Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Science News

৫ লক্ষ সুইমিং পুল ভরিয়ে দেওয়ার জল আছে কাছেপিঠের গ্রহাণুতে!

আমাদের আশপাশেই রয়েছে অফুরন্ত জলে ভরা এমন সর্বাধিক ৮০টি গ্রহাণু। খুব কম হলেও সেই সংখ্যাটা কিছুতেই নেমে যাবে না ২৬-এর তলায়। চাঁদ থেকে জল আনার চেয়ে অনেক সহজে জল নিয়ে আসা যাবে ওই গ্রহাণুগুলো থেকে।

গ্রহাণু। - ফাইল ছবি।

গ্রহাণু। - ফাইল ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৫
Share: Save:

এই সৌরমণ্ডলে আমাদের ঘরের কাছেই জল আর খনিজ পদার্থের অফুরন্ত ভাণ্ডারের খবর দিলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম তাঁরা হিসেব কষে দেখালেন, যে পরিমাণে জল রয়েছে আমাদের ঘাড়ে কার্যত নিশ্বাস ফেলা গ্রহাণুদের মধ্যে, তা দিয়ে অলিম্পিকের প্রায় দেড় থেকে পাঁচ লক্ষ সুইমিং পুল ভরিয়ে দেওয়া যাবে।

তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের আশপাশেই রয়েছে অফুরন্ত জলে ভরা এমন সর্বাধিক ৮০টি গ্রহাণু। খুব কম হলেও সেই সংখ্যাটা কিছুতেই নেমে যাবে না ২৬-এর তলায়। চাঁদ থেকে জল আনার চেয়ে অনেক সহজে জল নিয়ে আসা যাবে ওই গ্রহাণুগুলো থেকে।

গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অফ জিওফিজিক্যাল রিসার্চ’-এর ৬ ডিসেম্বর সংখ্যায়।

আমাদের কাছেপিঠে থাকা আর একটি গ্রহাণু

গবেষণা এও জানিয়েছে, চাঁদের থেকেও সহজে পৌঁছে যাওয়া যায়, জলে ভরা এমন ৩৫০টি থেকে ১ হাজার ৫০টি গ্রহাণু রয়েছে আমাদের আশপাশেই। যাদের বলা হয় ‘নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট’ বা ‘এনইও’।

আরও পড়ুন- পৃথিবীতে প্রাণের উপাদান এনেছিল গ্রহাণুই, দাবি নাসার​

আরও পড়ুন- মহাকাশে হাঁসজারু! বিশাল লেজ-সহ গ্রহাণুর হদিশ

মূল গবেষক জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু রিভকিন গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ওই গ্রহাণুগুলোতে যে পরিমাণে খনিজ পদার্থ রয়েছে তা থেকে প্রচুর পরিমাণে জল বের করে আনা (নিষ্কাশন) সম্ভব। সেই খনিজ পদার্থ থেকে বের করে আনা যেতে পারে ৪০ হাজার কোটি থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি লিটার জল।

গ্রহাণু ‘বেন্নু’তে জলের অস্তিত্বের আঁচ পেয়েছে নাসা। দেখুন ভিডিয়ো

এই ব্রহ্মাণ্ডে গ্রহাণুদের আদত ঠিকানা মঙ্গল আর বৃহস্পতির মধ্যে থাকা গ্রহাণুমণ্ডল বা অ্যাস্টারয়েড বেল্টে। ৫০০ কোটি বছরেরও আগে, সৌরমণ্ডলের জন্মের পর এই অঞ্চলেই সৃষ্টি হয় গ্রহাণুদের। সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় সৌরমণ্ডলের বাইরের প্রান্ত থেকে ভিতরে ঢোকার পর এই অঞ্চলেই অনেক ধূমকেতুর মাথা আর বরফের লেজ তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীদের বড় একটি অংশের বিশ্বাস, পৃথিবীতে জলও এনেছিল এই গ্রহাণুই। আদি কালে পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুদের একের পর এক সংঘর্ষে জলে ভরে গিয়েছিল পৃথিবী।

পরে এও জানা গিয়েছে, শুধু গ্রহাণুমণ্ডলেই নয়, আমাদের পৃথিবীর আশপাশেও রয়েছে এমন প্রচুর গ্রহাণু বা নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট। ১৯ হাজারেরও বেশি এমন গ্রহাণু এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। কতটা জল রয়েছে আমাদের কাছেপিঠে থাকা গ্রহাণুতে, তা আঁচ করতে ‘বেন্নু’ গ্রহাণুতে ইতিমধ্যেই মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’ পাঠিয়েছে নাসা। সেখান থেকে খনিজ পদার্থ তুলে নিয়ে আসার কথা নাসার মহাকাশযানের। তার আগেই কাছেপিঠে থাকা গ্রহাণুগুলোতে কতটা জল ও খনিজ পদার্থ থাকতে পারে তার হিসেব কষে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম।

রিভকিন গবেষণাপত্রে এও লিখেছেন, ওই গ্রহাণুগুলোতে রয়েছে লোহা-সহ প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ। আর সেগুলি রয়েছে লোহা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থের অক্সাইড যৌগ হিসেবে।

ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: নাসা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE