রথযাত্রার উৎসব শেষ হয়নি এখনও। শনিবার উল্টো রথযাত্রা। তার আগে যে সমস্ত এলাকায় রথ টানা হয়েছে, সেখানে আটদিন ধরে চলবে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার আদর আপ্যায়ন। ‘রথে’ মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তিন দেবতার বিগ্রহকে। সেখানে প্রতিদিন জগন্নাথ দেবকে সাধ্যমতো ভোগ নিবেদন করেন ভক্তেরা। কোথাও সাজিয়ে দেওয়া হয় খিচুড়ি, লাবড়া, আলুরদম, মরসুমি সব্জির বিভিন্ন তরকারি, পাঁচ রকম ভাজা, চাটনি, পায়েস ইত্যাদি। কোথাও আবার গুণে গুণে ৫৬ রকম খাবার দেওয়া হয় তিন দেবতাকে। যেমন রীতি রয়েছে খাস পুরীর জগন্নাথের মন্দিরে কিংবা পুরীর গুন্ডিচা বা মাসির বাড়িতেও। পুরীতে জগন্নাথের সেই ৫৬ ভোগেরই অন্যতম হল পটল রসা।
গরমকালে বাজারে যখন তাজা সুস্বাদু পটল পাওয়া যায়, তখন তার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন না পুরীর দেবতাও। তবে এম জনতার রান্না আর জগন্নাথের মন্দিরের ভোগ রান্নার তফাত আছে। পটলের রসা পুরীর মন্দিরে কী ভাবে রান্না করা হয়, তারই প্রণালী দেওয়া রইল।
উপকরণ: ৭-৮ টি পটল
১ কাপ কোরানো নারকেল
১ টেবিল চামচ আদা বাটা
২-৩ টি চেরা কাঁচা লঙ্কা
২ টেবিল চামচ ঘি
২ টেবিল চামচ সাদা তেল (প্রয়োজন হলে)
১ চা চামচ গোটা জিরে
১ চা চামচ গোটা ধনে
২ টি লবঙ্গ
২ গাঁট মাপের দারচিনি
স্বাদমতো নুন
সামান্য চিনি
প্রণালী: প্রথমে কড়াই আঁচে বসিয়ে তাতে গোটা জিরে, গোটা ধনে, লবঙ্গ এবং দারচিনির টুকরো হালকা হাতে নাড়াচাড়া করে সুগন্ধ বেরোলে তুলে নিন। দেখবেন মশলা যেন কোনও ভাবেই পুড়ে না যায়। তাহলে কিন্তু স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে। মশলা ঠাণ্ডা হলে গুঁড়িয়ে নিন।
এ বার পটল ভাল ভাবে ধুয়ে অল্প খোসা রেখে ছড়িয়ে নিয়ে মোটা মোটা টুকরোয় কেটে নিন। কড়াইয়ে ঘি গরম করে (দরকার হলে ঘিয়ের সঙ্গে সামান্য তেল দিতে পারেন) তার মধ্যে পটলের টুকরো গুলো দিয়ে ভাজতে থাকুন। ঢাকা দিয়ে রেখে রেখে ভজলে পটল দ্রুত সেদ্ধ হবে।
পটল ৮০-৯০ শতাংশ সেদ্ধ হয়ে এলে ওর মধ্যে দিন আদাবাটা। খানিক ক্ষণ নাড়াচাড়া করে দিন ভেজে রাখা মশলা এবং করানো নারকেল মশলার সঙ্গে পটল ভাল ভাবে মিশিয়ে দিয়ে দিন সামান্য জল, স্বাদমতো নুন এবং কয়েক দানা চিনি। শেষে চেরা কাঁচালঙ্কা ছড়িয়ে চাপা দিয়ে রান্না হতে দিন মিনিট পাঁচ - সাতেক।
তার পরে উপরে কয়েক ফোঁটা ঘি ছড়িয়ে চাপা দিয়ে আঁচ বন্ধ করুন। মিনিট পাঁচেক ও ভাবেই রেখে পরিবেশন করুন। এই তরকারি ভাত, পোলাওয়ের সঙ্গে যেমন ভাল লাগবে, তেমনই রুটি, পরোটার সঙ্গেও খাওয়া যাবে।