লাল গ্রহে খোঁজ মিলল পারমাণবিক অক্সিজেনের

লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এ বার খোঁজ পাওয়া গেল অক্সিজেনের। তবে তা পারমাণবিক অক্সিজেন। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তর অর্থাৎ ‘মেসোসফিয়ারে’ দেখা মিলেছে এই অক্সিজেনের।

‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ নামের একটি পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। নাসা এবং জার্মানির মহাকাশ গবেষণা দফতর যৌথ ভাবে মহাকাশে তৈরি করেছে ‘স্ট্যাটোসফেরিক অবজারভেটারি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি’ বা সোফিয়া নামের একটি গবেষণা কেন্দ্র। বোয়িং৭৪৭এসপি বিমানকে বিশেষ ভাবে পরিবর্তন করে বানানো হয়েছে এই কেন্দ্রটি। বিমানের একটি দরজা খুলে সেখানেই টেলিস্কোপ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই বিমানে। তবে যে সে টেলিস্কোপ নয়, এ-ও এক বিশেষ ধরনের টেলিস্কোপ। সাধারণত যে সব মহাজাগতিক বস্তুকে ইনফ্রারেড তরঙ্গেই শুধুমাত্র দেখতে পাওয়া যায়, এই টেলিস্কোপে চোখ রাখলে সন্ধান মিলবে তাদের। পৃথিবী থেকে ৩৭ হাজার থেকে ৪৫ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়তে উড়তে লাল গ্রহকে টেলিস্কোপ-বন্দি করেছে সোফিয়া।

আর এই টেলিস্কোপের সাহায্যেই নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে খোঁজ পেলেন পারমাণবিক অক্সিজেনের। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পারমাণবিক অক্সিজেন থেকে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের একটা সামগ্রিক চিত্র বুঝতে পারা যেত।

বলা যেতে পারে, পারমাণবিক অক্সিজেন অত্যন্ত দুরন্ত! বসে থাকার পাত্র সে নয়। তাই পৃথিবীতে তাকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দু’টি অক্সিজেনের পরমাণু একে অপরের সঙ্গে জুড়ে অণু হিসেবেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকে।

কতটা অক্সিজেন মিলল মঙ্গলে? বিজ্ঞানী পামেলা মার্কুমের কথায়, ‘‘মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে পারমাণবিক অক্সিজেন এতটাই দুষ্ট যে তাকে মাপা প্রায় অসম্ভব।’’ তবে গবেষকদের প্রাথমিক অনুমাণ, যতটা পারমাণবিক অক্সিজেন পাবেন বলে আশা করেছিলেন তাঁরা, তার অর্ধেকের মতো পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ তাঁরা। বিজ্ঞানীদের আশা, হয়তো আরও উঁচুতে উঠলে তল পাওয়া যেতে পারে মঙ্গলের পারমাণবিক অক্সিজেনের। আর লাল গ্রহকে জানার সুযোগ মিলতে পারে আরও খানিকটা।