ইন্টারনেটে আড়ি পেতে তথ্য হ্যাক হয়ে যাওয়ার ঘটনা আকছার ঘটছে। আর সেখানে সুরক্ষা দেয় ‘এনক্রিপশন’। এতে কোনও বার্তা বা তথ্যকে সংকেতে পরিণত করে সুরক্ষিত করা হয়, যাতে প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া মাঝপথে কেউ তা দেখতে বা তাতে হেরফের করতে না পারে। সম্প্রতি বিশ্বের সব থেকে সুরক্ষিত ‘এনক্রিপশন’ তৈরির উদ্দেশ্যে যে চারটি পদ্ধতিকে নির্বাচন করা হয়েছে আমেরিকায়, তার একটি তৈরির পিছনে রয়েছেন দুই বাঙালি— সুজয় সিংহ রায় এবং অংশুমান কর্মকার।
সুজয় ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক করেছেন শিবপুর আইআইএসটি থেকে। খড়গপুর আইআইটি হয়ে বেলজিয়ামের কেইউ লুভন থেকে পিএইচডি করেছেন। সুজয় বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাড়ি বোলপুরে। পুরুলিয়ার ঝালদার ছেলে অংশুমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র। তিনিও খড়গপুর আইআইটিতে পড়ার পরে পিএইচডি করছেন বেলজিয়ামের ওই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
সুজয় সোমবার ফোনে বোঝালেন, আমাদের তথ্য সুরক্ষিত করছে ‘এনক্রিপশন’। যেমন হোয়াটসঅ্যাপে লেখা থাকে 'এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড'। আবার ওয়েব ব্রাউজ়ার, যেমন গুগল ক্রোম বা ফায়ারফক্স-এ ‘ব্রাউজ়িং বক্স’-র পাশে তালার ছবি থাকে, যেখানে লেখা থাকে 'সিকিওর' অর্থাৎ সুরক্ষিত। যাঁর কাছে এই তালার চাবি রয়েছে, তিনিই তালা খুলে গোপন তথ্যটি জানতে পারবেন। চাবি না থাকলে তালা ভেঙে ফেলতে হবে। সমস্ত গোপন তথ্য এবং এই চাবি (কি) হল ডিজিটাল ইনফরমেশন। যেগুলি আমাদের কম্পিউটারে বা স্মার্টফোনে থাকে। ‘এনক্রিপশন’ পদ্ধতি কিছু জটিল গাণিতিক সমস্যার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, যে সমস্যাগুলি একমাত্র সঠিক চাবি প্রয়োগেই সমাধান করা সম্ভব। এমনকি, সুপার কম্পিউটারও সঠিক চাবি না পেলে এই গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে অক্ষম। তবে অতি শক্তিশালী ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটার’-এর সহায়তায় কিছু ‘এনক্রিপশন’ পদ্ধতি সহজেই ভেঙে ফেলা সম্ভব হবে।