Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Aliens

অবাস্তব নয় ইটি-জাদু, ভিন্‌গ্রহীদের অস্তিত্ব মেনে নিলেন অনেক বিজ্ঞানী

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’ আয়োজিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এক অনলাইন বিতর্কসভায় এমনটাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ১৪:১৪
Share: Save:

না, কোনও অবাস্তব কল্পনা নয়। চলচ্চিত্রের মনগড়া কাহিনিতে বাস্তবে এসে পড়া ‘ইটি’ বা ‘জাদু’ও নয়। এই ব্রহ্মাণ্ডে তো বটেই, এই সৌরমণ্ডলেরই কোনও না কোনও দিকে রয়েছে ভিন্‌গ্রহীরা। তারা যে শুধু কোনও একটা মুলুকেই রয়েছে, এমনও নয়। রয়েছে আমাদের এই মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিরই আরও বহু নক্ষত্রমণ্ডলে। পৃথিবীর অন্যতম সেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ এ কথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’ আয়োজিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এক অনলাইন বিতর্কসভায়।

উল্লেখ্য, ‘ভিন্‌গ্রহীদের যান’ (‘আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা’) পর্যবেক্ষণের যে সব নথিপত্র রয়েছে পেন্টাগনের হাতে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সেই সব তথ্য চলতি মাসেই জনসমক্ষে আনার নির্দেশ দিয়েছে। গত দু’দশকে এমন ১২০টি ঘটনার পর্যবেক্ষণের দাবি করা হয়েছে পেন্টাগনের তরফে।

সেই দাবির সত্যাসত্য নিয়ে যখন কৌতূহল সর্বত্র তখনই, বিশ্বের অন্যতম সেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের মতামত, ভিন্‌গ্রহীদের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ সংশয় কিছুটা কাটাতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। সঙ্গে এই প্রশ্নও তুলে দিল, আমরা তাদের খোঁজ পেতে পারি কি না। পেলে, কত দিনে?

বিতর্কসভায় বিশিষ্ট অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট জন্টি হর্নার জানিয়েছেন, গত কয়েক দশকে জানা গিয়েছে ব্রহ্মাণ্ডে প্রতিটি নক্ষত্রেরই রয়েছে গ্রহ। শুধু মিল্কি ওয়েতেই রয়েছে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র। এমন আরও কোটি কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে ব্রহ্মাণ্ডে। তাই এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও কোনও প্রাণের অস্তিত্ব নেই। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রতি ১০০ কোটি নক্ষত্রের অন্তত একটিতে প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকা প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। সেই হিসাবে শুধু মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতেই অন্তত ৪০০টি নক্ষত্রে প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকা প্রাণের যে অস্তিত্ব রয়েছে, এটা কোনও অবাস্তব কল্পনা হতে পারে না। সমস্যাটা হল, মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব ১ লক্ষ আলোকবর্ষ। দু’টি নক্ষত্রের মধ্যে দূরত্ব কম করে ১০ হাজার আলোকবর্ষ। তাই খুব তাড়াতাড়ি আমাদের পাঠানো বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে যাবে এটা ভাবা অনুচিত। তাদের রেডিও সিগন্যাল বার্তা এতটাই উন্নত হতে পারে যাতে আমাদের পাঠানো বার্তার সিগন্যাল তাদের কাছে নগণ্য মনে হতে পারে।

প্রায় একই মত বিশিষ্ট জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী স্টিভেন টিঙ্গের। তাঁর কথায়, “অবশ্যই এই ব্রহ্মাণ্ডের কোথাও না কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকি তা রয়েছে মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিরই আরও বহু কোটি নক্ষত্রে। কারণ প্রাণ সৃষ্টির যা যা উপাদান, যে যে মৌলের প্রয়োজন, তার খোঁজ ইতিমধ্যেই মিলেছে ব্রহ্মাণ্ডের নানা প্রান্তে। তবে যে ধরনের প্রাণের হদিশ এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে পৃথিবীতে ভিন্‌গ্রহের প্রাণ তার চেয়ে অন্য রকমের হতেই পারে। তা যেমন হতে পারে প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকা ভিন্‌গ্রহী, আবার সেই প্রাণ হতে পারে কোনও অজানা ব্যাক্টেরিয়া বা কোনও অণুজীব।”

বিশিষ্ট জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী হেলেন মেইনার্ড-ক্যাসলের বক্তব্য, ভিন্‌গ্রহে প্রাণ রয়েছেই। তা আবিষ্কার শুধুই সময়ের অপেক্ষা। বৃহস্পতির দু’টি চাঁদ ‘ইউরোপা’ আর ‘গ্যানিমিডে’র পিঠে পুরু বরফের আস্তরণের নীচে সুবিশাল মহাসাগর ও সমুদ্র রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাই সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ, চেনা জানা প্রাণ যে তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে, বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে, সেই তাপমাত্রাই রয়েছে সেখানে। একই কথা খাটে শনির একটি চাঁদ ‘টাইটান’-এর ক্ষেত্রেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aliens
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE