Advertisement
E-Paper

ক্যানসারে ‘ব্রেক’ কষে নোবেল জেমস অ্যালিসন এবং তাসুকু হঞ্জোর

নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে আজ সকালে ঘোষণা করা হয় দুই বিজ্ঞানীর নাম। তাঁদের গবেষণার বিষয় খানিক এ রকম—মানুষের শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। শরীরে বাসা বাঁধার সঙ্গে সঙ্গে সেই ‘ইমিউনো সিস্টেম’টাকেই সবার আগে আক্রমণ করে ক্যানসার। 

জাপানের তাসুকু হঞ্জো (বাঁ দিকে) এবং আমেরিকার জেমস অ্যালিসন

জাপানের তাসুকু হঞ্জো (বাঁ দিকে) এবং আমেরিকার জেমস অ্যালিসন

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১১
Share
Save

ক্যানসারের মুখে শরীর যেন ব্রেক-ফেল করা গাড়ি। কী ভাবে তার ব্রেক কষা যায়, তারই উপায় বাতলে দিয়ে এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন প্রবীণ দুই বিজ্ঞানী। আমেরিকার জেমস অ্যালিসন এবং জাপানের তাসুকু হঞ্জো।

নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে আজ সকালে ঘোষণা করা হয় দুই বিজ্ঞানীর নাম। তাঁদের গবেষণার বিষয় খানিক এ রকম—মানুষের শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। শরীরে বাসা বাঁধার সঙ্গে সঙ্গে সেই ‘ইমিউনো সিস্টেম’টাকেই সবার আগে আক্রমণ করে ক্যানসার।

এই হামলা কী ভাবে আটকানো যায়, তার সন্ধান দিয়েছেন ওঁরা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, ‘ইমিউনো চেকপয়েন্ট থিয়োরি’। নোবেল কমিটির কথায়, ‘‘ক্যানসার প্রতিরোধে যে গতানুগতিক চিকিৎসা পদ্ধতির কথা আমরা জানি, সেই ভাবনাটাকেই বদলে দিয়েছে দুই বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত তত্ত্ব।’’

ক্যানসারের চেনা পরিচিত চিকিৎসা বলতে, অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপি। বলাই যায়, ৭০ বছর বয়সি অ্যালিসন এবং ৭৬-এর হঞ্জোর হাত ধরে এ বার ওই তিন পদ্ধতির সঙ্গে জোরদার ভাবে যুক্ত হতে চলেছে আর এক চিকিৎসা পদ্ধতি— ‘ইমিউনোথেরাপি’।

আরও পড়ুন: ভারতীয়কে মহাকাশে নিয়ে যেতে চায় রাশিয়া

কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হঞ্জো দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করছেন। শরীরের ‘ইমিউনো সেল’-এ একটি প্রোটিনের সন্ধান দিয়েছেন তিনি, যা কি না ক্যানসারের সঙ্গে লড়তে সক্ষম।

একই পথে হেঁটেছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এমডি অ্যান্ডারসন ক্যানসার সেন্টার’-এর অধ্যাপক অ্যালিসন। গবেষণার কাজটি অবশ্য করেছিলেন ক্যালিফর্নিয়া-বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে। অ্যালিসনের যখন ১১ বছর বয়স, ক্যানসারে মারা যান তাঁর মা। পরে পরিবারের আরও অনেকে। ক্যানসার-রহস্যের প্রতি ঝোঁক বাড়ে সেই থেকে। অ্যালিসনের স্ত্রী পদ্মিনী শর্মাও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ।

জাপানের হঞ্জোর মতো অ্যালিসনও একটি প্রোটিন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পরীক্ষা করে দেখেন, সেই প্রোটিনটি শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে টিউমারের উপর আঘাত হানতে সাহায্য করে।

২০১১ সালেই আমেরিকায় অ্যালিসনের চিকিৎসাপদ্ধতি খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক দফতরের স্বীকৃতি পায়। ইতিমধ্যে ক্যানসার রোগীদের শরীরে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে বাস্তবেই প্রোটিনটি তার কর্মকাণ্ডে বেশ সফল। নিজের সর্বশক্তি দিয়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে টিউমার-নাশে সাহায্য করে সেটি। আমেরিকার ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মেটাস্ট্যাটিক মেলানোমা, ব্লাডার ও ফুসফুসের ক্যানসারে বেশ ভাল ফল মিলেছে এই চিকিৎসায়।

টিউমার অস্ত্রোপচার ও ‘রেডিয়েশন থেরাপি’র পাশাপাশি এই ধরনের চিকিৎসায় এখন অনেকটা সুস্থ প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তবে প্রস্টেট ও অগ্নাশয়ের ক্যানসারে তেমন কাজ দেয়নি এই প্রোটিন। এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়েছে।

ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অস্ত্রোপচারের থেকেও মানুষ ওষুধের উপরে বেশি ভরসা করে। ক্যানসারের চিকিৎসায় এমন একটা আবিষ্কার, সত্যিই যুগান্তকারী।’’

তাসুকু হঞ্জো জেমস অ্যালিসন James Allison Tasuku Honjo Nobel Nobel Prize

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}