Advertisement
E-Paper

অগ্ন্যাশয়-ক্যানসার নিয়ন্ত্রণের দাবি বঙ্গ বিজ্ঞানীর

অনিমেষ ধর নামে বাঙালি এই বিজ্ঞানী এখন আমেরিকার ক্যানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের ক্যানসার বায়োলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০১:১৩
অনিমেষ ধর

অনিমেষ ধর

তার হানাদারি সহজে ধরা পড়ে না। প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার যখন ধরা পড়ে, দেখা যায়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসার আর বিশেষ সময়ই থাকে না। নিরাময় নয়, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ তিনি আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী।

অনিমেষ ধর নামে বাঙালি এই বিজ্ঞানী এখন আমেরিকার ক্যানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের ক্যানসার বায়োলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। অন্য দুই বাঙালি বিজ্ঞানী চান্দ্রেয়ী ঘোষ ও শান্তনু পাল এবং অন্য তিন ভারতীয় বিজ্ঞানী প্রসাদ দণ্ডবতে, শ্রীকান্ত অনন্ত ও ধর্মলিঙ্গম সুব্রহ্মণ্যম গবেষণায় তাঁর সঙ্গী। ওই গবেষণায় সাহায্য করেছেন শ্রীলঙ্কার সুমেধা গুণবর্ধনে এবং আমেরিকার ক্যামেরুন ওয়েস্ট-ও। আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘অঙ্কোটার্গেট’-এ তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

অনিমেষবাবু জানান, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সহজে চিহ্নিত করা যায় না। সাধারণ হাল্কা মানের জন্ডিস এই ক্যানসারের প্রধান উপসর্গ। কিন্তু হাল্কা জন্ডিস হলে কেউই অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের পরীক্ষা করান না। ফলে তা ধরা পড়ে না। যখন ধরা পড়ে, অনেকটাই ছড়িয়ে যায় ক্যানসার। ছড়ায় মূলত ফুসফুস আর যকৃতে।

‘‘এখন অনেক ক্ষেত্রে অন্য রোগ নির্ণয়ের সময় অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার ধরা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে আটকে রাখার কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না,’’ বলছেন অনিমেষবাবু। তিনি জানান, তাঁরা ১৫ বছর ধরে মার্কিন মুলুকে গবেষণা চালাচ্ছেন। তাঁর ওষুধ পরীক্ষা করা হয়েছে সাদা ইঁদুর, মানুষের কোষের উপরেও। দেখা গিয়েছে, হলুদের অন্যতম উপাদান কুরকুমিন, এক ধরনের ফুলের উপাদান হারমিন এবং এক ধরনের ওষধি গাছের উপাদান আইসোভ্যানিলিনের সংমিশ্রণে তৈরি ওষুধটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার দমন করতে পারছে।

অনিমেষবাবু বলেন, ‘‘ক্যানসার হলে এক ধরনের ‘ক্লাস্টার অব জিন’ বা জিন-মণ্ডলী খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার প্ররোচনায় ক্যানসার-আক্রান্ত কোষ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিনের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমাদের ওষুধ ক্যানসার-আক্রান্ত কোষের বৃদ্ধি আটকাতে সমর্থ। তা যকৃৎ বা ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ছে না। কষ্টও কমছে।’’ ওই বিজ্ঞানীর দাবি, আমেরিকায় খাদ্যের মধ্যে পুষ্টি হিসেবে তাঁর ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর ফর্মুলা নিয়ে ভারতীয় সংস্থাও এই ওষুধ বানাতে পারবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা অনেক নথিপত্র ঘেঁটে দেখেছি, আমাদের প্রাচীন ইউনানি চিকিৎসায় কুরকুমিন, হারমিন এবং আইসোভ্যানিলিনের মতো উপাদান ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে।’’

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধরা পড়তে দেরি হয় বলে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। অনিমেষবাবুর আবিষ্কৃত ওষুধ অন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের শরীরেও প্রয়োগ করে দেখতে হবে। তা যদি সফল হয়, এই আবিষ্কারকে স্বাগত জানানো উচিত। এর উপাদানগুলিও কম খরচে পাওয়া যায়। ভারতের মতো দেশে সুবিধাই হবে রোগীদের।’’

Cancer Animesh Dhar pancreatic cancer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy