চলতি বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল এবং বড় পূর্ণিমার চাঁদ দেখা যাচ্ছে বুধবার! সূর্যাস্তের পরেই আকাশে জ্বল জ্বল করছে চাঁদটি। বিজ্ঞানীরা এই চাঁদকে ‘সুপারমুন’ বলেন। নভেম্বরের এই উজ্জ্বল চাঁদ ‘বিভার মুন’ নামেও পরিচিত। চলতি বছর পৃথিবীর আকাশে তিন বার ‘সুপারমুন’ দেখার সুযোগ মিলবে। অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর। অক্টোবরে বিশ্ববাসী দেখেছিলেন ‘হার্ভেস্ট মুন’। আর ডিসেম্বরের এই দৃশ্যের নাম হবে ‘কোল্ড মুন’। তবে বুধবার যে চাঁদ দেখা যাচ্ছে, সেই তুলনায় অক্টোবর এবং ডিসেম্বরের ‘সুপারমুন’ ছোট এবং কম উজ্জ্বল!
বুধবার পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯৮০ কিলোমিটার। চলতি বছর পৃথিবীর এত কাছে চাঁদ আর আসেনি। অন্যান্য পূর্ণিমার তুলনায় চাঁদ প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার কিলোমিটার পৃথিবীর কাছে রয়েছে। এই নৈকট্য চাঁদের আপাত ব্যাস এবং উজ্জ্বলতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে এই চাঁদ ভূপৃষ্ঠে এক হালকা ছায়া ফেলে।
তবে কেন এই চাঁদকে ‘বিভার মুন’ বলা হয়, তা নিয়ে অনেকের মনে কৌতূহল রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ইউরোপ এবং আমেরিকায় স্তন্যপায়ী প্রাণী বিভারদের নিয়ে নানা গল্প, লোককথা রয়েছে। এই প্রাণীরা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে সাহায্য করে। নাসার তরফে জানানো হয়েছে, বছরের এই একাদশতম মাস নভেম্বরে উত্তর-পূর্ব আমেরিকা এবং কানাডায় বিভারেরা শীতযাপনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। শীতের জন্য খাবার জমিয়ে রাখতে শুরু করে তারা। নভেম্বরের পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় কাজ গুছিয়ে রাখে এই প্রাণী। সেই কারণে বুধবারের পূর্ণিমার এই চাঁদ ‘বিভোর মুন’ নামে পরিচিত।
কী ভাবে এই ‘সুপারমুন’ দেখা যায়?
কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশ থেকে ‘সুপারমুন’ দেখা যাবে, এমন কোনও তত্ত্ব নেই। বিশ্বের সব জায়গা থেকেই দেখা মিলবে নভেম্বরের এই উজ্জ্বল চাঁদকে। তবে এই চাঁদকে স্পষ্ট ভাবে দেখতে হলে শহরের আলোকিত এলাকায় থাকা চলবে না। কোনও পার্ক বা খোলা মাঠ কিংবা জলশায়ের ধারে দাঁড়ালে স্পষ্ট দেখা মিলবে ‘বিভোর মুন’-এর। এই দৃশ্য উপভোগ করতে কোনও টেলিস্কোপের প্রয়োজন নেই। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সূর্যাস্তের পর পরই এই দৃশ্য আকাশের বুকে দৃশ্যমান হবে। যদিও আকারের পার্থক্য খালি চোখে তেমন বোঝা না-ও যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
আকাশ যদি মেঘলা থাকে তবে চাঁদের উজ্জ্বলতা অনেকাংশে স্পষ্ট না-ও হতে পারে। দিল্লির মতো দূষণজনিত শহরেও ‘বিভোর মুন’-এর উজ্জ্বলতা কম থাকবে। তবে দেখা যাবে না এমন নয়। সূর্যাস্তের পরে পূর্ব আকাশে তাকালে দেখা যাবে সেই দৃশ্য। ভাল ভাবে দেখতে চাইলে দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করা যেতে পারে।