচার করা হয়।

এমন তেল কেনা উচিত যা উচ্চ তাপে ভেঙে গিয়ে খারাপ রাসায়নিক তৈরি করতে না পারে ৷ যেমন, বাদাম, সর্ষে, ক্যানোলা, সানফ্লাওয়ার, সয়াবিন, রাইস ব্র্যান বা তিল তেল ৷ অলিভ তেলের স্মোক পয়েন্টও বেশ কম ৷ তাই রান্নায় অলিভ তেল ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর।

নারকেল তেলের স্মোক পয়েন্ট ৩৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট, ভাজাভুজির জন্য এই তেল বেশ ভাল।

অলিভ তেলের স্মোক পয়েন্ট ৩২৫-৩৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং সয়াবিন তেলের স্মোক পয়েন্ট ৪৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কাছাকাছি। উচ্চ তাপে কিছু ভাজা, ডিপ ফ্রাই করার জন্য এই দুই তেল খুবই ভাল।

সূর্যমুখী তেলের স্মোক পয়েন্ট ৪৭৫-৫০০ডিগ্রি ফারেনহাইট। উচ্চ তাপে কোনও কিছু রান্না করতে এই তেলই বেশি ব্যবহার করা হয়।

সর্ষের তেলের স্মোক পয়েন্ট ৪৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কাছাকাছি। সর্ষের তেল পরিমিত ব্য়বহারে কোনও ক্ষতি হয় না। তবে হার্টের রোগী বা যাঁদের উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই রান্নায় তেল খেতে হবে।

যদি সব রকম ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণ পেতে চান, তা হলে তেল মিলিয়ে–মিশিয়ে ব্যবহার করাই উচিত ৷ যেমন সর্ষে, রাইস ব্র্যান বা অলিভ তেল অথবা সানফ্লাওয়ার তেল। মনে রাখতে হবে, ভাজাভুজির পর বেঁচে যাওয়া তেল পরে আর ব্যবহার না করাই ভাল। পোড়া তেলে ফের রান্না করলে বা ভাজাভুজি করলে তার থেকে শরীরে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আরও বাড়বে ৷ ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। শরীর বুঝেই যে কোনও কিছু খাওয়া উচিত। আপনার জন্য কোন তেল উপকারী, তা পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়া ভাল।

অন্য বিষয়গুলি:

Cooking Oil cooking tips Cooking Method
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE